মানসিক চাপ কমানোর ১৬টি কার্যকরী উপায়-মানসিক চাপ কমাবে যেসব খাবার

প্রিয় পাঠক, আপনি কি মানসিক চাপ কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে মানসিক চাপ কমানোর উপায় সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মানসিক চাপ কমানোর উপায়
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন মানসিক চাপ কমাবে যেসব খাবার, মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায়, মানসিক চাপের ক্ষতিকর প্রভাব ইত্যাদি।

ভূমিকা

আর্থিক সংকট, পারিবারিক সমস্যা, কর্মস্থলের সমস্যা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ তৈরি হয়। অতিরিক্ত মানসিক চাপ হতে পারে মানুষের শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বেশিরভাগ মানুষেরই শরীরের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয় মানসিক চাপ থেকে। মানসিক চাপ ধীরে ধীরে মানুষের শরীরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে।


সেজন্য নিজেকে ভালো রাখতে হলে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই জরুরী। মানসিক চাপ দূর করতে হলে প্রথমে জানতে হবে মানসিক চাপের মূল কারণ। গভীরে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এসব মানসিক চাপের কারণ সম্পর্কে, এরপর সে বিষয়ে সমাধান করতে হবে। চিকিৎসকরা সব সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে ও মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে বলেন।

মানসিক চাপ থাকলে সেগুলো সবার সাথে আলোচনা করার কথাও উল্লেখ করেন। কেননা একা একা মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে হলে বেশি বেশি বন্ধুদের সাথে সেগুলো ভাগাভাগি করে নিতে হবে এবং পরিবারের সাথেও সে বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে।

মানসিক চাপ কমানোর উপায়

মানসিক চাপ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের নানা ধরনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায়। দুশ্চিন্তা এবং হতাশা থেকে তৈরি হয় মানসিক চাপ। সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে হলে মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে। আজ আমরা এখানে মানসিক চাপ কমানোর কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোকপাত করবো। তাহলে চলুন মানসিক চাপ কমানোর উপায় গুলো জেনে নেই-

পর্যাপ্ত ঘুমঃ পরিমিত ঘুম মানুষের শরীর এবং মস্তিষ্ক কে শান্ত রাখে। ঘুম মানসিক চাপ থেকে শরীরকে রক্ষা করে সেজন্য শরীর সুস্থ রাখতে এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখতে হলে নিয়ম করে ঘুমানো উচিত। ঘুমানোর জন্য ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং ঘুম থেকে উঠার একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন।

নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করলে মানসিক চাপ তৈরিকারি হরমোনের নিঃসরণ কমায় এবং এন্ডরফিনের মাত্রা বাড়ায়। এই এন্ডরফিন সুখী হরমোন নামে পরিচিত। সেজন্য শত ব্যস্ততার মাঝেও নিয়ম করে শারীরিক ব্যায়াম বা হাঁটা প্রয়োজন কেননা শারীরিক ব্যায়াম মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা থেকে শরীরকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

পছন্দনীয় কাজে মনোযোগ দিনঃ প্রত্যেকেরই এক এক রকমের পছন্দের বিষয় থাকে। মানসিক চাপ তৈরি হলে এই বিষয়গুলো পারে সেগুলো কমাতে। তাই মানসিক চাপের সময় পছন্দনীয় কাজগুলো পুনরায় শুরু করুন। তাহলে ধীরে ধীরে মানসিক চাপ কমে যাবে।

নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুনঃ মানসিক চাপ তৈরি হলে সবসময় নেতিবাচক চিন্তা মনের মধ্যে ঘুরপাক খায়। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা সব সময় মানুষকে খারাপ অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়। সেজন্য নেতিবাচক চিন্তাগুলোকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

নিজেকে জানুনঃ মানুষের চাপ থেকে মুক্ত হওয়ার একটি উপায় হচ্ছে নিজের সম্পর্কে ভালোভাবে জানা। কিভাবে আপনার মানসিক চিন্তা দূর হবে সে বিষয়ে ধারণা নেওয়া। যেভাবে চললে মানসিক চিন্তা থেকে দূরে থাকতে পারবেন সেভাবে চলার অভ্যাস তৈরি করুন।

নিজেকে সময় দিনঃ মানসিক চাপ তৈরি হলে কাজকর্ম বা পড়াশোনা কোন কিছুতেই মনোযোগ তৈরি হয় না। সেজন্য নিজের জন্য আলাদা কিছু সময় বের করুন সে সময়ে আপনি যা পছন্দ করেন সেগুলো করতে পারেন। যেমন- অনেকে ঘোরাফেরা পছন্দ করেন। ঘুরতে যাওয়া বা ভ্রমণ করলে মানসিক চাপ অনেক ক্ষেত্রেই কমে যায়।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস তৈরি করুনঃ মানসিক চাপ থাকলে খাবার খাওয়ার প্রতি অনীহা তৈরি হয়। খাবার না খাওয়া মানসিক চাপের সমাধান কখনোই হতে পারে না। সে যেন সঠিক খাদ্যাভ্যাস তৈরি করুন, যাতে করে শরীর সব সময় সুস্থ থাকে এবং কর্মক্ষমতা বজায় থাকে। শরীর কর্মক্ষম থাকলে মানসিক চাপ ধীরে ধীরে কমে যাবে।

শান্ত এবং স্থির থাকতে শিখুনঃ যেকোনো পরিস্থিতিতে শরীর ও মনকে শান্ত এবং স্থির রাখতে শিখুন। অল্প সময়ে মানসিক চাপ তৈরি হলেও তা থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় লাগে। সেজন্য শান্ত ও স্থির থেকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার মোকাবেলা করুন।

ডায়েরি লিখুনঃ লেখালেখি করলে মন ভাল হয়ে যায়। লেখালেখি আপনার পছন্দের বিষয় নাও হতে পারে তবুও ডায়েরি লেখার অভ্যাস তৈরী করুন, তাতে করে মানসিক চাপ অনেক কমে যাবে। যে বিষয়টি মানসিক চাপের কারণ হবে সে বিষয়টি লিখে রাখার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি যে বিষয়টি ভালো লাগে সে বিষয়টা নিয়ে লিখালিখি করুন তাহলে দেখবেন মন এমনি এমনি ভালো হয়ে যাবে।


নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুনঃ মানসিক চাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। সেই লক্ষ্য অনুযায়ী নিজেকে গুছিয়ে নিন। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অটুট থাকুন এবং জীবন যাপনের একটি রুটিন তৈরি করুন। এরপর সেই রুটিনের মধ্যে নিজেকে নিয়ে আসুন এবং সে আলোকে সবকিছুর জন্য সময় নির্ধারণ করুন।

সময়ের সাথে পরিবর্তন হতে শিখুনঃ সময়ের সাথে নিজেকে পরিবর্তন করে নিতে না পারলে মানসিক চাপ থেকে কখনোই মুক্তি পাওয়া যাবে না। সেজন্য সময় যে রকম চায় সেভাবে নিজেকে তৈরি করুন এবং মোতাবেক চলাফেরা করুন।

কাছের বন্ধুর সাথে কথা বলুনঃ যে বিষয়ে আপনি মানসিক চাপে রয়েছেন সেই বিষয়ে আপনার সবচেয়ে কাছের বন্ধুর সাথে শেয়ার করুন। সেই বন্ধুর কাছে চাপ থেকে মুক্তি হওয়ার জন্য সাহায্য চান। কিন্তু এমন বন্ধুকে বলবেন না যেন সে অসময়ের সুযোগ খোঁজে।

নিজের মনের সাথে কথা বলুনঃ আমাদের প্রতিটি মানুষেরই সমস্যা সমাধানে নিজের মনের গুরুত্ব দিতে হয়। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের মনের সাথে কথা বলুন। আপনার মন কিভাবে চায় এবং কিভাবে কাজ করলে এই চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সেই বিষয় নিয়ে ভাবুন। তারপর সেই ভাবে সমাধানের চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে যেমন শরীর শান্ত থাকে তেমনি মস্তিষ্ক শান্ত হয়ে যায়। মানসিক চাপ কমাতে পানি পান করার গুরুত্ব রয়েছে অত্যাধিক। প্রতিদিন নিয়ম করে আট গ্লাস পানি পান করুন তাহলে দেখবেন মানসিক চাপ অনেকটাই কমে গেছে।

নিজের প্রতি যত্ন নিনঃ মানসিক চাপ দূর করতে হলে নিজের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং নিজেকে ভালোবাসা অতি প্রয়োজন। কারণ নিজেকে ভালবাসলে বেঁচে থাকার আগ্রহ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে, সেজন্য মানসিক চাপ থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করবে।

পরিবারের সাথে আলোচনা করুনঃ মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন সমাধান না পেলে পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা করুন। পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে সেটি সমাধান করার চেষ্টা করুন। মানসিক চাপের কারণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা করুন যাতে তারা বুঝতে পারে সমস্যা সম্পর্কে। পরিবারের সাথে যে কোন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে শিখুন তাহলে মানসিক চাপ এমনিতেই দূর হয়ে যাবে।

মানসিক চাপ কমাবে যেসব খাবার

আমরা যেগুলো খাবার খাই সেগুলো আমাদের শরীরের উপর প্রভাব পড়ে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা আমাদের খাদ্যাভ্যাস আমাদের মনের উপরও দারুন প্রভাব ফেলে। প্রতিদিনের নানা কারণে আমাদের মানুষের চাপ ও ট্রেসের মধ্যে দিয়ে পার হতে হয়। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা ট্রেসের কারণে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা তৈরি হতে পারে।

সেজন্য আমাদের মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা অত্যন্ত জরুরী। মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন হয়ে থাকে। এ সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। যা শরীরকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সঠিক খাদ্য অভ্যাস তৈরি করা উচিত।

কেননা স্বাস্থ্যকর খাবার মানসিক চাপ কমাতে দ্বিগুণ সাহায্য করে। তাহলে চলুন জেনে নেই কি কি খাবার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে-

পালং শাকঃ যখন আমরা বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকি তখন আমাদের মাংসপেশি টাইট হয়ে পড়ে। এ সময় আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেমন ঘুম কম হয়, মস্তিষ্ক অসুস্থ হয়ে পড়ে, রক্তচাপ বেড়ে যায় ইত্যাদি। এই সমস্যাগুলোকে প্রশমিত করতে পারে একমাত্র ম্যাগনেসিয়াম। আর প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এর উৎস হচ্ছে পালং শাক। তাই বলা যেতেই পারে পালংশাক খেলে মানসিক চাপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

গ্রিন টিঃ গ্রিন টি’তে রয়েছে ল্যাভেন্ডার বা ক্যামেমাইল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা স্নায়ুকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। এই পানীয় জাতীয় খাবার শরীরে দূষিত পদার্থ বের করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহযোগিতা করে।

টক দইঃ মানসিক চাপ কমাতে আরো একটি কার্যকরী খাবার হলো টক দই। টক দইয়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া আত্মবিশ্বাস ও সাহস বাড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি এটি মানসিক চাপ বহুগুণে কমিয়ে দেয়।

গাজরঃ বিশেষজ্ঞরা বলেন মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য বেশি বেশি ফলমূল এবং সবজি খাওয়া অতি প্রয়োজন। যে সবজিগুলো মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে সেগুলোর মধ্যে গাজর অন্যতম। নিয়মিত গাজর খেলে মানসিক চাপ ধীরে ধীরে কমে যাবে। নিয়মিত গাজর খাওয়া ত্বকের জন্যেও অতি উপকারী।

বিভিন্ন ধরনের বাদামঃ বাদামে রয়েছেন নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা যা আমরা সবাই জানি। বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং সবথেকে বেশি উপকারী উপাদান ম্যাগনেসিয়াম। বাদামে এই উপাদানগুলো থাকায় মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখে।

রসুনঃ রসুনে রয়েছে খুবই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিয়মিত রসুন খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনে। রক্তচাপ থাকলে মানসিক চাপও কমে যায়।

ভিটামিন সি যুক্ত ফলঃ মানসিক চাপ কমাতে ভিটামিন সি যুক্ত খাবারের কোন জুড়ি নেই। ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সেজন্য মানসিক চাপ কমাতে বেশি বেশি ফল খাওয়া প্রয়োজন। ভিটামিন সি যুক্ত ফল মস্তিষ্ককে সচল ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপ দূর করার ইসলামিক উপায়

দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কারণে আমাদের মানসিক চাপ তৈরি হয়। সেই চাপগুলো কমানোর জন্য আমরা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকি। কিন্তু ইসলামিক উপায়ে মানসিক চাপ কমানো যায়। আল্লাহ তায়ালা এমন কোন সমস্যা দেননি যার সমাধান নেই। মানসিক চাপ দূর করার কয়েকটি ইসলামিক উপায় সম্পর্কে চলুন জেনে নেই-

নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করাঃ কোরআন তেলাওয়াত করলে অন্তর প্রফুল্ল এবং শান্ত হয়ে ওঠে। কেননা মুমিনদের জন্য কোরআন তেলাওয়াত মন প্রফুল্ল হওয়ার অন্যতম উৎস। প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করলে মনে যেমন শান্তি ফিরে আসে তেমনি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা যায়। যে মানুষগুলো কোরআনের আলোয় আলোকিত তাদের জীবনে মানসিক চাপ কম থাকে।

নামাজে মনোনিবেশ করাঃ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কেননা নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দা কোন কিছু চাইতে পারে। কোন বিপদের সম্মুখীন হলে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাইতে পারে।

বেশি বেশি ইস্তেগফার করাঃ অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমাতে বেশি বেশি ইস্তেগফার করার কোন বিকল্প নেই। মানুষ যে সমস্যাগুলোর মধ্যে পড়ে সেগুলোর সমাধান হিসেবে আল্লাহতালা বেশি বেশি ইস্তেগফার করার কথা বলেছেন।

দরুদ পড়াঃ বেশি বেশি দরুদ পড়লে আল্লাহ তাআলা বান্দার উপর রহমত নাযিল করেন। আল্লাহ তাআলার এই রহমত মানুষকে সব ধরনের মানসিক চাপ থেকে মুক্ত রাখে। দরুদ পড়ার মাধ্যমে যেকোনো দোয়া কবুল হয়ে যায়। (রাসুল সাঃ) এর উপর দরুদ পড়া এমন একটি ইবাদত যা আল্লাহ তাআলা খুব সহজেই কবুল করে নেন।

পরকালের কথা স্মরণ করাঃ সর্বদা মৃত্যুকে স্মরণ করতে হবে। মৃত্যুকে স্মরণ করলে মানসিক চাপ একেবারে দূর হয়ে যায়। পরকালের কথা স্মরণ করলে মানুষের যেকোনো ধরনের জীবন যাপন করতে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং সকল প্রকার অন্যায় কাজকর্ম থেকে নিজেকে দূরে রাখে। পরকালের কষ্টের কথা চিন্তা করলে দুনিয়ার কষ্ট কিছুই মনে হবে না এবং তা মানিয়ে নেওয়া অনেক সহজ হবে।

মানসিক চাপের ক্ষতিকর প্রভাব

অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীরের উপর বিভিন্ন রকম প্রভাব পড়ে। মানসিক চাপের কারণে শরীরে যেগুলো প্রভাব পড়ে সেগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন জেনে নিই-
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে পরিপাকতন্ত্রের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি হয় মানসিক চাপের কারণে।
  • মাথা ব্যাথারও কারণ হয়ে থাকে মানসিক চাপ। মাথা ব্যথা কমানোর জন্য অনেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করে। মানসিক চাপ থেকে যে মাথা ব্যথা হয় সেজন্য ওষুধের প্রয়োজন হয় না বরং মানসিক চাপ কমানো প্রয়োজন পড়ে।
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে চুল পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। চুল পড়তে পড়তে এমন অবস্থা তৈরি হয় অবশেষে মাথায় টাক পড়ে যায়।
  • শরীরকে মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে এই মানসিক চাপ। এ ধরনের চাপের কারণে স্ট্রোক, হার্ট এটাকসহ বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়।
  • শরীরের ওজন কমে শরীর শুকিয়ে যায় মানসিক চাপের কারণে
  • ত্বকের উপর বিভিন্ন প্রভাব ফেলে যেমন ব্রণ, চোখের নিচে কালো দাগ, চোখ গর্তে ঢুকে যাওয়া, বয়সের ছাপ, এবং অন্যান্য সমস্যা তৈরি হয়।
  • অনিদ্রা জনিত সমস্যা তৈরি হয় মানসিক চাপ থেকে। এই চাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলে মানুষের শরীরকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়।
  • যারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অমনোযোগী থাকে তাদের সম্পর্কে জানলে দেখা যাবে এ সমস্যাগুলো মানসিক চাপ থেকে তৈরি হয়েছে। অমনোযোগিতা মূলত মানসিক চাপের ফলাফল।
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ মস্তিষ্কের উপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। মানসিক চাপ বাড়তে থাকলে ব্রেনের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়।

প্রতিবেদকের মন্তব্য

দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কারণে আমাদের মানসিক চাপ তৈরি হয়। এই চাপগুলো শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেজন্য মানসিক চাপের কারণ নির্ণয় করে তার সমাধান করতে হবে যাতে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার পরিবার ও কাছের মানুষদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url