শিশুর কান্না থামানোর দোয়া - কাঁদলে কি হয় জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি শিশুর কানা থামানোর দোয়া খুঁজছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সাহায্য করবে। এ আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে শিশুর কান্না থামানোর দোয়া এবং কাঁদলে কি হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহ কারে পড়ুন।
শিশুর কান্না থামানোর দোয়া
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন শিশুর কান্না থামানোর সূরা, শিশুর কান্নার কারণ এবং শিশু কান্না করলে করণীয়।

ভূমিকা

শিশু কান্না করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কোন কোন কান্নাকে স্বাভাবিক কান্নার মধ্যে ফেলা যায় না। শিশুর ক্ষুধা লাগলে কান্নাকাটি করবে বা শরীরে অস্বস্তি বোধ করলে কান্নাকাটি করবে এটা স্বাভাবিক কান্নার মধ্যে পরে। এগুলো সমস্যা ছাড়াও শিশু অন্যান্য কারণে কান্নাকাটি করে যা স্বাভাবিক কান্নার মধ্যে পড়ে না।


শিশুরা অনেক ছোট যে কারণে তাদের শারীরিক সমস্যার কথা তা তারা বলতে পারেনা। তাদের প্রকাশভঙ্গির অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কান্না। তবে অভিভাবক হিসেবে আমাদের বুঝতে হবে শিশুর কান্না কারণগুলো। যে কারণে শিশু কাঁদছে সে কারণ নির্ধারণ করে অবশ্যই কান্না থামানোর চেষ্টা করতে হবে।


 যে কান্নাগুলো অস্বাভাবিক বা শারীরিক কোন সমস্যার কারণে নয় সে কান্নাগুলোর জন্য বারবার দোয়া মাছুরা পড়তে হবে। দিনের বেলায় শিশু কান্নাকাটির কারণ ক্ষুধা বা শারীরিক অসুস্থ হতে পারে। কিন্তু অস্বাভাবিক কান্নাগুলো রাতের বেলায় হয়ে থাকে। যা দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলে দেয়। শিশু কান্নাকাটি করলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

কারণ যে কারণে কান্না করুক না কেন তার অবশ্য একটি সমাধান রয়েছে। সেই সমাধানগুলো জানা অভিভাবক হিসেবে আমাদের অত্যন্ত জরুরী।

শিশুর কান্নার কারণ

একটি শিশু নানা কারণে কান্না করতে পারে। কি কি কারণে কান্না করতে পারে সে বিষয়ে অনেকের ধারণা নেই। আমরা এখানে একটি শিশু কি কি কারণে কান্না করতে পারে সে বিষয়ে আপনাদের সামনে আলোকপাত করবো। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ক্ষুধা পেলেঃ শিশু ক্ষধা পেলে কান্নাকাটি করে কারণ তার ক্ষুধা পেলে সে বলতে পারে না। কান্না করে তাকে বুঝাতে হয় তার ক্ষুধা পেয়েছে। কান্না শুনে মায়েরাও বুঝতে পারে শিশুর ক্ষুধা পেয়েছে কিনা। শিশুর কান্না প্রধান কারণ এটি।

শারীরিক অসুস্থতাঃ শারীরিক অসুস্থতার কারণে শিশু কান্না করতে পারে। কারণ শিশুর শারীরিক অসুস্থতা বড় মানুষের তুলনায় তীব্র আকার হয় যে কারণে তারা অনেক কান্নাকাটি করে থাকে।

ঘুমের কারণেঃ একটু শিশুর যখন জন্মগ্রহণ করে তখন থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত ঘুমের একটি নির্দিষ্ট সময় তৈরি হয়। শিশুরা যে সময় ঘুমায় সে সময় ঘুমাতে না পারলে কান্না করে বা ঘুম ভালো না হলে কান্না করে।

অন্যান্য সমস্যাঃ এই সমস্যাগুলো ছাড়াও কিছু সমস্যা রয়েছে যেমন বদনজর, জিন এগুলোর কারণে শিশুরা কান্নাকাটি করে। কিছু কিছু সময় শিশুদের বাইরে রাখা নিষিদ্ধ। যেমন মাগরিবের আজানের সময় এবং দুপুরবেলা। এসময় কোন শিশুকে বাইরে বের করা হলে সেগুলো শিশুর এই সমস্যাগুলো হতে পারে।

অভ্যাসের পরিবর্তনঃ শিশুর অভ্যাসগত কারণে অনেক সময় কান্না করে। যেমন খাবার খাওয়া ঘুমানো বা জায়গার পরিবর্তন। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে গেলে তার অভ্যাসের পরিবর্তন হয় যার ফলে শিশু কান্না করে। আবার অনেক সময় অনেক শিশু কম মানুষের মধ্যে বড় হচ্ছে সে ক্ষেত্রে সে বেশি মানুষের মধ্যে গিয়ে অসস্তি বা বিরক্তবোধ মনে করবে। যার ফলে কান্নার মাধ্যমে তার বিরক্ত প্রকাশ করবে।

শিশু কান্না করলে করণীয়

শিশু কান্না করলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা না করে কি উপায়ে তা বন্ধ করা যাবে সে সম্পর্কে জেনে রাখা খুবই জরুরী। তাহলে চলুন শিশু কান্না থামানোর জন্য কি করনীয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
  • প্রথমে কান্না করছে সেই কারণ নির্ধারণ করা খুবই জরুরী এবং কারণ অনুযায়ী সমাধান চেষ্টা করা।
  • শিশু ক্ষুধাজনিত কারণে কান্না করলে তাকে অবশ্যই সাথে সাথে খাবার খাওয়ানো উচিত।
  • শারীরিক অসুস্থতার কারণে কান্না করলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে মেডিসিন খাওয়াতে হবে।
  • এছাড়াও কুরআনে অনেক সূরা বা দোয়া রয়েছে যেগুলো পড়ে ফুঁ দিলে শিশু কান্না থেমে যাবে।
  • শিশু কান্না করলে অবশ্যই তাকে খাবার খাইয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে।

শিশুর কান্না থামানোর সূরা

পবিত্র কুরআনে এমন কতগুলো সূরা রয়েছে যেগুলো পাঠ করে শিশুকে ফুঁ দিলে শিশু ধীরে ধীরে কান্না থামিয়ে দেয়। অনেক বাবা মা এ সম্পর্কে অবগত আছেন। আবার কিছু কিছু বাবা-মা এ সম্পর্কে অবগত নেই বললেই চলে। বিসমিল্লাহ বলে সূরা ফাতিহা তিনবার পরে ফুঁ দিতে হবে। পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে তিন কুল পাঠ করতে হবে।


এছাড়াও সঠিকভাবে বিসমিল্লাহ বলে আয়তুল কুরসি পাঠ করে শিশুর গায়ে ফুঁ দিতে হবে। এগুলো পড়ে ফুঁ দিলে শিশুর শরীর বন্ধ হবে। যার ফলে পরবর্তীতে কিছু অতিরিক্ত কান্না ধীরে ধীরে থেমে যাবে।

শিশুর কান্না থামানোর দোয়া

শিশু ক্ষুধা বা শারীরিক অসুস্থতা বাদে অন্য কোন কারণে কান্না করলে যে সকল দুয়া পাঠ করতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো-

প্রথম দেওয়াঃ শহীদল্লাহ আন্নাহু লা ইলাহা ইল্লাহুয়া ওয়াল মালাইকাতু ওয়া উলুল ইলমি কায়িমাম বিক্কসতি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল আজিজুল হাকিম।
এই দোয়াটি সাতবার পড়ে শিশুকে ফুঁ দিলে কান্না থেমে যাবে।

দ্বিতীয় দোয়াঃ আউজুবি কালিমা তিল্লাহিত তাম্মাতি মিং শয়তানি ও হাম্মা ওয়া মিন কুল্লি আইনিল লাম্মাহ।
এই দোয়া পড়ে যদি শিশুর বাবা মা শিশু শরীরে ফুঁ দেয় তাহলে শিশুর ঘুম ভালো হবে এবং কান্না থেমে যাবে। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে এ ধরনের দোয়া পাঠ করলে ওই শিশু চতুর্থ কান্নাকাটি বন্ধ হয়ে যাবে।

কাঁদলে কি হয়

হাসাহাসি করলে শরীরের জন্য ভালো তা অনেকেই জানে। কিন্তু কান্নার কারণে যে শরীরের অনেক সুফল পাওয়া যায় তা অনেকেই জানি না। কান্না করলে মানসিক চাপ কমে যায়, শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, মন তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কান্না নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা একটি চমৎকার বিষয় উদঘাটন করেছেন।

যারা কান্না করেন তাদের মধ্যে প্রতি ১০ জন কান্নার কারণে শরীরের অনেক উপকারিতা পেয়েছে। তবে সেটি হতে হবে প্রাকৃতিক ভাবে বা আবেগ জনিত বিষয় হতে হবে। কৃত্রিমভাবে কান্নার কোন উপকার নেই বরং এতে শরীরের ক্ষতিকর দিকটাই বেশি। সেজন্য কান্না নিয়ে যাদের ভুল ধারণা রয়েছে তারা কিছুটা জানতে পারবেন যে কান্না করলে অনেক সমস্যা সমাধান হয়।

তবে আরও একটি কথা গবেষকরা বলেছে সেটা হচ্ছে অতিরিক্ত কান্নাও শরীরের পক্ষে ভালো নয়। অনেকে মন খারাপ হলে কান্না করে আবার অনেকে কান্না করে না। তবে যারা কান্না করে তাদের হার্টের সমস্যা থাকে না। কান্না করার ফলে চোখ দিয়ে পানি বের হয় এবং চোখ পরিষ্কার হয়ে যায়। প্রতিদিনের ধুলাবালি চোখে জমে থাকে সেগুলো পরিষ্কার হয়ে যায়। সেজন্য বলা হয় কান্না করলে চোখের দৃষ্টিশক্তি জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায়।

লেখকের মন্তব্য

একটি শিশু কান্না করলে তার পিতা মাতাকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। কি কারণে শিশু কান্না করছে সে কারণ জানা পিতা মাতার অন্যতম কর্তব্য। কান্নার ভুল কারণ নির্ধারণ করা থেকে বিরত থাকবেন। ভুল কারণ নির্ধারণ করলে শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url