আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম এবং ২১টি স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে আপেল ফিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা এবং ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন আপেল ফিডার ভিনেগারের দাম, আপেল সিডার ভিনেগারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, আপেল সিডার ভিনেগার কিডনির জন্য ক্ষতিকারক কিনা ইত্যাদি।

ভূমিকা

আপেল সিডার ভিনেগার এই নামটি আমাদের সবার কাছে পরিচিত। এই ভিনেগাটি আপেল দিয়ে তৈরি হয় সেজন্য একে আপেল সিডার ভিনেগার বলে। এর নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতার কারণে এটি বহু যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আপেল সিডার মূলতঃ এসিডিস এসিড সমৃদ্ধ যা মানব দেহের সুস্বাস্থ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয়।


আপেল সিডার ভিনেগারের ট্যাবলেট মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে ব্যবহৃত হয় সেজন্য এর জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেক। এই ভিনেগারের জনপ্রিয়তা শুধু দেশে না দেশের বাইরেও এর জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেক। এটি শরীরের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন তাদের কাছে আপেল সিডার ভিনেগার অনেক জনপ্রিয়।

এই আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রান্না করা হয়ে থাকে। আর আমাদের এই প্রতিবেদন মূলতঃ আপেল সিডার ভিনেগার নিয়ে। এর সকল গুনাগুণ উপকারিতা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

আপেল সিডার ভিনেগারের উপকারিতা

আপেল সিডার ভিনেগারে স্বাস্থ্যগত সুবিধাজনক বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে এটি বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আপেল সিডার ভিনেগারের মাধ্যমে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

ওজন কমাতেঃ শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে আপেল সিডার ভিনেগার। শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার পর আপেল সিডার ভিনেগার খেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষুধা লাগে না। ফলে শরীরে ক্যালরি পরিমাণ ঠিক থাকে। ক্ষুধা কম লাগার কারণে খাওয়ার প্রয়োজনও কম পড়ে। সেজন্য ধীরে ধীরে শরীরের ওজন কমে যেতে থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে। আপেল সিডার ভিনেগার পেটের মেদ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ বর্তমানে বিশ্বে অনেক মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। এই অকালে মৃত্যুবরণ করার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে হৃদরোগ। রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পাওয়া হৃদরোগের উন্নতম কারণ। ভিনেগার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ফলের হৃদরোগে ঝুঁকি কমে যায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ক্যান্সার হচ্ছে একটি মরণঘাতী রোগ। আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক ক্ষমতা। বেশ কিছু গবেষণা করে দেখা গেছে আপেল সিডার ভিনেগার ক্যান্সারের কোষ নির্মূল করে এবং টিউমার সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিসের জন্য উপকারীঃ আপেল সিডার ভিনেগার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে ২ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খেলে রক্তের শর্করার বৃদ্ধির পরিমাণ কমে যাবে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে আপেল সিডার ভিনেগার। এটি খেলে পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমে না এবং পাকস্থলী সুস্থ থাকে। এছাড়াও এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেটের বিভিন্ন ধরনের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে আপেল সিডার ভিনেগার।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং সংক্রমনের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে

হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখেঃ আপেল সিডার ভিনেগার হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণকে বহুবণে বাড়িয়ে দেয় ফলে হাড় মজবুত হয় এবং হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যায়।

ক্লান্তি অবসাদ দূর করেঃ শরীরে ক্লান্তি অবসাদ দূর করতে আপেল সিডার ভিনেগারের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শরীরের সহনশীলতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সবসময় কর্মক্ষম রাখে।

গলা ব্যথা দূর করতেঃ আপেল সিডার ভিনেগার গলা ব্যথা দূর করতে খুবই কার্যকরী। কুসুম কুসুম গরম পানিতে পরিমাণমতো আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে এক ঘন্টা পর পর গারগেল করলে গলা ব্যথায় ভালো উপশম পাওয়া যায়। এটি ইনফেকশন প্রতিরোধে ভালো ভূমিকা রাখে। এটি এসিডযুক্ত হওয়ার কারণে জীবাণুগুলো সহজে দূর হয়ে যায়।

বদহজ দূর করেঃ যে খাবারগুলো খেলে আপনার বদহজমের সমস্যা তৈরি হতে পারে সেই খাবারগুলো খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে এক চা চামচ মধুর সাথে এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার একসাথে মিশিয়ে খেতে হবে। তাহলে বদহজমের সমস্যা আর হবে না।

বন্ধ নাক খুলে দিতেঃ ঠান্ডাজনিত সমস্যার কারণে নাক বন্ধ হয়ে যায় যা খুব অস্বস্তিকর বিষয়। বন্ধ নাক খুলতে আপেল সিডার ভিনেগারের শরণাপন্ন হতে পারেন। এতে রয়েছে পটাশিয়াম যা মিউকাসকে পাতলা করবে এবং এতে থাকা এসিটিক অ্যাসিড নাকের জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করবে।

ত্বকের সুস্থতায়ঃ ত্বক সুস্থ রাখতে হলে আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের হাইড্রেশন উন্নতি করে ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখে। এছাড়াও এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ দূর করতে খুবই কার্যকরী।


চুলের সুস্থতায়ঃ মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে আপেল সিডার ভিনেগার। এটি চুল পড়া কমাতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে খুবই উপকারী। চুলকে ঝলমলে ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে তোলার জন্য নিয়মিত এটি ব্যবহার করতে পারেন।

ব্যাক্টেরিয়া নিধন করেঃ ব্যাকটেরিয়া নিধন করতে খুবই কার্যকরী আপেল সিডার ভিনেগার। যে স্থানে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সে স্থান পরিষ্কার করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারের ফলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ কমে যায়।

দাঁতের হলদে ভাব দূর করেঃ দাঁতে তৈরি হওয়া দাগ এবং দাঁতের হলদে দাগ দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন আপেল সিডার ভিনেগার। প্রতিদিন সকালে এটি পানির সাথে মিশিয়ে কুলকুচি করুন তাহলে দাঁতের হলদে ভাব এবং জমে থাকা অন্যান্য দাগ দূর হয়ে যাবে।

দুর্বলতা দূর করতেঃ অতিরিক্ত শারীরিক ব্যায়াম বা পরিশ্রম করার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এই দুর্বলতা দূর করতে আপেল সিডার ভিনেগার অধিক কার্যকরী। কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম ও এনজাইম যা শরীরের শক্তি যোগাতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।

প্রাকৃতিক টোনার হিসেবেঃ আপেল সিডার ভিনেগার প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করে। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ত্বক পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। এটি ত্বকের ব্রণ বৃদ্ধি হতে দেয় না সেইসাথে বিভিন্ন দাগও দূর করে থাকে।

চুলের খুশকি দূর করেঃ আপেল সিডার ভিনেগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড খুশকি হওয়াতে বাধা তৈরি করে। এটি চুলের খুশকি দূর করে মাথার ত্বক ভালো রাখতে সহায়তা করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করেঃ অনেকের মুখ থেকে বিভিন্ন কারণে দুর্গন্ধ বের হয়। মুখে দুর্গন্ধ হওয়া একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে। মুখে দুর্গন্ধ দূর করার জন্য আপেল সিডার ভিনেগার পানির সাথে মিশিয়ে কুলকুচি করতে পারেন। তাহলে মুখে দুর্গন্ধ ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।

পায়ের ব্যথা কমাতেঃ অনেকেরই বিভিন্ন কারণে পায়ের ব্যথা হয়ে থাকে যা লেগ ক্রাপস নামে পরিচিত। এই ব্যথা সাধারণত পটাশিয়ামের অভাবে হয়ে থাকে। যেহেতু আপেল সিডার ভিনেগারে পটাশিয়াম রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সেহেতু এটি পায়ের ব্যথা দূর করতে অত্যাধিক কার্যকরী।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে শরীরে বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আপেল সিডার ভিনেগার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম

প্রতিটি খাওয়ার জিনিস এর একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে এবং সে নিয়ম অনুযায়ী আমাদের খাওয়া উচিত। আপেল সিডার ভিনেগার মূলতঃ রান্নাবান্নার কাজে বেশি ব্যবহার করা হয়। এটি ঘরে মেয়োনিজ বানানোর প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় এবং সালাদে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এক গ্লাস পানির সাথে এত চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খাওয়া যায়।

ওজন কমাতে বা পেটে চর্বি কমাতে কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খেতে পারেন এর স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য লেবুর রস মিশাতে পারেন। তবে এগুলো মিশানো পানিটি সরাসরি খাবেন না এতে খাওয়ার সময় স্ট্র বা পাইপ ব্যবহার করে খাবেন তাছাড়া দাঁতের অ্যানিমেল এর ক্ষতি হতে পারে। যদি সরাসরি পান করেন তাহলে এটি পান করার পর দাঁত ব্রাশ করে নেবেন।

আপেল সিডার ভিনেগারের দাম

আপেল সিডার ভিনেগারের দাম সবসময় গুণগত মানবিচার করে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কেননা বাজারে বিভিন্ন ধরনের আপেল সিডার ভিনেগার বের হয়েছে। এর প্রতিটি ব্যান্ডের আপেল সিডার ভিনেগারের দাম আলাদা আলাদা। ভালো মানের আপেল সিডার ভিনেগার কিনতে গেলে ৫০০ মিলিতে খরচ পড়বে সাড়ে ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা। ১ লিটার কিনতে গেলে খরচ পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা।

আপনি যদি আপেল সিডার ভিনেগার কিনতে চান এর গুণগত মান দেখে কিনবেন। কারণ বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল আপেল সিডার ভিনেগার বের হয়েছে। দেখে শুনে না কিনলে নকল জিনিস কিনে ঠকে যেতে পারেন। তাছাড়াও আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখবেন দাম কম হলে সেটি গুণগতমানের দিক দিয়ে কম হবে।

সে জন্য দামের কথা চিন্তা না করে ভালো জিনিস ক্রয় করার চেষ্টা করবেন। তাতে এর গুনাগুণ ভালোভাবে পেয়ে থাকবেন। কেননা নকল জিনিসের গুনাগুণের চেয়ে ক্ষতিকর দিকটা বেশি।

আপেল সিডার ভিনেগার কি কিডনির জন্য ক্ষতিকারক

অনেকেই প্রশ্ন করেন আপেল ফিডার ভিনেগার কি কিডনির জন্য ক্ষতিকারক। না আপেল সিডার ভিনেগার কিডনির জন্য ক্ষতিকারক না বরং এটি উপকারী। এটি কিডনি পাথর অপসারণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাথর কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিডনিতে পাথর হলে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয় যা সহ্য করা খুবই কঠিন।

অস্ত্র পাচার করে শুধুমাত্র সকল কিছু সমাধান করা যায় না। ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে অনেক সমস্যা সমাধান করা যায়। তেমন কিডনির পাথর আপেল সিডার ভিনেগার খেলে অনেক সময় পাথর দূর হয়ে যায়। এই ভিনেগার এ থাকা অম্লের বৈশিষ্ট্য কিডনির পাথরকে ভাঙতে সহায়তা করে। প্রস্রাবের পিএইচ স্তর দিতে পাথরের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ করে।

প্রস্রাবে স্ফটিক তৈরি হতে পারে যা খুব অ্যাসিডিক এবং খুব ক্ষারীয় যা কিডনিতে পাথর তৈরি করে। আপেল সিডার ভিনেগার অম্ল প্রকৃতির হলেও এটি খাওয়ার সময় ক্ষারীয় হয়ে ওঠে। এটি প্রস্রাবের পিএইচ বাড়াতে সাহায্য করে এবং অম্লীয় ভাব কমার ফলে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে অন্যান্য ক্ষমতা। আপনি যদি শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাহলে আপেল সিডার ভিনেগার খেতে পারে পারেন তাহলে অতিরিক্ত ওজন খুব সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে ওজন কমাতে হলে আপেল সিডার ভিনেগার সঠিক নিয়মে পান করতে হবে। এটি শুধু আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আনবে না বরং আপনার ত্বকও সুন্দর করে তুলবে।

১০০ গ্রাম আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে বাইশ ক্যালোরি পরিমাণ শক্তি। এক গ্লাস পানির সাথে এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করলে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় ফলে ওজন কমে যায় এবং পেটের মেদ ঝরে যায়। মনে রাখবেন ওজন কমানোর জন্য এটি পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হবে সরাসরি খাওয়া যাবেনা।

ভালো ফলাফল পেতে চাইলে কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে এটি দীর্ঘদিন ধরে খাবেন না তাহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।

আপেল সিডার ভিনেগারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

প্রতিটি জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনই এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আমরা এখানে আপেল সিডার ভিনেগারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নেব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক -
  • আপেল ফিডার ভিটেগার দীর্ঘ দিন খাওয়া উচিত নয়। এটি দীর্ঘদিন ধরে খেলে এসিডিটির সমস্যা বহুগুণে বেড়ে যাবে এবং আলসারের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
  • এটি কিডনি পাথর অপসারণে যেমন সহায়তা করে তেমনি দীর্ঘদিন খাওয়ার ফলে কিডনির বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
  • দীর্ঘদিন ধরে আপেল সিটার ভিনেগার খেলে দাঁতের এনিমেলের ক্ষতি হয়। এছাড়াও এটি অতিরিক্ত খেলে জিহ্বায় ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • গর্ভবতী মায়েদের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া উপকারী কিনা সে বিষয়ে এখনো পরিষ্কার হয়নি। তবে এই সময় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করা হয় সেজন্য আপেল সিডার ভিনেগার না খাওয়াই উত্তম। কারণ এই সময় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করতে হয় যেগুলোর সাথে আপেল সিডার ভিনেগার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
  • ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া উচিত নয়। খেলে পাকস্থলী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাক।
  • এটি সরাসরি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এটি সরাসরি খাওয়া যায় না এটি পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হয়।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের আপেল সিডার খাওয়ার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের যে ওষুধগুলো খেতে হয় এগুলোর সাথে বিপাক ক্রিয়া করতে পারে।
  • আপেল সিডার ভিনেগার অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে এটি হাড়ের ক্ষয় জড়িত সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন খেলে হাড়ের অন্যতম সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রতিবেদকের মন্তব্য

উপরের আলোচনায় আপেল সিডার ভিনেগারের উপকারিতা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। আপেল সিডার ভিনেগার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন উপকারিতার জন্য ব্যবহার করতে পারেন তবে তা নিয়ম মেনে পরিমান মত। অতিরিক্ত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন কেননা এটি অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে। প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব ও পরিবারের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url