পাকা আমের জুস কিভাবে তৈরি করা যায় - কাঁচা আমের জুস তৈরির রেসিপি
প্রিয় পাঠক, আপনি কি পাকা আমের জুস কিভাবে তৈরি করা যায় এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে জানতে সাহায্য। এ আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে পাকা আমের জুস কিভাবে তৈরি করা যায় এবং কাঁচা আমের জুস তৈরি রেসিপি ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন কাঁচা আমের জুসের উপকারিতা, পাকা আমের জুসের উপকারিতা এবং আমের জুসের পিক ইত্যাদি।
ভূমিকা
আমের জুস খেতে ইচ্ছা করলে আমার সব সময় দোকান থেকে কিনে এনে খাই। কিন্তু এটি সব সময় স্বাস্থ্যসম্মত হবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। খেতে অনেক সুস্বাদু হলেও তার মধ্যে মিশ্রিত থাকে বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম উপাদান। বাজার থেকে কিনে আনা জুস খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সবগুলো অস্বাস্থ্যকর তা নয় কিছু কিছু নামহীন বা যে কোন কোম্পানীর জুস এমন হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ভালো ও সুস্বাদু আম চেনার উপায়
ভালো এবং স্বাস্থ্যকর আমের জুস খেতে হলে তা ঘরে বসে তৈরি খেতে হবে। ঘরে বসে জুস তৈরি করলে খেতে যেমন স্বাস্থ্যকর তেমনি সাশ্রয়ী। ঘরে বসে কিভাবে আমের জুস তৈরি করা যায় তার সম্পূর্ণ বিবরণ এ আর্টিকেলের মাধ্যমে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে আশা করছি আমের জুস তৈরি করতে পারবেন।
আমের জুস তৈরি রেসিপি
আমের জুস তৈরি করতে কি কি প্রয়োজন এবং কিভাবে তৈরি করা যায় এই সম্পর্কে নিচে তুলে ধরা হলো-
আমের জুস তৈরি করতে যা যা প্রয়োজন
- আধা কেজি পরিমাণ আম
- ৫ থেকে ৬ চা চামচ চিনি
- এক চামচ লেবুর রস
- দুই থেকে তিন চিমটি বিট লবণ
- পরিমাণ মতো ঠান্ডা পানি
যেভাবে তৈরি করতে হবে
প্রথমে আমের খোসাগুলো ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর আমগুলোকে পিস পিস করে কেটে নিতে হবে। এরপর তিনি বিট লবন, পানি এবং লেবুর রস পিস পিস করা আমগুলো সাথে দিয়ে ব্লেন্ডারে ভালোমতো ব্লেন্ড করতে হবে। ব্লেড করা হয়ে গেলে সেগুলোকে ছেঁকে নিতে হবে। এভাবে তৈরি করা হয় আমের জুস। সাথে সাথে খেতে পারবেন অথবা কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখেও খেতে পারবেন।
কাঁচা আমের জুস তৈরির রেসিপি
গ্রীষ্মের সময় নানা ধরনের দেশি ফল পাওয়া যায়। কারণ এই সময়কে ফলের মৌসুম বলা হয়। এই ফলগুলো দিয়ে তৈরি করা হয় নানা ধরনের সরবতের রেসিপি। এই শরবতগুলোর মধ্যে মজাদার ও সুস্বাদু একটি শরবত হচ্ছে কাঁচা আমের শরবত। কাঁচা আমের শরবত কিভাবে তৈরি করা যায় তা আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। তাহলে চলুন কাঁচা আমের জুস তৈরি রেসিপি জেনে নেওয়া যাক-
জুস করতে যা যা প্রয়োজন
- কাঁচা আম দেড় কাপ পরিমাণ
- চার থেকে ৫ টেবিল চামচ পরিমাণ চিনি
- কাঁচা মরিচ দুইটি
- পুদিনা পাতা কুচি এক টেবিল চামচ
- দুই টেবিল চামচ লেবুর রস
- বিট লবণ হাফ চা চামচ
- জিরা গুড়া ও গোলমরিচের গুঁড়া পরিমাণ মতো
- লবণ স্বাদমতো
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে এই সকল উপকরণ একসাথে নিয়ে তার সাথে এক গ্লাস পরিমাণ পানি দিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ভালোভাবে ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে তার সাথে আরো দুই গ্লাস পানি যুক্ত করে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই শরবতটি ঠান্ডা করার জন্য ফ্রিজে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। এরপর ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা ঠান্ডা কাঁচা আমের জুস পরিবেশন করুন।
কাঁচা আমের জুসের উপকারিতা
সূর্যের প্রচণ্ড তাপমাত্রায় অস্থির মানুষজন। অস্থির এই তাপমাত্রায় শরীরকে আরাম দিতে খাওয়া যেতে পারে কাঁচা আমের জুস। কাঁচা আমের জুসের রয়েছে নানা ধরনের উপকারিতা। তাহলে চলুন এ সম্পর্কে ধার নেওয়া যাক-
- কাঁচা আমের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা সর্দি-জ্বর, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি সমস্যা মিটাতে অধিক কার্যকরী। এটি ত্বক ও চুলের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি একদিকে যেমন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে অন্যদিকে চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাঁচা আমে ভিটামিন সি থাকায় এটি নখ ভাঙা প্রতিরোধ করে।
- কাঁচা আমের জুস চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কেননা এতে রয়েছে ভিটামিন ই যা চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা।
- কাঁচা আমের জুসের প্রয়োজনীয় উপকরণ হিসেবে যুক্ত থাকে লবণ, পানি এবং চিনি যা শরীরের পানি শূন্যতা মেটাতে সহায়তা করে। এ শরবত শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে কার্যকরী এবং শারীরিক দুর্বলতা মিটাতেও ভূমিকা রাখছে।
- কাঁচা আমের জুস ক্যান্সার প্রতিরোধ করে কারণ এতে রয়েছে পলিফেলন নামে একটি খাদ্য উপাদান যা ক্যান্সার তৈরি করা কোষের বৃদ্ধি দুর্বল করে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- কাঁচা আমের জুস-এ উপস্থিত জিংক থাকার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও ক্ষুধা বাড়াতে সক্ষম এই জুস।
পাকা আমের জুস এর উপকারিতা
পাকা আমের জুস শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এটি একদিকে যেমন শরীর ঠান্ডা করে অপরদিকে শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই উপকারিতাগুলো পাওয়া যাবে শুধুমাত্র বাড়িতে তৈরি করা আমের জুস থেকে। তাহলে চলুন পাকা আমের জুসের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
কোলেস্টেরল কমায়ঃ পাকা আমের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, পেকটিন এবং ফাইবার যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টকে সুস্থ্য রাখতে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ পাকা আমের জুসের রয়েছে ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুনঃ আমসত্ত্ব সংরক্ষণ করার পদ্ধতি
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ আমের জুস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে যায়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত এই জুস খেতে পারেন। এটি একদিকে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে অপরদিকে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
শরীরে শক্তি যোগায়ঃ পাকা আমের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যা শরীরের দুর্বলতা দূর করে শারীরিক শক্তিবৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
পাকা ও কাঁচা আমের জুস পিক
লেখকের মন্তব্য
আম আমাদের সকলের পছন্দের। আম যেমন সকলের পছন্দের তেমনি আমের জুস অনেকেই পছন্দের। আমের জুস যারা পছন্দ করেন তারা বাজার থেকে না কিনে সরাসরি বাসায় বসে তৈরি করে খেতে পারেন। এভাবে জুস বানিয়ে খেলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ আমসত্ত্ব তৈরি রেসিপি
প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url