প্যারালাইসিস রোগীর খাদ্য তালিকা ও প্যারালাইসিস রোগের লক্ষণ

প্রিয় পাঠক, আপনি কি প্যারালাইসিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে এ বিষয়ে জানতে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে প্যারালাইসিস রোগীর খাদ্য তালিকা এবং প্যারালাইসিস রোগের লক্ষণ কি কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
প্যারালাইসিস রোগীর খাদ্য তালিকা
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন প্যারালাইসিস থেকে মুক্তির উপায়, প্যারালাইসিস হলে করণীয় এবং প্যারালাইসিস ভালো হয় কিনা।

ভূমিকা

প্যারালাইসিস রোগ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। এটি এমন একটি রোগ যা রোগীর চলাফেরার ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। প্যারালাইসিসের এমন অনেক রোগী আছে যারা শুধুমাত্র বিছানায় শুয়ে জীবন পার করে দেয়। এ ধরনের রোগ অনেক কষ্টদায়ক। নিজে স্বাধীনভাবে কর্মক্ষম থাকা অনেক ভালো।


নির্ভরশীল জীবন মানেই অত্যন্ত দুঃখের। প্যারালাইসিস রোগীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকতে হয়। কারণ তারা নিজেরা চলাফেরা করতে সক্ষম থাকে না। অনেকেই এই রোগ সম্পর্কে জানলেও খাবারের তালিকা সম্পর্কে জানেন না কোন খাদ্য ভালো হবে প্যারালাইসিস রোগীর জন্য তা নিয়ে।

এসব রোগীদের ভুলভাল খাদ্য খাইয়ে বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। কিছু কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলো খাওয়ালে সুস্থ থাকার পাশাপাশি শরীরের অসারতা কমাতে সাহায্য করবে।

প্যারালাইসিস থেকে মুক্তির উপায়

প্যারালাইসিস রোগ থেকে শতভাগ মুক্তি পাওয়া যায় এরকম বললে ভুল হবে। এই রোগের শতভাগ মুক্তির চিকিৎসা এখনো বের হয়নি। তবে নিম্নে উল্লিখিত উপায়গুলো কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায় বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেন। তাহলে চলুন প্যারালাইসিস থেকে মুক্তির কয়েকটি উপায় জেনে নেওয়া যাক-

দুশ্চিন্তা পরিহার করাঃ প্যারালাইসিস রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে রোগ হয় যা পরবর্তীতে প্যারালাইসিসে রূপান্তরিত হয়। সেজন্য আমরা যদি দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি তাহলে এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তিপাওয়া সম্ভব।

পর্যাপ্ত ঘুমঃ পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে হলে পরিমাণ মতো ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজন। পরিমাণ মতো না ঘুমালে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্যারালাইসিস। এসব রোগের মূল কারণ হিসেবে ঘুমকে দায়ী করা হয়। এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে অবশ্যই ঠিকমতো ঘুমাতে হবে।

শারীরিক ব্যায়ামঃ শারীরিক ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ রাখার প্রথম পদক্ষেপ। শারীরিক ব্যায়াম শরীরকে সচল রাখতে সাহায্য করে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১ ঘন্টা করে ব্যায়াম করা বা হাটা প্রয়োজন। যারা শারীরিক ব্যায়াম করেনা তাদের প্যারালাইসিস এর মত জটিল রোগেরআক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে অবশ্যই শারীরিক ব্যায়াম করা অত্যাবশ্যক। এছাড়াও যদি প্যারালাইসিস হয়ে থাকে তাহলে শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর সুস্থ করা যায়।

সঠিক খাদ্য গ্রহণঃ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হলে সঠিক খাদ্য গ্রহণ করা অতি প্রয়োজন। সঠিক খাদ্য গ্রহণের ফলে যেমন শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে তেমনি শরীরকে বিভিন্ন ধরনের কঠিন রোগ থেকেও মুক্তি দেয়।

থেরাপি দেয়াঃ প্যারালাইসিসের সমস্যা দেখা দিলে থেরাপি দিয়ে অনেক সময় ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। থেরাপি বা মেসেজের মাধ্যমে অনেক রোগীরা এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে থাকে।

চিকিৎসকের পরামর্শঃ এসব রোগ থেকে মুক্ত হতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সকল রোগের সমাধান চিকিৎসকের কাছে গেলেই পাওয়া যায়। আপনার যদি এরকম রোগের কোনো লক্ষণ বুঝতে পারেন তাহলে অবশ্যই নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

প্যারালাইসিস রোগের লক্ষণ

প্যারালাইসিসের কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে যেগুলো দেখে আপনি বুঝতে পারবেন প্যারালাইসিস হয়েছে কিনা। তাহলে চলুন কি কি লক্ষণ দেখে বোঝা যায় সে সম্পর্কে ধারণার নেয়া যাক-
  • প্যারালাইসিস হলে অনেকের মুখ বাঁকা হয়ে যায়। মুখ বাঁকা হয়ে গেলে বুঝতে হবে প্যারালাইসিস হয়েছে।
  • একহাত, এক পা এবং শরীরের এক অংশ অবশ হয়ে গেলে বুঝতে হবে এ সমস্যা হয়েছে।
  • দুই পা অবশ হয়ে গেলে বা পায়ে শক্তি না পেলে বুঝতে হবে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
  • অনেক সময় সম্পূর্ণ শরীরই অবশ হয়ে যায় তবে এটি গুরুতর পর্যায়ে যখন চলে যায় তখন এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
  • হাঁটতে গেলে ধাপ ফেলতে না পারা এবং শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করা।
  • চোখে ঝাপসা দেখা আবার অনেক সময় মুখ দিয়ে কথা বলতে না পারা।
এ সমস্যা গুলো দেখা দিলে সাথে সাথে আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। তাছাড়া সমস্যা বেড়ে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এই রোগের প্রাথমিক অবস্থায় যদি সাথে সাথে চিকিৎসা নেওয়া যায় তাহলে হয়তোবা এর রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নয়তোবা সারা জীবন পঙ্গু হয়ে বেঁচে থাকতে হবে।

প্যারালাইসিস হলে করণীয়

প্যারালাইসিস এর লক্ষণগুলো দেখা দিলে সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আপনি যদি এই লক্ষণগুলো বুঝতে না পারেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যদি দেরি হয় তাহলে এই সমস্যা বেড়ে গিয়ে গুরুতর অবস্থা ধারণ করতে পারে যা জীবনের জন্য অনেক বিপদজনক। প্যারালাইসিসের কারণে সাথে সাথে মৃত্যু কম রোগীদের হয়ে থাকে।


বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অচল অবস্থায় বেঁচে থাকতে হয়। যা নিজে কষ্ট পায় এবং অন্যদের কাছে বোঝা হয়। সেজন্য আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের প্যারালাইসিসের লক্ষণগুলো সম্পর্কে অবগত থাকা অতি জরুরী। যাতে করে লক্ষণগুলো দেখা মাত্রই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া যায়। সাথে সাথে চিকিৎসা নিয়ে সমস্যার দ্রুত নির্মূল করা সম্ভব হয়।

প্যারালাইসিস রোগীর খাদ্য তালিকা

প্রতিটি রোগের রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা রয়েছে। প্যারালাইসিস রোগের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনি। কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলো খেলে প্যারালাইসিস রোগী অনেক শারীরিকভাবে আরাম পেতে পারে। এসব রোগীদের খাবারের তালিকায় যদি প্রতিদিন বাদাম সামাজিক মাছ ডিম প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো ফল শাকসবজি ইত্যাদি রাখা হয় তাহলে তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

এই খাদ্যগুলো যে কোন মানুষের জন্য উপকারী। কিছু কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলো খেলে এগুলো রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন পটাশিয়ামযুক্ত ও আন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমিয়ে দেয়। যার ফলে প্যারালাইসিসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

প্যারালাইসিস কি ভালো হয়

প্যারালাইসিস নিয়ে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি প্রশ্ন হচ্ছে প্যারালাইসিস ভালো হয় কিনা। প্যারালাইসিস গুরুতর পর্যায়ে গেলে সম্পূর্ণভাবে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তবে প্যারালাইসিস এর লক্ষণগুলো দেখে সাথে সাথে চিকিৎসা নিলে সে ক্ষেত্রে প্যারালাইসিস ভালো করা সম্ভব।

বর্তমান সময়ে প্যারালাইসিস হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন বয়সের দরকার হচ্ছে না। যে কোন বয়সেই এ ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে নিজের সচেতনভাবে জীবন কাটাতে হবে। কারণ সচেতনতা পারে কঠিন ও জটিল রোগ থেকে শরীরকে মুক্ত রাখতে।

লেখকের মন্তব্য

এমন একটি রোগ প্যারালাইসিস যা বেঁচে থেকেও মরার মত জীবন কাটাতে হয়। এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে স্বাভাবিক এবং সুস্থ জীবন যাপনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিয়ম মেনে খাবার খাওয়া ঘুম ইত্যাদি করলে এ সকল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেজন্য নিজের সচেতন হন এবং অন্যকে এ রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তুলুন।

প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url