ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পদ্ধতি-ইসলামী ব্যাংক স্যালারি লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আপনি কি ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পদ্ধতি এবং ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোনপদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করুন।
ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পদ্ধতি
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন পাওয়ার শর্ত, ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের পরিমাণ, ইসলামী ব্যাংক স্যালারি লোন এবং ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের জন্য প্রয়োজনের কাগজপত্র ইত্যাদি।

ভূমিকা

ইসলামী ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক যেটি ধর্মীয় নীতিমালা এবং ইসলামী সুন্নাহ অনুসরণ করে ঋণ প্রদান করে। ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের লোন দিয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে হোম লোন। এ লোনের মাধ্যমে মানুষ একটি স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করতে পারে। যা সাধারণ মানুষের জন্য অনেক বড় সুবিধা।


একটি মানুষের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হল সুন্দর একটি নিবাস। যেখানে দিন শেষে শান্তিভরে কাটাতে পারবে। একটি বাড়ি একজন মানুষের অনেক আকাঙ্ক্ষার ফসল যেখানে ফুটে ওঠে মানুষের রুচির পরিচয়। একটি সুন্দর বাড়ি মানুষের ব্যক্তিত্বকে বিকাশিত করে। কারণ যারা রুচিশীল তারা অবশ্যই সুন্দর বাড়ি তৈরি করার চিন্তাভাবনা করবে।

মানুষের বাড়ি নির্মাণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের অনেকগুলো ব্যাংক। সেই ব্যাংকগুলোর মধ্যে এই সুযোগ করে দিচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র ইসলামী শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক। এখানে মানুষ তার আয়ের উপর ভিত্তি করে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি করতে পারছে।

ইসলামী ব্যাংক বাড়ি নির্মাণ লোনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নতুন বাসা কয়েক জন্য প্রয়োজনে অর্থ দিয়ে থাকে। এ লোন সাধারণত বাড়ি ক্রয় করা নির্মাণ করার লক্ষ্যে ব্যবহৃত হয়।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন নেওয়ার নিয়ম

এ ধরনের লোন পদ্ধতি মূলতঃ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করা হয় এবং এই ঋণ প্রদানের পদ্ধতির সম্পূর্ণভাবে ইসলামিক নীতি অনুযায়ী কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এছাড়াও এই ব্যাংকের সুদের হার ইসলামিক নীতি অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। লোন নেওয়ার জন্য কিছু শর্ত থাকে লোন পরিশোধের মেয়াদ এবং সুদ প্রদানের ক্ষেত্রে। ইসলামী ব্যাংক হোম লোন দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমন-

ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণ লোনঃ ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণ লোন প্রদান করা হয়ে থাকে একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণের জন্য।

ব্যবসায়িক বাড়ি নির্মাণ লোনঃ যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য অফিস এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বাড়ি নির্মাণের জন্য এ ধরনের লোন প্রদান করা হয়ে থাকে। নির্মাণ করার জন্য সরবরাহ করা হয়। বাড়ি নির্মাণের মাধ্যমে ঋণ গ্রহীতাকে বাসা ক্রয় করা বা নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ হল প্রদান করা হয়।

এ লোন পরিশোধ করার জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। সে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ পরিশোধ করতে হয়। ইসলামিক নীতি অনুযায়ী এই দিনের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন পাওয়ার শর্ত

আপনি যদি বাড়ি নির্মাণের জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে হাউজ লোন নিতে চান তাহলে অবশ্যই এই কয়েকটি বিষয় জানা জরুরী। সেগুলো হলো-

আয়ের উৎসঃ বাড়ি নির্মাণের জন্য লোন নিতে গেলে সর্বপ্রথম যে তথ্য দিতে হবে সেটি হচ্ছে আপনার আয়ের উৎস। আপনার আয়ের উৎস কি এবং ঋণ নেওয়ার পর শোধ করার সামর্থ্য রয়েছে কিনা সে বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাচাই করবে। আয়ের উৎস যাচাই করার পর আপনি সেখান থেকে লোন পাবেন।


বয়সঃ লোন নেওয়ার কতগুলো শর্তের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে বয়স। আপনি লোন নিতে গেলে অবশ্যই বয়স বিবেচনার করবে। বয়স বেশি হলে ব্যাংক ঋণ প্রদান করবে না। কেননা সে বয়সে ঋণ শোধ করার সামর্থ্য থাকে না। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪০ বছর বয়স ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য। এর চেয়ে বেশি হলে হোম লোন নেওয়ার গ্রহণ যোগ্যতা থাকবে না।

ব্যাংকের সাথে আর্থিক সম্পর্কঃ পূর্বে ব্যাংকের সাথে আর্থিক লেনদেন ছিল কিনা এবং ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা রয়েছে কিনা এ বিষয়ে ব্যাংক লোন দেওয়ার পূর্বে যাচাই করবে। এখানেও আপনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছেন কিনা বা যথাসময় পরিশোধ করতে পেরেছেন কিনা এ বিষয়ে তারা তদারকি করবে। এগুলো সব কিছু ঠিক থাকলে তারপরে আপনাকে বাড়ি নির্মাণে ঋণ প্রদান করবে।

আপনার কর্মস্থল সম্পর্কেঃ ইসলামী ব্যাংক হোম লোন দেওয়ার পূর্বে আপনার বর্তমান কর্মস্থল, সেই কর্মস্থলে আপনার অবস্থান কেমন সেই সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা নিবে। আপনার নিজ কর্মস্থলে যদি আপনার অবস্থান ভালো হয় এবং আপনি মানুষ হিসেবে ভাল হন বা ঝামেলা মুক্ত থাকেন তাহলে এই ঋণ প্রদান করবে ইসলামী ব্যাংক।

পূর্বের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রেঃ পূর্বে কোথাও ঋণ রয়েছে কিনা এবং সেই ঋণ বর্তমানে পরিশোধ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে ব্যাংক অবশ্যই তদন্ত করবে। আপনার লেনদেনের রেপুটেশন যদি খারাপ হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে ঋণ প্রদান করবে না। আর ভালো হলে এই ঋণ প্রদান করবে।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের পরিমান

ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের আওতায় গ্রাহককে ঋণের ধরন, ব্যক্তিগত অনুমোদনের ক্ষমতা, ব্যাংকিং নীতিমালা এবং অনুমানের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক ঋণ প্রদান করে। বাড়ি নির্মাণ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আয়ের উৎস বিবেচনা করে কতটুকু পরিমাণ প্রদান করা যায় তা নির্ধারণ করে। বাড়ি নির্মাণের জন্য ইসলামী ব্যাংক আপনার বাড়ির মূল্যের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হতে পারে।

যেমন ৬০/৭০ শতাংশ বা ৯০ শতাংশ ইত্যাদি পরিমাণ ঋণ প্রদান করে থাকে। ধরা যাক একটি বাড়ি নির্মাণ করতে ৩০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন সেখানে ব্যাংক আপনাকে ৮০ পার্সেন্ট প্রদান করবে যেমন ৩০ লক্ষ টাকার ৮০ পার্সেন্ট হয় ২৪ লক্ষ টাকা। তবে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের নীতিমালা এবং শর্তাবলী বিভিন্ন ব্যাংকের ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালা প্রবর্তন হতে পারে।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের প্রয়োজন এর কাগজপত্র

ইসলামী ব্যাংক থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য লোন নিতে গেলে আপনাকে অবশ্যই নিজ মালিকানা জমি থাকতে হবে। এছাড়াও যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো-

ব্যক্তিগত প্লটের ক্ষেত্রে

  • বায়া দলিল বা জমির মূল মালিকানা দলিল
  • সিএ, এসএ, আরএস, বিএস খতিয়ান সমূহের জবেদা নকল
  • নামজারি খতিয়ান, ডিসিআর ও খাজনা রশিদ
  • সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ১২ বছরের তল্লাসি/এনওসি ইত্যাদি

সরকারি প্লটের ক্ষেত্রে

  • দখল হস্তান্তর কাগজ বা দলিল
  • প্লটের বরাদ্দ কাগজ
  • হস্তান্তর অনুমতি প্রাপ্ত নামজারি খতিয়ান, ডিসিআর ও খাজনা রশিদ
  • বায়া দলিল, মূল লিজ দলিল
  • লিজ দাতা প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে বন্ধক নামা ইত্যদি

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন আবেদন করার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন বা বাড়ি নির্মাণ লোন নিতে গেলে অবশ্যই আপনাকে আবেদন করতে হবে। কিভাবে আবেদন করা যায় সে সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
  • ইসলামী ব্যাংক হোম লোন নেওয়ার জন্য আপনি সরাসরি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন বা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।
  • সরাসরি আবেদন করতে চাইলে আপনার নিকটস্থ শাখায় যে গিয়ে যোগাযোগ করুন এবং অনলাইনে আবেদন করতে চাইলে ইসলামী ব্যাংক ওয়েবসাইট লগইন করুন।
  • হোম লোনের ফরমটি প্রথমে ডাউনলোড করুন তারপর সঠিকভাবে সকল তথ্য দিয়ে পূরণ করুন।
  • ফরম পূরণ করা হয়ে গেলে সরাসরি অফিসে গিয়ে জমা দিতে পারেন বা অনলাইনের মাধ্যমে এ ফরমটি সাবমিট করতে পারেন।
  • ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার এ আবেদনটি সঠিকভাবে পর্যালোচনা করে দেখবে এরপর আপনি ঋণ নেওয়ার যোগ্য হলে আপনার সাথে তারা যোগাযোগ করবে।
  • ঋণ অনুমোদনের পর আপনাকে ঋণ পরিশোধ করা নির্দিষ্ট সময়, সুদের হার, মাসিক কিস্তির পরিমাণ ইত্যাদি সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন নেওয়ার পদ্ধতি

বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ কৃষির উপরে নির্ভরশীল। কৃষি উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোনের ব্যবস্থা করে থাকেন। কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কৃষি ঋণ দিয়ে যাচ্ছেন ইসলামী ব্যাংক। এ সেবা অনেকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।


কৃষি ঋণ প্রদান করলে কৃষকরা তাদের উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি করতে পারে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা দ্রুতগতিতে উন্নয়নের দিকে ধাবিত হতে পারে। সে লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন নেওয়ার প্রয়োজন এর কাগজপত্র

  • জাতীয় পরিচয় পত্র
  • মানিকানাধীন জমির মূল কাগজপত্র
  • কৃষকের অভিজ্ঞতা পেশ করতে হবে
  • নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি

বাংলাদেশের অনেক ব্যাংকে প্রবাসী লোন দিয়ে থাকে। অন্যান্য ব্যাংকের মত ইসলামী ব্যাংকও প্রবাসী লোন দিয়ে থাকে। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ প্রবাসী লোন নিতে অনেক আগ্রহী। তবে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের অনেক সুবিধা থাকায় বেশিরভাগ মানুষ এই ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নেওয়ার চিন্তা করেন।

শুধুমাত্র এই ব্যাংকটি ইসলামী শরিয়া মোতাবেক এবং হালালভাবে ঋণ প্রদান করে থাকে। ইসলামী ব্যাংকের লোন পাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে আবেদন করতে হবে। ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে হলে যে বিষয়গুলো আপনাকে অনুসরণ করতে হবে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো-

প্রবাসী লোন নেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • পাসপোর্ট ও ভিসার ফটোকপি
  • দুইজন গ্যারান্টার যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল
  • বিদেশি কোম্পানিতে চাকরিরত থাকা অবস্থায় লোন নিলে সেই কোম্পানির বেতনের শীট

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন আবেদনের নিয়ম

  • প্রবাসী লোন নিতে হলে প্রথমে আপনাকে ব্যাংকের নিকটস্থ শাখা থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
  • এরপর এই ফরমটি সঠিকভাবে সকল তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।
  • পূরণ করা হয়ে গেলে ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ফরমটি জমা দিতে হবে।
  • ফরমটি জমা দেওয়ার পূর্বে আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসার ফটোকপি জমা দিতে ভুলবেন না।
  • পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যেতে এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, পাসপোর্ট ভিসার ফটোকপি এবং নমিনির প্রয়োজনে কাগজপত্র সাথে রাখতে ভুলবেন না
  • জমা দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃক সকল তথ্য পর্যালোচনা করে আপনি ঋণ নেওয়ার যোগ্য হলে ঋণ প্রদানে অনুমতি দিবে উক্ত ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া কি জায়েজ

ইসলামী ব্যাংক সম্পূর্ণভাবে দাবি করেন শরিয়াহ মোতাবেক এবং সকল ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী তারা ঋণ প্রদান করে থাকে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে এটি সম্পূর্ণভাবে শরিয়াহ মোতাবেক কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হয় না। অনেকে প্রশ্ন করেন ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া কি জায়েজ। যদি শরিয়াহ মোতাবেক সম্পূর্ণভাবে ইসলামী নীতিমালায় কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হতো তাহলে জায়েজ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

যেহেতু বাংলাদেশের কোন ব্যাংকই সম্পূর্ণভাবে শরিয়াহ ভিত্তিক পরিচালিত হয় না সেহেতু ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া সম্পূর্ণরূপে জায়েজ নাও হতে পারে। কোন শরিয়াহ সঠিকভাবে ব্যবহার না করার কারণে তারা সুদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। আর আমরা সবাই জানি সুদ খাওয়া হারাম। সে ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া হালাল নয়।

ইসলামী ব্যাংক স্যালারি লোন

স্যালারি লোন বলতে বোঝায় বেতনের উপর ভিত্তি করে যে লোন প্রদান করা হয় সেটি হচ্ছে স্যালারি লোন। ইসলামী ব্যাংক থেকে এই লোন পেতে হলে আপনাকে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে হবে। মোট কথা আপনি যদি চাকরিজীবী হন বা চাকুরিরত অবস্থায় থাকেন তাহলে এই লোনের জন্য আপনি আবেদন করতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংক স্যালারি লোন নিতে হলে আপনাকে কয়েকটি নিয়ম কানুন অনুসরণ করতে হবে। সেগুলো হল-

বয়সঃ ইসলামী ব্যাংক স্যালারি লোন নিতে গেলে বয়সসীমা সর্বনিম্ন ২২ এবং সর্বোচ্চ ৬০ বছর হতে হবে। এর বেশি বা কম হলে আপনি এই লোন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

মাসিক আয়ঃ এই লোন আপনি নিতে চাইলে আপনার বেতনের উপর ভিত্তি করে লোন প্রদান করা হবে। কেননা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবশ্যই দেখবে আপনার পরিশোধ করার ক্ষমতা কতটুকু।

ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্যঃ ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য যাচাই করে দেখবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পূর্বে ব্যাংকের সাথে আর্থিক লেনদেনের অবস্থা কেমন বা কোন ব্যাংকে পূর্বের লোন আছে কিনা এগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে যাচাই করবে তারপরে লোন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেবে।

ইসলামী ব্যাংক স্যালারি লোন নেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ইসলামী ব্যাংক সেলারি লোন নিতে গেলে যে সকল কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় সেগুলো নিচে দেওয়া হলো-
  • স্যালারি সার্টিফিকেট
  • গত এক বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • জাতীয় পরিচয় পত্র
  • পে স্লিপ
  • বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি
  • গ্যারান্টার
  • দুইজন ব্যক্তি রেফারেন্স ইত্যাদি

প্রতিবেদকের মন্তব্য

ইসলামী ব্যাংকের লোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়। এই সুবিধার কারণে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ইসলামী ব্যাংকের লোন পদ্ধতিগুলো খুবই যুগোপযোগী। এতে করে গ্রাহকগণ আর্থিক সমস্যার মোকাবেলা খুব সহজেই করতে পারে।

প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url