শসার খোসার উপকারিতা - নিয়মিত শসা খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আপনি কি শসার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে এ বিষয়ে জানতে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে শসার খোসার উপকারিতা ও নিয়মিত শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
শসার খোসার উপকারিতা
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন গাছে শসার খোসা ব্যবহারের নিয়ম, শসা খাওয়ার নিয়ম, শসা খাওয়ার অপকারিতা ইত্যাদি।

ভূমিকা

শসা অতি উপকারী এবং প্রয়োজনীয় একটি সবজি। যা শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আপনি কি জানেন শসার খোসাও শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শসার খোসার উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন। এর উপকারিতা না জানার কারণে আমরা শসার খোসা ফেলে দেই।


এই শসা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে শসার খোসাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ শসার খোসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ভিটামিন এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এমনকি শসার খোসা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ এতে রয়েছে বিটাক্যারোটিন যা ভিটামিন এ তৈরি করে।

খোসাসহ শসা খেলে নানাবিধ উপকারিতা পাওয়া যায়। সেজন্য শসা খেতে হলে খোসাসহ খাওয়া উচিত। এতে করে উপকারিতা বহুগুণ পাওয়া যাবে।

শসার খোসার উপকারিতা

শসার খোসায় রয়েছে অনেক উপকারিতা। আপনি যদি শসা খোসাসহ খান তাহলে এটি শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক শসার খোসা খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়-

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ শসার খোসার দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত কার্যকরী। শসার খোসায় রয়েছে বিটাক্যারোটিন যা ভিটামিন এ তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন এ চোখ ভালো রাখে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং চোখের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শসার খোসা। নিয়মিত শসার খোসা খেলে ডায়াবেটিস রোগীরা খুবই উপকার পাবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ শসার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পেট পরিষ্কার করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে কোলন পরিষ্কার রাখে। যার ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ যারা শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ভাবছেন তারা নিয়মিত খোসাসহ শসা খেতে পারেন এতে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। শসার খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে করতে অত্যন্ত কার্যকরী।

হার্ট সুস্থ রাখেঃ শসার খোসায় থাকা ফাইবার কোলেস্টরেল কমাতে সাহায্য করে যার ফলে হার্ট সুস্থ রাখে। এমনকি হার্ট এটাকের ঝুঁকিও অনেক কমে যায়।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ উচ্চ রক্তচাপ থাকলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। প্রতিদিন খোসা শসা খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। যারা উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত শসা খেতে পারেন।

ডিহাইড্রেড প্রতিরোধ করেঃ অতিরিক্ত গরম মানুষের শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে যাচ্ছে। নিয়মিত শসা খেলে ডিহাইড্রেড প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। কেননা শসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি।

ত্বকের জন্য উপকারীঃ শসা শুধুমাত্র শরীরের জন্য উপকারী তা নয় বরং এটি ত্বকের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। শসার খোসা ব্যবহার করলে ত্বকের কালো দাগ দূর হয়ে যায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। ত্বককে হাইডেড রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী শসার খোসা।

চোখের ফোলা ভাব কমায়ঃ চোখের নিচে ফোলা ভাব কমাতে ভালো ফলাফল এনে দেয় শসার খোসা। এই খোসা পেস্ট করে চোখের নিচে লাগালে চোখের ফোলা ভাব কমে যায়।

চর্বি কমাতেঃ শরীরের চর্বি বা পেটের চর্বি কমাতে শসার গুরুত্ব অপরিসীম। এক্ষেত্রে শসার খোসাও ভালো ফলাফল এনে দেয়। লিভারে চর্বি বা পেটের চর্বি কমাতে বিশেষজ্ঞরা শসা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে যদি খোসাসহ শসা খাওয়া যায় তাহলে আরো ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

গাছে শসার খোসা ব্যবহারের নিয়ম

গাছে সরাসরি সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তাহলে চলুন গাছে কিভাবে শসার খোসা ব্যবহার করা যায় জেনে নিন-

শসার খোসা টুকরো টুকরো করে কেটে গাছের গোড়ার মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে ভালো কাজ দেয়। শসার খোসার সার তৈরি করে গাছের ব্যবহার করা যায়। সে ক্ষেত্রে গাছের অনেক উপকার পাওয়া যায়। সেজন্য শসার খোসা ছড়িয়ে ভালোভাবে রোদে শুকাতে হবে তারপরে সেটি পোড়াতে হবে। পুড়িয়ে ছাই করার পর সেই ছাই গাছের গোড়ায় ব্যবহার করা যাবে।


এছাড়াও শসার খোসা পানিতে দিয়ে পচিয়ে সেই পানি গাছের গোড়ায় ব্যবহার করা যায়। সেজন্য শসার খোসা শসা থেকে ছড়িয়ে পানিতে পাঁচ থেকে ছয় দিন ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেই পানি ছেঁকে গাছের গোড়ায় দেওয়া যাবে। এভাবে এই খোশাগুলো ফেলে না দিয়ে গাছে ব্যবহার করলে গাছ ভালো হয় এমনকি বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করা যায়।

নিয়মিত শসা খাওয়ার উপকারিতা

শসা শরীরকে সুস্থ রাখতে বিভিন্ন ভাবে কাজ করে থাকে। নিয়মিত শসা খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

শরীরকে ডিটক্সিফাইঃ শরিরকে ডিটক্সিফাই করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শসা। শসায় থাকা পানি শরীরে বিষাক্ত টক্সিনকে বের করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে পাথরও সৃষ্টি হয় না।

ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করেঃ শরীর সুস্থ রাখতে হলে যে সকল ভিটামিনের প্রয়োজন সেগুলো প্রায় সবই রয়েছে শসার মধ্যে। সেজন্য নিয়মিত শসা খেলে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।

চোখের জ্যোতি বাড়ায়ঃ রূপচর্চায় অনেকেই শসা ব্যবহার করে থাকেন। সেজন্য শসা পিস পিস করে কেটে চোখের উপরে লাগিয়ে রাখেন। এতে করে চোখে উপরে কালো দাগ যেমন দূর হয়ে যায় তেমনি চোখের ময়লাও পরিষ্কার হয়ে যায়। যার ফলে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পায়।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ শসা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত শসা ব্যবহারের ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের কালো দাগ দূর হয়ে যায়।

চুল ও নখ সতেজ রাখেঃ শসার মধ্যে রয়েছে খনিজ সিলিকা যা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও শসায় উপস্থিত সালফার ও সিলিকা থাকার কারণে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয়।

মাথা ব্যথা দূর করেঃ শশা মাথা ব্যাথা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। রাতে ঘুমানোর আগে শসা খেলে ভালো ঘুম হয় এবং মাথাব্যথা দূর হয়ে যায়।

শসা খাওয়ার নিয়ম

প্রত্যেকটি খাবারই পরিমিত বা নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত। শসার ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনি। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা শসা খাওয়া যাবে। এতে করে ভালো উপকারিতা পাওয়া যাবে। কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত শসা খেলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

শসা খাওয়ার অপকারিতা

শসা খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। শসার উপকারিতা পাশাপাশি এর অপকারিতাগুলো জানা অত্যাবশ্য। তাহলে চলুন শসার অপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক-
  • পরিমাণমতো শসা খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণ শসা খেলে পেটের সমস্যা আবার বৃদ্ধি পায়।
  • শসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি সেজন্য প্রয়োজনের বেশি শসা খেলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।
  • অতিরিক্ত শসা খেলে শরীরে ক্ষতিকারক টক্সিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

শসা এবং শসার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে উপরের আলোচনার মাধ্যমে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। শসার উপকারিতা পেতে হলে সঠিক নিয়মে খান তাহলে শরীরের জন্য ভালো ফলাফল পাবেন। প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url