ত্বক ভালো রাখতে কোন ভিটামিন দরকার - ত্বক ফর্সা করার সাবান

প্রিয় পাঠক, ত্বক ভালো রাখতে কোন ভিটামিন দরকার এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আসুন এই আর্টিকেলটি আপনাকে জানতে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে ত্বক ভালো রাখতে কোন ভিটামিন দরকার এবং ত্বক ফর্সা করার সাবান নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ত্বক ভালো রাখতে কোন ভিটামিন দরকার
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন ত্বক ফর্সা করার ঔষধ, ত্বক টান রাখে কোন খাবার এবং কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয়।

ভূমিকা

সুন্দর ও ফর্সা ত্বক কেনা চায়। আমরা সকলেই সুন্দরের পূজারী। এই সৌন্দর্য ধরে রাখতে বা বৃদ্ধি করতে আমরা বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করি। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার বা ত্বকের সুস্থতা বজার রাখার বিভিন্ন উপায় আছে যেমন ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়া, ফর্সা হওয়ার সাবান ব্যবহার করা, ফেসওয়াশ ব্যবহার করা, ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করা ইত্যাদি।


এছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখা যায় যেমন প্রাকৃতিক বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করে এবং খাবার খাওয়ার মাধ্যমে। আমাদের মধ্যে যারা সৌন্দর্য নিয়ে বেশি সচেতন তারা বিভিন্ন উপায়ে ভালো রাখতে চেষ্টা করেন। তাদের সুবিধার জন্যই আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি।

তাহলে আপনি যদি ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন, তাহলে বুঝতে পারবেন কিভাবে ত্বক ফর্সা করা যায় এবং ত্বক ভালো রাখা যায়।

ত্বক ভালো রাখতে কোন ভিটামিন দরকার

আমরা উপরেই বলেছি ত্বক ভালো রাখতে পারে এমন অনেকগুলো ভিটামিন রয়েছে। কিন্তু কোন কোন ভিটামিন খেলে ত্বকের জন্য উপকারী সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আজ আমরা আপনাদের সামনে ত্বক ভালো রাখতে কোন ভিটামিন দরকার এ সম্পর্কে আলোকপাত করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ভিটামিন এঃ সুস্থ ও লাবণ্যময় ত্বক পেতে হলে ভিটামিন এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ-এর অভাব হলে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয় সেই সাথে ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। তাই আপনি যদি ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে চান তাহলে অবশ্যই ভিটামিন এ যুক্ত খাবার খেতে হবে তাহলে ত্বকের সুন্দর্য বজায় থাকবে।

ভিটামিন এ যুক্ত খাবারগুলো হল ব্রকলি, পালং শাক, ডিম, দুধ, ফলমূল, মিষ্টি আলু ইত্যাদি। এই খাবারগুলো ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও ভিটামিন এ ত্বকের কালকে দাগ কালো ছোপ ব্রণের দাগ ইত্যাদি দূর করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বককে সুন্দর হতে সহায়তা করে।

ভিটামিন বিঃ ভিটামিন বি ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। এটি ত্বককে রোদে পুড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। সেজন্য সব ধরনের সানস্ক্রিনে ভিটামিন বি রয়েছে। এছাড়াও ত্বকের অ্যালার্জি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। ভিটামিন বি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সেই জন্য ভিটামিন বি যুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে ত্বক সুরক্ষিত থাকে।

ভিটামিন বি যুক্ত খাবার গুলি হল ডিমের সাদা অংশ, ঢেঁকি ছাটা চাল, দুধ, গাজর, টমেটো, গ্রিন টি ইত্যাদি।

ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি ত্বকের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। কারণ ভিটামিন সি-তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ভিটামিন সি কোলাজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি-তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি যুক্ত খাদ্য হলো সব ধরনের টক জাতীয় ফল এবং সবুজ শাক-সবজি।

ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি এর অভাবেও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ত্বকের শুষ্কতা। ভিটামিন ডি এর অভাবে ত্বক ফ্যাকাসে এবং বিবর্ণ রং ধারণ করে। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারগুলো হল পনির, ডিম, স্যামন মাছ, টোনা মাছ, মাশরুম, সয়া, দুধ, এভোকাডো, পিনাট বাটার ইত্যাদি চর্বিযুক্ত খাবার থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।


এছাড়াও সকালের সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। সেজন্য চিকিৎসকরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কিছু সময় সূর্যের তাপে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

ভিটামিন ইঃ ভিটামিন ই ত্বকের এন্টি এজিং হিসেবে কাজ করে থাকে। এই ভিটামিন ই আবার সূর্যের অতিবেগুনি রাশি হতে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। ভিটামিন ই এর অভাবে চুল পড়ে এমনকি ত্বকের বলিরেখা দেখা দেয়। ত্বকের আদ্রতা হারিয়ে ত্বককে নিষ্প্রাণ করে তোলে। সেজন্য ত্বকের সুস্থতায় ভিটামিন ই অত্যন্ত প্রয়োজন।

কারণ ভিটামিন ই ত্বককে সতেজ ও সজীব রাখতে সহযোগিতা করে। ভিটামিন ই যুক্ত খাবারগুলি হল বাদাম, জলপাই ,উদ্ভিজ্জ তেল, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি। এগুলো খেলে ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।

ভিটামিন কেঃ ভিটামিন কে ত্বকের জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এমনকি ত্বকের গাড়ো ধরনের কালচার দাগ তুলতেও অত্যন্ত কার্যকরী। অনেকের চোখের নিচে কালো ডার্ক সার্কেল দেখা যায়। এ সমস্যা দূর করতে ভিটামিন কে অত্যন্ত প্রয়োজন।

ত্বকের ক্ষতস্থানের দাগ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন কে যুক্ত খাবারগুলো হল ব্রকলি, বাঁধাকপি, পালং শাক ইত্যাদি। এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে যা ত্বকের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকার বয়ে আনে।

ত্বক টানটান রাখে কোন খাবার

ত্বক টানটান রাখে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যেমন বিভিন্ন ধরনের ফলমূল এবং শাকসবজি। এই খাবারগুলো খেলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দিবে না এবং তারুণ্য ধরে রাখবে দীর্ঘদিন। ভিটামিন সি যুক্ত খাবারের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন। ভিটামিন সি এর অভাব হলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়।

ভিটামিন সি এর অভাবে ত্বকের উপর যে কোন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। সেজন্য আপনি যদি সুস্থ এবং ভালো এমনকি ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে চান তাহলে বেশি বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খান। এছাড়াও ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন কে যুক্ত খাবারগুলো ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী।

কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয়

সুন্দর চেহারা পেতে হলে যে দুটি ভিটামিন সবচেয়ে বেশি কার্যকরী সেটি হচ্ছে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে এই দুইটি ভিটামিন অপরিহার্য। এই দুই ভিটামিন ত্বকের বলিরেখার দাগ এমনকি ব্রনের হাত থেকেও ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। আপনি যদি সুন্দর চেহারার অধিকারী হতে চান তাহলে অবশ্যই এই দুই ধরনের ভিটামিনযুক্ত খাবার বেশি বেশি গ্রহণ করুন। তাহলে ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি চেহারায় লাবণ্য ফুটে উঠবে।

ত্বক ফর্সা হওয়ার ঔষধ

মানুষ সাধারণত ত্বকের ফর্সা রং পছন্দ করে। ত্বকের রং কেমন হবে তা সম্পূর্ণভাবে আমাদের উপর নির্ভর করে না। ত্বক আপনার যেমনই হোক না কেন তা পরিবর্তন করে মানুষ ত্বক ফর্সা করতে অত্যন্ত আগ্রহী। কেউবা ক্রিম মেখে ফর্সা হচ্ছে আবার কেউ ভিটামিনযুক্ত খাবার খেয়ে ফর্সা হচ্ছে আবার অনেকে ফর্সা হওয়ার ওষুধ খাচ্ছে।

কয়েক ধরনের ওষুধ রয়েছে যেগুলো খেলে ত্বক ফর্সা হয়। তাহলে চলুন ত্বক ফর্সা হওয়ার ওষুধ জেনে নেই-
  1. ভিটামিন ই ক্যাপসুল
  2. সাফি ক্যাপসুল
  3. L-Gluta 5 Barry Plus
  4. Clogen 10 mg Tablet
  5. Frozen Collazen(2in1)

ত্বক ফর্সা করার সাবান

আপনার ত্বক যতই সুন্দর হোক না কেন সেই সৌন্দর্য ধরে রাখতে অবশ্যই ত্বকের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। ত্বকের এই বাড়তি যত্ন বিভিন্ন ভাবে নেওয়া যায়। কেউ ঘরোয়া উপায়ে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে নেই আবার কেউ সাবান বা ক্রিম ব্যবহার করে নেয়। আমরা এখানে ত্বক ফর্সা করে এমন কয়েকটি সাবান আপনাদের সামনে তুলে ধরব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
  1. Dove
  2. Zafran Soap
  3. Fiorae Whitening Soap
  4. Whitening Goat Milk Soap
  5. Facial Spa Soap
তবে আপনি যে সাবানই ব্যবহার করুন না কেন সব ধরনের সাবানেই কমবেশি কেমিক্যাল থাকে। সেজন্য প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ফর্সা হওয়াই সবচেয়ে বেশি উত্তম।

লেখকের মন্তব্য

বেশিরভাগ মানুষ ফর্সা ত্বক পছন্দ করে। সেজন্য ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম সাবান বা অন্যান্য জিনিস ব্যবহার করে থাকে। ত্বকের ক্ষেত্রে সতর্কতা এবং সচেতনতা অবলম্বন করা বিশেষ জরুরি। সবার ত্বকে সবকিছু মানিয়ে নিতে পারে না। ফর্সা হওয়ার জন্য এমন কিছু ব্যবহার করবেন না যা ত্বকের ভালো হওয়ার পরিবর্তে ক্ষতি বেশি হয়।

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url