বেঈমান মানুষ নিয়ে উক্তি ও স্ট্যাটাস-বেইমান বন্ধু নিয়ে উক্তি জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি বেঈমান মানুষ নিয়ে উক্তি ও স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বেঈমান মানুষ নিয়ে উক্তি এবং বেঈমান মানুষ নিয়ে ইসলামিক উক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বেঈমান মানুষ নিয়ে উক্তি ও স্ট্যাটাস
এটি পড়লে আরো জানতে পারবেন বেঈমান বন্ধু নিয়ে উক্তি, বেঈমান মানুষ চেনার উপায় এবং মুখোশধারী মানুষ নিয়ে কয়েকটি উক্তি ইত্যাদি।

ভূমিকা

আমরা জীবনে চলার পথে অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হই। প্রতিটি মানুষের বৈশিষ্ট্য আলাদা আলাদা। কেউ ভালো কেউ বা মন্দ। মানুষের ভালো বৈশিষ্ট্যগুলো ভালো চিন্তা ধারার দিকে ধাবিত হয়। কিন্তু খারাপ বৈশিষ্ট্যগুলো নিজেকে এবং আশেপাশে পরিবেশকে ক্ষতিকর দিকে। আমাদের সমাজে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা সাপের চেয়ে অনেক বিষধর হয়।


সেগুলো লোককে সাধারণ ভাষায় আমরা বেঈমান বলে থাকি। বেঈমান লোকগুলো নিজে ভালো থাকার জন্য অন্যকে বিপদের দিকে ঠেলে দেয়। বেঈমান লোকগুলো সব সময় কাছের মানুষই হয়। কারণ দূরের লোক সহজে বেঈমানী করার সাহস পায় না। বেঈমানদের দ্বারা কখনো কারো উপকার হয় না। তারা কখনো কারো ভালো দেখে সহ্য করতে পারে না।

কারো ভালো দেখলে সব সময় ক্ষতি করার চেষ্টায় থাকে এ ধরনের লোক। সেজন্য বেঈমান লোক চিনে তাদের থেকে দূরে থাকাই সবচেয়ে ভালো। তাছাড়া যে কোন সময় আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

বেঈমান মানুষ নিয়ে উক্তি

  • বেঈমান লোক কখনো কারো ভালো বন্ধু হতে পারেনা কারণ তারা বন্ধুত্বের সাথে ও বেঈমান করতে দ্বিধাবোধ করে না।
  • বেঈমানরা সব সময় আত্মকেন্দ্রিক হয়ে থাকে কেননা তারা নিজের ভালোর জন্যেই অন্যের সাথে বেঈমানী করে।
  • বেঈমান মানুষরা কখনো কাউকে ভালবাসতে পারে না তারা শুধু নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ভালোবাসার অভিনয় করে।
  • বেঈমান মানুষের সঙ্গ ছাড়া একা থাকাই শ্রেয় কারণ একা থাকলে জীবনে বিপদ আসার সম্ভাবনা কম থাকে।
  • স্বপ্ন কখনো বেঈমানী করে না বেঈমানী করে তারা যারা স্বপ্ন দেখায় এবং স্বপ্ন ছিনিয়ে নেয়।
  • বেঈমান মানুষগুলো চেনার জন্য জীবনে অন্তত একবার বিপদে পড়া প্রয়োজন।
  • যারা অন্যের সুখ সহ্য করতে পারে না তাদের জীবনে সফলতার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
  • যারা অন্যের সুখ ছিনিয়ে নেয় তাদের সুখের মেয়াদ বেশি দিন হয় না।
  • বেঈমান মানুষ মানব জীবনকে কুলুষিত করে।
  • বেঈমান মানুষ কখনো ভালবাসতে জানে না তারা শুধু মানুষকে কষ্ট দিতে জানে।
  • সবচেয়ে বেশি কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় যখন নিজের মানুষ বেঈমানী করে।
  • সমাজে সবচেয়ে বেশি নিকৃষ্ট হচ্ছে বেঈমান এবং প্রতারক কারণ তারা সর্বদা অন্যের ক্ষতি করার সচেষ্ট থাকে।
  • মিথ্যাবাদী এবং বেঈমানদের সবচেয়ে বড় গুণ হলো তারা সেকেন্ডে নিজের কথাকে পরিবর্তন করে দিতে পারে।
  • নিজের দুর্বল দিকগুলো বেঈমানদের সামনে কখনো তুলে ধরবেন না কারণ বেঈমানরা সুযোগ পেলে আঘাত করবে।
  • বেঈমান মানুষের কাছে ভালোবাসার চেয়ে স্বার্থের মূল্য অনেক বেশি।
  • মানুষ না চিনে পথের খোঁজ দিতে নেই কারণ বেঈমান মানুষগুলো পথ চেনা হয়ে গেলে আপনাকে আর চিনবে না।
  • নিজে নিজেকে সময় দিতে শিখুন কারন মানুষ বেঈমানী করতে পারে সময় কখনো বেঈমানী করে না।
  • বেঈমান এর কাছ থেকে ভালো কিছু পাওয়া আর অন্ধের কাছে আয়না বিক্রি করা একই সমান।
  • মানুষের ধর্ম এমনই যাকে বেশি আপন মনে করা হয় সেই সবচেয়ে বেশি বেঈমানী করে।
  • বেঈমানদের তুমি যতই ভালো কিছু শিখিয়ে দাও না কেন দিন শেষে সে বেঈমানী রয়ে যাবে।
  • দিন শেষে বেঈমানরাই ভালো থাকে আর কষ্টে থাকে ভালো মানুষগুলো।
  • এ ধরনের মানুষরা স্বার্থের জন্য নিজের রক্তের সাথে বেঈমানী করতে দ্বিধাবোধ করে না।
  • বেঈমান মানুষগুলো নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্যের অনুভূতিকে মূল্য দেয়না।
  • তুমি যতই চেষ্টা করো বেঈমানরা কখনো প্রিয়জন হতে পারবে না কারণ তুমি সব সময় তাদের প্রয়োজন হয়ে থাকবে।
  • বেঈমানরা মানুষের মধ্যে সূঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হয়।
  • বেঈমান মানুষদের কখনো অন্ধ বিশ্বাস করতে নেই কারণ তারা সুযোগ পেলেই ঝোপ বোঝে কোপ মেরে দেবে।
  • মিথ্যাবাদীরা কখনো ভালো মানুষ হতে পারে না প্রকৃতপক্ষে তারা বেঈমান বা প্রতারক হয়ে থাকে।

বেঈমান মানুষ চেনার উপায়

আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষ রয়েছে কিন্তু বোঝার কোন উপায় নাই যে কে বেঈমান। আমরা এখানে বেঈমান মানুষ চেনার কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
  • বেঈমান মানুষ চেনার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে বিপদে পড়া। বিপদে পড়লে বুঝা যায় কে প্রকৃতপক্ষে আপন আর কে পর। কারণ বেঈমান মানুষ কখনো কারো আপন হতে পারে না
  • বেঈমানরা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যকে সর্বদা ঠকিয়ে থাকে। নিজে ভালো কিছু পাওয়ার জন্য অন্যের ক্ষতি করতে করতে দ্বিধাবোধ করে না এ ধরনের মানুষ।
  • বেঈমান মানুষের কাজের সাথে কথার কোন মিল থাকে না কারণ তারা কথা যেভাবে বলে কাজ অন্যভাবে করে।
  • বেঈমান মানুষ সবসময় দুর্বলকে অপছন্দ করে কারণ তাদের কাছ থেকে তার পাওয়ার কোন কিছু থাকে না।
  • বেঈমান মানুষ সবসময় উচ্চ লেভেলের মানুষের সাথে মেলামেশা করে। উচ্চ লেভেলের মানুষের সাথে মেলামেশা করে কারণ তাদের সাথে বেঈমানী করে কিছু অর্জন করা যায়।
  • এ ধরনের চিনতে হলে তার চারিত্রিক গুণাবলী জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। কেননা বেঈমান মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ভালো হয় না।
  • কাউকে চিনতে হলে তার স্বপ্নগুলো জানতে হবে বা স্বপ্নগুলো পূরণ করার পদক্ষেপ জানতে হবে। তাহলে আপনি আপনি বুঝবেন তার চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।
  • আপনি যদি মানুষ চিনতে যান তাহলে প্রথমে তার উপকার করে দেখুন যে তার মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধ রয়েছে কিনা কেননা এ ধরনের মানুষের মধ্যে কৃতজ্ঞতা বোধ একেবারেই থাকে না।
  • মানুষকে চিনতে হলে প্রথমে নিজের গোপনীয়তা তার সাথে শেয়ার করুন দেখুন সেটি সে অন্যের সাথে শেয়ার না করে হজম করতে পারছে কিনা।
  • বেঈমান মানুষ চিনতে হলে তার সাথে আর্থিক লেনদেন শুরু করুন। যদি আর্থিক লেনদেন ঠিকভাবে না করে তাহলে বুঝবেন সে বেঈমান।
  • এ ধরনের লোকের আরো একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা মিষ্টিভাষী হয়। মিষ্টিভাষী লোকেরা তাদের কথার ফাঁদে ফেলে বেঈমানী করার সুযোগ খোঁজে।
  • বেঈমান মানুষরা সব সময় অন্যের মনোযোগ আকৃষ্ট করার জন্য সচেষ্ট থাকে। কারণ মনোযোগ আকৃষ্ট করলে তার সাথে বেঈমানী সহজভাবে করতে পারবে।
  • মানুষ সঠিকভাবে চেনার জন্য তার সাথে বিপদে পড়ার অভিনয় করুন তাহলে সহজেই চিনতে পারবেন ভালো এবং খারাপ মানুষ।

বেঈমান বন্ধু নিয়ে উক্তি

  • সেই সবচেয়ে দুর্ভাগ্যবান যার একটি বেঈমান বন্ধু রয়েছে। কারণ বেঈমানদের দ্বারা কখনো ভালো কিছু আশা করা যায় না।
  • বেঈমান বন্ধু থাকার চেয়ে একা থাকা অনেক ভালো।
  • কিছু বন্ধুত্ব বেঈমানীর উদ্দেশ্যে তৈরি হয় কিন্তু সেগুলো মেয়াদ বেশি দিন হয় না।
  • বিপদে পড়লেই বোঝা যায় প্রকৃত বন্ধু কোনটা।
  • জীবনে অনেক বন্ধু আসে আবার চলে যায় কিন্তু থেকে যায় প্রকৃত বন্ধুরা।
  • বেঈমান বন্ধুরা কখনো কাঁদে না বা কোন স্মৃতি মনে রাখেনা।
  • বেঈমান বন্ধুরা নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সর্বদা সশ্রেষ্ঠ।
  • সর্বদা মিথ্যা বাদী হয়ে থাকে এ ধরনের বন্ধুরা।
  • জীবনে একা চলা অনেক ভালো বেঈমান বন্ধুদের সঙ্গ ছাড়া।

বেঈমান মানুষ নিয়ে ইসলামিক উক্তি

  • যে অপরাধের কারণে দুনিয়াতে নগদ শাস্তির হকদার হয় সেই অপরাধ হলো কারো সাথে বেঈমানী করা।
  • একজনের গোপনীয়তা আরেকজনের কাছে প্রকাশ করাও এক ধরণের বেঈমানী এর সাজাও আল্লাহতালা দুনিয়াতেই দিবেন।
  • বেঈমান মানুষের সাথে সম্পর্ক নিরপেক্ষ রাখতে হবে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ বা দূরত্ব কোনটাই ঠিক নয় কারণ তাদের দ্বারা ক্ষতি হতে পারে (ইমাম বুখারী)।
  • ধোঁকাবাজদের মূল অস্ত্র হলো মিথ্যা তারা সাধারণত এর মাধ্যমে মানুষকে প্রতারিত করে মানুষের হক নষ্ট করে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এদের ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন (বুখারি হাদিস -৩৪)।
  • দুনিয়াতেও মানুষ শয়তানে প্রচারণায় পড়ে মানুষকে ধোকা দেয় কেউ কেউ এই নিম্ন কাজের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পায় (মুসলিম হাদিস -১০২)।
  • ধোকা ও প্রতারণা মুমিনের কাজ নয় মুনাফিকদের কাজ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা মোনাফিকদের এই বদ অভ্যাস সম্পর্কে আলোচনা করেছেন (সূরা: বাকারা, আয়াত:৯)।
  • বেঈমান ও মিথ্যা থেকে দূরে থাকো এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে চলো (সূরা: আল হাশর আয়াত :১২)।

মুখোশধারী বন্ধু নিয়ে উক্তি

মুখোশধারী বন্ধু হলো সে সকল বন্ধু যারা বাইরে ভালো মানসিকতার অভিনয় করে এবং মুখোশের আড়ালে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। জীবনে ভালো কিছু করতে হলে মুখোশধারী বন্ধু হতে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ মুখোশধারী বন্ধু সবসময় বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। আমরা এখানে মুখোশধারী বন্ধু নিয়ে কয়েকটি উক্তি তুলে ধরব যার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন বন্ধু কেমন হয়। তাহলে চলুন উক্তিগুলো জেনে নেই-
  • আপনি মানুষকে যত সহজে বিশ্বাস করা শুরু করবেন তত আপনার চারপাশে মুখোশধারী বন্ধুর পরিমাণ বেড়ে যাবে।
  • মুখোশধারী বন্ধুদের বিশ্বাস করা সবচেয়ে বড় বোকামি কারণ তারা তাদের প্রয়োজনে শুধুমাত্র আপনাকে ব্যবহার করবে।
  • এ ধরনের বন্ধুরা সব সময় পিছন থেকে আঘাত করে কারণ তাদের মুখোশের আড়ালে থাকে অন্য রকম এক মানুষ।
  • মুখোশধারী মানুষ সর্বদা সফলতার বাধা হয়ে দাঁড়ায়, কেননা এ ধরনের মানুষ অন্যের ভালো সহ্য করতে পারে না।
  • মুখোশধারী বন্ধু বাইরে যতটা সুন্দর কিন্তু ভিতরে ততটাই বিষধর সাপের মত।
  • একজন ভালো বন্ধু জীবনকে যেমন সমৃদ্ধ করে তেমনি একজন মুখোশধারী বন্ধু জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
  • একজন ভালো বন্ধু সর্বদা ভালো কাজে উৎসাহিত করে কিন্তু মুখোশধারী বন্ধু ভালো কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
  • প্রকৃতপক্ষে দুর্ভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যার জীবনে মুখোশধারী বা বেঈমান বন্ধুর আবির্ভাব হয়েছে।
  • মুখোশধারী বন্ধু চেনার সবচেয়ে ভালো উপায় হল নিজেকে বিপদের মধ্যে ফেলা, কেননা মুখোশধারী বন্ধুরা বিপদ দেখলে পালিয়ে যায়।
  • প্রকৃত বন্ধু সেই যে দুর্দিনে পাশে থাকে এবং বিপদ থেকে রক্ষা করে।
  • বাস্তব অবস্থার ভিত্তিতে ভালো বন্ধু খুজে নেওয়া প্রয়োজন আছে অন্যথায় খারাপ বন্ধুর দ্বারা যে কোন সময় বিপদমুখী হতে পারেন।
  • মুখোশধারী বন্ধুর সঙ্গ দেওয়ার চেয়ে নিজেকে একা রাখা সবচেয়ে উত্তম।
  • নিকৃষ্ট মানুষের চিন্তাধারা সর্বদা নিকৃষ্ট হয় সেজন্য মানুষ চিনে বন্ধুত্ব করা সবচেয়ে উত্তম।

শেষ কথা

জীবনের খারাপ সময়ে যে সকল লোক কাছে থাকে না এবং সুযোগ খোঁজে, সে সকল লোকের সনিধ্য ত্যাগ করাই উত্তম। প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং পরিবার পরিজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url