সেরেলাক কত মাস থেকে খাওয়ানো যায় - সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়ানো যায়

প্রিয় পাঠক, আপনি কি সেরেলাক কত মাস থেকে খাওয়ানো যায় এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে সেরেলাক কত মাস থেকে খাওয়ানো যায় এবং সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়ানো যায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সেরেলাক কত মাস থেকে খাওয়ানো যায়
এ আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন সেরেলাক খাওয়ার উপকারিতা, সেরেলাক খাওয়ার নিয়ম, কোনটা ভালো, সেরেলাকের দাম ২০২৪ এবং সেরেলাকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি।

ভূমিকা

পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যকর খাবার হচ্ছে সেরেলাক। এটি মূলত বাচ্চাদের খাবার। এই খাবারটি শিশুদের জন্য সহজে হজমযোগ্য। এটি বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। এটি শিশুদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সক্ষম। কেননা বাচ্চাদের বাড়ন্ত বয়সে অত্যাধিক পুষ্টির প্রয়োজন পড়ে। যা সেরেলাক খাওয়ার মাধ্যমে পূরণ হয়ে থাকে।


শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি এবং ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রে সেরেলাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেরেলাকে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ, কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার যা শিশুর পুষ্টির চাহিদাকে পরিপূর্ণ করে। সেরেলাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এটি শরীরের আয়রনের অভাবজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে যেমন পুষ্টি উপাদান তেমনি এটি খেতে খুবই সুস্বাদু। যেসব বাচ্চারা স্বাভাবিক খাবার খেতে অনিহা প্রকাশ করে তারা সেরেলাক খুব সহজেই খেয়ে থাকে এবং পছন্দ করে।

সেরেলাক খাওয়ার উপকারিতা

সেরেলাক বাচ্চাদের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। শিশুর বাড়তি বয়সে নানা ধরনের পুষ্টির প্রয়োজন হয় যা সেরেলাক মাধ্যমে পূরণ হয়ে থাকে। নিয়মিত সেরেলাক খাওয়া শিশুদের জন্য খুবই উপকারী। আমরা এখানে সেরেলাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
  • সেরেলাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা বাচ্চাদের শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। আয়রন থাকার কারণে রক্তে লোহিত কণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি বাচ্চাদের রক্তস্বল্পতা সমস্যা প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • সেরেলাক বাচ্চাদের হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হাড়ের জন্য খুবই উপকারী। হাড়কে শক্তিশালী করতে ক্যালসিয়ামের গুরুত্ব অত্যাধিক।
  • সেরেলাক খাদ্য শষ্য থেকে তৈরি করা একটি খাবার যা বাচ্চারা সহজে হজম করতে পারে। সহজে হজম হওয়ার কারণে এটি বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। সেরেলাক খাওয়ার ফলে শিশুদের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে। যেসব বাচ্চারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেতাদের জন্য সেরেলাক অত্যন্ত উপকারী।
  • খুবই সুবিধাজনক খাবার হচ্ছে সেরেলাক। এটি খুব সহজেই তৈরি করা যায়। এটি তৈরি করা বা রান্না করার কোন অতিরিক্ত ঝামেলা নেই বলে প্রায় সব বাবা-মা এটি বাচ্চাদের খাইয়ে থাকে।
  • সেরেলাকে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • বাচ্চাদের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে সেরেলাক। কারণ এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহু গুণে বৃদ্ধি পায়।
  • শিশুদের দাঁতের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী একটি। কেননা খাবার এই খাবার রয়েছে পরিমাণে ক্যালসিয়াম। দাঁতের মাড়ি মজবুত করাসহ দাঁতের বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • সেরেলাক বাচ্চাদের মস্তিষ্ক বিকাশের সহায়তা করে এবং সেই সাথে স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। কারণ সেরেলাকে রয়েছে ভিটামিন সি। এটি বাচ্চাদের ত্বকের জন্য খুবই ভালো।
  • নিয়মিত খাওয়া বাচ্চাদের চোখের জন্য অত্যন্ত ভাল। সেরেলাকে ভিটামিন এ থাকায় চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।
  • পেট ভালো রাখতে এটি অধিকারী। কারণ সেরেলাক বিভিন্ন ধরনের খাদ্য শস্য দিয়ে তৈরি করা হয়। এজন্য এগুলো খুব সহজে হজম হয়ে যায় ফলে পেটের সুস্থতা বজায় থাকে।

সেরেলাক খাওয়ার নিয়ম

সেরেলাক বাচ্চাদের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার তা আমরা সবাই জানি। তবে সঠিক নিয়মে খাওয়ালে এর পরিপূর্ণ পুষ্টিগুণ পাওয়া সম্ভব। আমরা এখানে কেরালা খাবার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সামনে তুলে ধরব তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

সেরেলাক খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই মায়ের হাত এবং যে পাত্রে খাওয়ানো হবে সেটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সেরেলাক তৈরি করে খাওয়ানোর জন্য প্রথমে পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই ফোটানো পানি ঠান্ডা করে নিতে হবে। খুব বেশি ঠান্ডা না আবার খুব বেশি গরমও না কুসুম কুসুম গরম রাখলেই হবে।

এই পানিতে পরিমাণমতো সেরেলাক দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে তৈরি হয়ে গেল আপনার সেরেলাক। এরপর আপনি আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। সেরেলাক যেহেতু একটি সুস্বাদ্য খাবার সেজন্য এটি নিয়ম করে দিনে একবার খাওয়ানো উচিত। তার বেশি খাওয়ালে অন্যান্য খাবারের প্রতি অনিহা তৈরি হবে।

প্যাকেটে কেনা সেরেলা খাওয়ানো থেকে বাড়িতে বানানো সেরেলাক খাওয়ানো বেশি পুষ্টিকর এতে করে বাচ্চার সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে এবং পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে।

কত মাস বয়স থেকে সেরেলাক খাওয়ানো যায়

একটি শিশুর জন্ম থেকে ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধই যথেষ্ট। এ সময় তাকে বাড়তি খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ৬ মাস পর থেকে শিশুকে একটু করে বাড়তি খাবার দেবার প্রয়োজন পড়ে। তাই ৬ মাস বয়স থেকে শিশুকে সেরেলাক বা অন্যান্য বাড়তি খাবার খাওয়ানো যাবে। সেজন্য সেরেলাক খাওয়াতে হলে ৬ মাস বয়সের পর থেকে খাওয়ানো উচিত।

৬ মাস বয়সের আগ পর্যন্ত শিশু তার মায়ের বুক থেকে যে দুধ পায় তা থেকেই তা পরিপূর্ণ পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। কিন্তু ছয় মাসের পর থেকে শুধুমাত্র বুকের দুধে শিশুর সম্পূর্ণ পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় না তাই তাকে বাড়তি খাবার দেয়ার প্রয়োজন হয়। বাড়তি খাবারগুলো হতে হবে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। সেরেলাক বানানো খুব সহজ সে জন্য কর্মব্যস্ত মায়েরা এই খাবারটি বেছে নিয়ে থাকেন।

কেননা তাদের বাড়তি অন্যান্য খাবার তৈরি করার সময় থাকে না। তবে শিশুদের সম্পূর্ণভাবে সেরেলাকের উপর নির্ভরশীল হতে দেওয়া উচিত নয়। সেরেলাক ছাড়া অন্যান্য বাড়তি খাবারগুলো যেমন খিচুড়ি, সুজি ইত্যাদি খাবার খাওয়ানো অভ্যাস করা জরুরী। সেরেলাক কয়েক ধাপে খাওয়ানো যায়।

সেরেলাক খাওয়ানোর সঠিক সময় হচ্ছে ৬ থেকে ২৪ মাস। তবে কিছু সেরেলাক রয়েছে যেগুলো আরো বেশি বয়স পর্যন্ত খাওয়ানো যায়।

সেরেলাকের দাম ২০২৪

বাজারে বিভিন্ন গ্রুপের সেরেলাক পাওয়া যায়। আমরা এখানে নেসলে সেরেলাকের দাম উল্লেখ করব। নেসলে সেরেলাকের ৪০০ গ্রামের দাম ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে সেরেলাক আলাদা আলাদা উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। দুই থেকে তিনটা উপকরণ মিলে এটি একটি সেরেলাক তৈরি করা হয়। যেমন গম ও ফলের রাইচ ও চিকেন, রাইস ও মিল্ক ইত্যাদি মিশ্রণে প্রতিটি তৈরি হয়।

উপকরণ ভেদে সেরেলাকের দাম বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তবে কোন ছেলেরা আপনার শিশুর জন্য ভালো সেটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ানো শুরু করবেন। সেরেলাকে রয়েছে ১২টা ভিটামিন এবং ৭টি খনিজ উপাদান যা বাচ্চার স্বাভাবিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়ানো যায়

বাচ্চার বয়স ৬ মাস পার হওয়ার সাথে সাথে মায়েদের মধ্যে বাড়তি খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে যায়। যারা সেরেলাক খাওয়ানোর কথা চিন্তা করেন তারা দিনে কতবার খাওয়াবেন সে বিষয়ে জানেন না। সেরেলাক খাওয়ানোর বিষয়ে চিকিৎসকরা ৬ মাস পর শিশুকে এক থেকে দুই চামচ সেরেলাক খাওয়ানো শুরু করতে বলেন। খাওয়ার সময় অবশ্যই সকালে হতে হবে।

আর বাকি দুইবার অন্যান্য কঠিন খাবার দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সেরেলাক দুই থেকে তিনবার খাওয়ানো যাবে তবে একবার খাওয়ানোই সবচেয়ে ভালো। তাহলে অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার খাওয়ারও অভ্যাস তৈরি হবে। আপনি যদি ৩বার আপনার বাচ্চাকে সেরেলাক খাওয়ান তাহলে অন্যান্য বাড়তি খাবারের অনীহা তৈরি হবে।

কারণ সেরেলাক একটি স্বাদযুক্ত খাবার যা অন্যান্য খাবারের তুলনায় অনেক বেশি সুস্বাদু।

সেরেলাক কোনটা ভালো

বাচ্চাকে সেরেলাক খাওয়ানোর পূর্বে সেরেলাক কোনটা ভালো এই নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেরেলাক পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুপরিচিত ব্র্যান্ডের নাম হচ্ছে নেসলে। আপনি যদি প্যাকেট সেরেলাক কিনে খাওয়াতে চান তাহলে নেসলে সেরেলাক খাওয়াতে পারেন। এই সেরেলাকে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ যা শিশুর পুষ্টির চাহিদা সম্পূর্ণভাবে পূরণ হবে।

বাজারের অন্যান্য ব্র্যান্ডের সেরেলাক পাওয়া যায় আপনি চাইলে সেগুলো খাওয়াতে পারেন। তবে কোন সেরেলাক খাওয়াবেন সেটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত। আপনি যদি গুণগত মান চিন্তা করে সেরেলাক খাওয়াতে চান সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে হোমমেড সেরেলাক।

বাসায় তৈরি করা সেরেলাকের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না এটি বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। আপনার যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে এবং বাড়ীতে সেরেলাক তৈরি করতে পারেন তাহলে অবশ্যই সেটি খাওয়ানোই উচিত।

ঘরে বসে তৈরি করুন বাচ্চার জন্য পুষ্টিকর সেরেলাক

শিশুর সাথে সাথে তার পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য বাড়তি খাবার দেয়া বিশেষভাবে জরুরি হয়ে পড়ে। বাচ্চার মায়েরা ৬ মাস বয়সের পর থেকে বিভিন্ন ধরনের বাড়তি খাবার দেয়ার চেষ্টা করে। বাড়তি খাবার হিসেবে শিশুর খাবারের তালিকায় দিনে একবার সেরেলাক যুক্ত করতে পারেন। তাহলে শিশুর সাধের ভিন্নতা গ্রহণ করতে পারবে।

সেরেলাকের সম্পূর্ণ পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে চাইলে ঘরেই তৈরি করুন বাচ্চার জন্য পুষ্টিকর সেরেলাক। কিভাবে তৈরি করা যায় এই পুষ্টিকর সেরেলাক সে বিষয়ে আমরা আপনাদের সামনে আলোকপাত করব। তাহলে সম্পূর্ণ রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক-

প্রয়োজনীয় উপকরণ
  • লাল চাল বা আতপ চাল
  • মাসকলাইয়ের ডাল
  • সবুজ ছোলার ডাল
  • মুগ ডাল
  • খোলায় ভেজে নেওয়া ছোলা
  • মসুর ডাল
  • গম
  • সাবুদানা
  • কাঠবাদাম
  • কাজুবাদাম
  • বুটের ডাল
  • ভুট্টা
  • এলাচ ইত্যাদি
প্রস্তুত প্রণালীঃ আতপ চাল বা লাল চাল দেড় কাপ, মাসকলাই ডাল এক কাপ পরিমাণ, মুগ ডাল এক কাপ পরিমাণ, সবুজ বুটের ডাল এক কাপ পরিমাণ, ভেজে নেওয়া ছোলা এক কাপ পরিমাণ, মুগ ডাল এক কাপ পরিমাণ, মসুর ডাল এক কাপ পরিমাণ, গম এক কাপ পরিমাণ, সাবুদানা আধা কাপ পরিমাণ, বুটের ডাল আধা কাপ পরিমাণ, ভুট্টা দানা আধা কাপ পরিমাণ, কাঠবাদাম আধা কাপ, কাজুবাদাম আধা কাপ পরিমাণ এবং এলাচ দানা আট থেকে দশটি।

শুধুমাত্র কাঠবাদাম, কাজুবাদাম এবং এলাচ বাদ দিয়ে সবগুলো উপকরণ একসাথে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এগুলোকে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ধুয়ে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। তারপর কাজুবাদাম, কাঠবাদাম এবং এলাচসহ অন্যান্য সকল উপকরণ চুলায় দিয়ে ভালোভাবে ভেজে নিন। এগুলো ভাজা হয়ে গেলে কিছুক্ষণ ঠান্ডা করার জন্য রেখে দিন।

সবগুলো উপকরণ ঠান্ডা হয়ে গেলে গ্রাইন্ডারে ভালোভাবে গুড়া করে নিন এবং এয়ার টাইট বক্স বা কন্টেইনারে ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন। এভাবে তৈরি করা হয় ঘরে তৈরি পুষ্টিকর সেরেলাক।

ঘরে তৈরি পুষ্টিকর সেরেলাক খাওয়ানোর নিয়মঃ ঘরে তৈরি সেরেলাক খাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে পরিমাণ মতো দুধ ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে তারপর দুই থেকে আড়াই চামচ সেরেলাক দুধের মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হবে যাতে করে একসাথে জমাট বেঁধে না যায়। এরপর ঘন না হওয়া পর্যন্ত ধীরে ধীরে নাড়তে হবে।

এরপর ঘন হয়ে আসলে সেটি চুলা থেকে নামাতে হবে এবং কিছুক্ষণ ঠান্ডা করার পর বাচ্চাকে খাওয়ানো শুরু করতে হবে। এর স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য চিনি বা গুড় মিশিয়ে নিতে পারেন এবং সেই সাথে পছন্দমত ফল যেমন কলা, আপেল ইত্যাদি অন্যান্য ফল যোগ করতে পারেন। তবে ১০ মাসের কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে উপরের উপকরণগুলোর মধ্যে বাদাম বাদ দিতে পারেন।

সেরেলাকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সেরেলাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি কিন্তু এর সামান্য কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও আছে সে সম্পর্কে আমাদের অবগত হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। কেননা এটি বাচ্চাদের খাবার। প্রত্যেক পিতা-মাতার বাচ্চাদের খাবার সম্পর্কে সচেতন হওয়া খুবই জরুরী। খাদ্যের মাধ্যমে যেমন শিশুর পুষ্টি চাহিদা সম্পূর্ণভাবে পূরণ হয় তেমনি আবার এই খাবারই শিশু স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়।

একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার যা শিশুর পরিপূর্ণ পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সক্ষম। কিন্তু এই খাবারটি অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা পেটের অন্যান্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। এছাড়াও এলার্জিজনিত সমস্যা থাকলে শিশুকে সেরেলাক না খাওয়ানো ভালো।

কেননা অনেক শিশুর গম ও দুধের কারণে এলার্জি বৃদ্ধি পেতে পারে। আপনি যদি শিশুকে সেরেলাক না খাওয়াতে চান তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ানো শুরু করুন।

লেখক এর মন্তব্য

প্রতিটা পিতা-মাতার তাদের বাচ্চাদের খাবারের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া খুবই প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সচেতন পিতা-মাতা কখনোই শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয় না। তারা সব সময় কোন খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টিকর সে বিষয়ে সচেতন থাকে। ৬ মাস পর থেকে বাচ্চার অতিরিক্ত খাবারের প্রয়োজন হয় সেজন্য অনেকেই বাচ্চাদের সেরেলাক দিয়ে থাকেন।

কেননা সেরেলাক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাবার। তবে এই খাবার দেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ নিন। প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url