এসি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম - ওয়ালটন এসির দাম

প্রিয় পাঠক, আপনি কি এসি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে এসি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম এবং ওয়ালটন এসির দাম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এসি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন এসি ব্যবহারের সুবিধা, এসি ব্যবহারের অসুবিধা, সিঙ্গার এসির দাম এবং এসির তাপমাত্রা কত রাখা উচিত।

ভূমিকা

দিন দিন গরম অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য প্রায় মানুষই এসি ব্যবহার করে থাকে। ঘরকে ঠান্ডা করে শরীরকে আরাম দিতে এসির কোন বিকল্প নেই। বর্তমান সময়ে প্রায় বাড়িতে এসি দেখা যায়। এসি ব্যবহার করলেও অনেকেই এসি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানেনা। ঘর ঠান্ডা করতে বা বেশি ভালো রাখতে জানতে হবে এসি ব্যবহারে সঠিক নিয়ম।

এসি’র ব্যবহার না জানা থাকলে ঘর ঠান্ডা হতে অনেক সময় লাগে এবং বিদ্যুৎ বিল অনেক বেড়ে যায়। আমাদের এই আর্টিকেলটি মূলতঃ এসি চালানো বা ব্যবহার করতে হয় কিভাবে এই সম্পর্কে।

এসি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

এসি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় বা কিভাবে চালাতে হয় এ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। এতে চালানো বা ব্যবহারের নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, সে সম্পর্কে ধারণা থাকা আমাদের প্রত্যেকেরই প্রয়োজন। তাহলে চলুন এসি ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবেঃ অনেকে এসি তাপমাত্রা কত রাখবে এ নিয়ে ভুল করে থাকে। তাড়াতাড়ি রুম ঠান্ডা করার জন্য সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিয়ে থাকে। কিন্তু এভাবে চালানো এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভুল পদ্ধতি। এসির তাপমাত্রা সবসময় ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ রাখতে হবে। এতে করে রুম তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হবে এবং এসির উপর চাপ পড়বে না ও বিদ্যুৎ খরচ কমে যাবে।

আপনি যদি এই তাপমাত্রার সঠিক ব্যবহার না করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ব্যবহার করুন। এটি আপনার এসির জন্য অনেক ভালো হবে।

নিয়মিত সার্ভিসিং করতে হবেঃ এসি ভালো রাখতে হলে এর রক্ষণাবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য নিয়মিত এসি সার্ভিসিং করা প্রয়োজন। অনেকে খরচের কথা চিন্তা করে এসি নিয়মিত সার্ভিসিং করেন না। এসি সার্ভিসিং না করালে এসির ক্ষতি হয় এবং ঘর ঠান্ডা হতে অনেক সময় লাগে সে ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল অনেক বেড়ে যায়।

নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার করতে হবেঃ বছরে ১ থেকে ২ বার এসির সার্ভিসিং করালেই হবে তবে এর মধ্যে যে ফিল্টার থাকে সেটি প্রত্যেক মাসে একবার করে পরিষ্কার করতে হবে। এসিতে ময়লা জমলে সেটা ফিল্টারে আটকে যায় যার ফলে মেশিন ঠিক মতো কাজ করে না এবং রুম ঠান্ডা হতে অনেক সময় লাগে। যে কারণে বিদ্যুৎ বিল প্রচুর পরিমাণে আসে।

দরজা জানালা বন্ধ রাখতে হবেঃ এসি চালু করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে দরজা জানালা বন্ধ করতে হবে। তাহলে রুম তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হবে এবং বিল কম আসবে। দরজা বা জানালা খোলা রেখে এসি চালু করলে রুমের ঠান্ডা বের হয়ে যায় এবং এসির উপর চাপ পড়ে যার ফলে এসি খারাপ হয়ে যেতে পারে।

এসি প্রতিস্থাপনঃ আপনার ঘরে এসিটি কোথায় স্থাপন করা হচ্ছে এ বিষয়ে খেয়াল রাখা অতি জরুরী। এমন জায়গায় স্থাপন করতে হবে যেখানে সূর্যের মুখোমুখি না হয়। এভাবে স্থাপন করার ফলে অতিরিক্ত আরো ৫% বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

কম্প্রেসার চেক করাঃ এসি দ্বারা দুর্ঘটনা এড়াতে কম্প্রেসার মাঝে মাঝে চেক করতে হবে। কম্প্রেসার এর প্রয়োজনীয় পরিমাণ রেফ্রিজারেট রয়েছে কিনা তা অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে।

এসির ভিতরের পাইপ ঠিক করতে হবেঃ এসির ভেতরের পাইপ ঠিক আছে কিনা মাঝে মাঝে সেটা চেক করতে হবে। কারণ ভেতরের পাইফ ব্লক হয়ে থাকলে হাই প্রেশার তৈরি হয়ে কম্প্রেসার বাস্ট হয়ে যেতে পারে।

এসি ব্যবহারের সুবিধা

দিন দিন মাত্রাতিরিক্ত গরম পড়ছে। এ গরম থেকে রক্ষা পেতে বা শরীরকে আরাম দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় এসি। এসি ব্যবহারের কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। তাহলে চলুন এসি ব্যবহারের সুবিধাগুলো জেনে নেওয়া যাক-
  • এসি ব্যবহারের ফলে খুব সহজেই ঘরকে ঠান্ডা করা যায়। কারণ বাইরের তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে ফ্যানের বাতাসও গরম হয়ে যায়। কিন্তু কিন্তু ব্যবহার করলে সেই গরম দূর হয়ে রুম অল্প সময়ের মধ্যে ঠান্ডা হয়ে যায়।
  • অতিরিক্ত গরমের হাত থেকে খুব সহজেই রক্ষা পাওয়া যায়। কেননা তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে যখন বাইরের সবকিছু গরম থাকে ঠিক সে সময় এসি থাকলে ঘর ঠান্ডা থাকে বলে শরীরের অনেক আরাম পাওয়া যায়।
  • সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে এসি। এসি রুমে বসে কাজ করলে শরীর তেমনভাবে ক্লান্ত হয় না।
  • ঘুম ভালো হতে এসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা অতিরিক্ত গরমের কারণে চোখে ঘুম দূর হয়ে যায়। কিন্তু এসি রুমে ঘুমের কোন সমস্যা হয় না। আপনি আপনি ঘুম চলে আসে।

এসি ব্যবহারের অসুবিধা

এসি ব্যবহারের যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। তাহলে চলুন এসির ব্যবহারের কয়েকটি অসুবিধা হলো জেনে নেওয়া যাক-
  • এসি ব্যবহারের ফলে মানুষের শরীরে স্বস্তি এনে দেয় ঠিকই কিন্তু এটি শরীরের আবার বিভিন্ন ক্ষতি করে।
  • এসি ব্যবহারের ফলে অনেকের সর্দি জ্বর এমনকি নিউমোনিয়ার দিকেও চলে যেতে পারে।
  • এসি ব্যবহারের প্রধান সমস্যা হলো এটি মানুষের শরীরের পানে শুষে নেয়। ক্রমাগত এই পানি শুষে নিতে থাকলে মানুষের শরীরের রক্ত সঞ্চালনেব্যাঘাত ঘটতে পারে।
  • এসি ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন না করলে এসি বিস্ফোরণ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা তৈরি হতে পারে। কারণ এসি বিস্ফোরণের ঘটনা প্রায়শই শোনা যায়।
  • যারা সচরাচর এসি রুমে থাকে তাদের স্বাভাবিক তাপমাত্রা শরীরে খাপ খায় না। বাইরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা তাদের শরীরে সহ্য করে নিতে পারে না।
  • বেশিরভাগ সময়ে এসিতে থাকা মানুষের অবসাদ ও মাথা ব্যথার সমস্যা বেড়ে যায়। এসিতে থাকার ফলে দৃষ্টিশক্তি বা চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, স্নায়ুর সমস্যা এবং আর্থ্রাইটিসের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারেন।

সিঙ্গার এসির দাম

বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি কোম্পানির এসি পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে সিঙ্গার। আমরা এখানে সিঙ্গার এসির দাম আপনাদের সামনে তুলে ধরব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ইনভার্টার, স্ট্যান্ডার্ড এবং সেমি কমার্শিয়াল সিরিজ সিঙ্গারে এই তিন ধরনের এসি রয়েছে। সিঙ্গারের এক টন গ্রীন ইনভার্টার এসির দাম ৬০ হাজার টাকা, দেড় টন এসির দাম ৭৭,৯১৩ টাকা এবং ২ টন এসির দাম ৯৭,৪০০ টাকা। সিঙ্গার নন ইনভার্টার এসি পাওয়া যাবে ৬২,৯৯১ টাকায়। সিঙ্গার নন টার্বোকুল এসির দুই টনের দাম পড়বে ইনভার্টার ৭২,১৯১ টাকা এবং দেড় টনের দাম ৫৮,৮৯১ টাকা।

ওয়ালটন এসির দাম

ওয়ালটন পণ্য হচ্ছে দেশি পণ্য। ওয়ালটন গ্রুপের বিভিন্ন ধরনের পণ্য পাওয়া যায় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এসি। আমরা এখানে ওয়ালটন এসির দাম আপনাদের সামনে তুলে ধরব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক। সর্বনিম্ন ৩০,০০০টাকা থেকে শুরু হয় ওয়ালটন এসির দাম। ওয়ালটন এক টন এসির দাম ৫৫ হাজার ৯০০ টাকা। তবে এই দাম কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন হতে পারে বা কমবেশি হতে পারে।

এসির তাপমাত্রা কত রাখা উচিত

অনেকেই প্রশ্ন করেন এসির তাপমাত্রা কত রাখা উচিত। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য পারফেক্ট তাপমাত্রা কত। এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে এসির তাপমাত্রা কখনোই রাখা উচিত নয়। এতে করে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে শরীর অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এসির আদর্শ তাপমাত্রা হচ্ছে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


এ তাপমাত্রা বয়স্কদের জন্য পারফেক্ট। কারণ বয়স্ক ব্যক্তিরা কম বয়সীদের তুলনায় বেশি ঠান্ডা অনুভব করে। সেজন্য ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে তাপমাত্রা নামানো উচিত নয়। এতে করে তাদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

এসি ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই রয়েছে। তবে এসি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই এসি ব্যবহারে সঠিক নিয়ম জানতে হবে। সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে সুবিধা বেশি পাওয়া যাবে। প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব এবং পরিবার পরিজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url