ড্রাগন ফলের ১৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে এ বিষয়ে জানতে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
এটি পড়লে আরো জানতে পারবেন ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা, ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় এবং গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা ইত্যাদি।

ভূমিকা

ড্রাগন দেখতে আকর্ষণীয় এবং সুস্বাদু একটি ফল। ড্রাগন দেশি ফল না হলেও বর্তমানে খুবই পরিচিতি লাভ করেছে। ক্যাকটাস জাতীয় ফল হচ্ছে ড্রাগন। এই ফলে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপকারিতা। খনিজ, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এই ফল। ড্রাগন ফল আগে তেমন একটা পাওয়া যেত না। কিন্তু বর্তমানে এই ফলের সরবরাহ রয়েছে অনেক।


এরপর জমিতে উৎপাদন করা যায় আবার টবেও উৎপাদন করা যায়। ড্রাগন ফল খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি দেখতে অনেক লোভনীয়। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ হওয়ায় এই ফলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। এই ফল খেলে আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। এছাড়াও এ ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

এ ফলটি সরাসরি কেটেও খাওয়া যায় আবার বিভিন্ন ফ্রুট ছালাদ, এবং মিল্কের তৈরি করে খাওয়া যায়। এই ফলটির যেমন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে বর্তমানে এর কিছু অপকারিতাও চিহ্নিত করেছে বিশেষজ্ঞরা।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা

এই ফল খেতে আমরা অনেকেই পছন্দ করি। সুস্বাদু এবং লোভনীয় এই ফলে রয়েছে নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা। ড্রাগন ফল খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় চলুন জেনে নেই-

সহজে হজম যোগ্যঃ ড্রাগন ফল খুব সহজেই হজম করা যায়। এটি শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করতে সাহায্য করে। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তারা নিশ্চিন্তে ড্রাগন ফল খেতে পারেন। কারণ এই ফল খেলে ডায়াবেটিসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় না বরং নিয়ন্ত্রণে আসে। নিয়মিত এই ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক থাকে।


ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ ড্রাগন ফল ক্যান্সারে ঝুঁকি কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী। এই ফলে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি হতে দেয় না এবং কোষ বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে থাকে।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ ড্রাগন ফলে রয়েছে দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করার ক্ষমতা। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন উপাদান থাকায় চোখের দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে এই ফল অধিক কার্যকরী। এছাড়াও চোখের ছানি পড়া রোধ করতে সাহায্য করে এই ফল।

কিডনি সুস্থ রাখেঃ বেগুনী রঙের ড্রাগনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কিডনি ড্যামেজ হওয়া এবং কিডনিতে পাথর হওয়াতে বাধা দিয়ে থাকে এই ফল। নিয়মিত এই ফল খেলে কিডনি সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ থাকবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ ড্রাগন ফল ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ড্রাগন ফলে ফ্যাট নেই বলে এই ফল খেলে ওজন বৃদ্ধি পায় না। যাদের অতিরিক্ত ওজনে নিয়ে চিন্তিত তারা নিয়মিত এই ফল খেতে পারেন তাহলে অতিরিক্ত ওজন কমে গিয়ে নিয়ন্ত্রণে আসবে।

ত্বক ভালো রাখতেঃ ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যা ত্বকের জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। নিয়মিত এই ফল ব্যবহার করলে ত্বকের ব্রণ দূর হয়ে যায় এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে এই ফল। কয়েক টুকরা ড্রাগন ফল নিয়ে ভালোভাবে পেস্ট করে মুখে লাগাতে হবে তারপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে কয়েক দিন ব্যবহার করলে মুখের কালো দাগ এবং ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণঃ অন্যান্য পুষ্টিসমৃদ্ধ ফলের মত ড্রাগন ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। ফ্লাবোনয়েড, ফেলোনিক এসিড এবং বিটাসায়ানিন ইত্যাদি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি এ ফলে রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণতা হওয়ায় এই ফলটি বিভিন্ন ধরনের কঠিন রোগ থেকে শরীকে মুক্ত রাখে এবং ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।

চুল পড়া কমাতেঃ ড্রাগন ফলের রস নিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেললে চুল পড়া কমে যাবে। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হবে এবং নতুন চুল গজাবে। এছাড়াও এটি ব্যবহারের ফলে চুলের অকালপক্কতা রোধ হবে।

হার্ট সুস্থ থাকেঃ শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে হাটের জন্য সেটি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ড্রাগন ফল খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেজন্য হার্ট সুস্থ রাখায় নিয়মিত ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।

হাড় মজবুত করেঃ ড্রাগন ফলে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম। যা হাড়কে মজবুত করে এবং হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থার জন্য উপযোগীঃ গর্ভাবস্থার জন্য অত্যন্ত উপযোগী হচ্ছে ড্রাগন ফল। গর্ভবতী মায়েদের অনেক ফল খাওয়া নিষিদ্ধ হয়ে থাকে কিন্তু ড্রাগন ফল নিশ্চিন্তে খেতে পারে। কারণ এটিই গর্ভবতী মায়েদের জন্য যেমন উপকারী তেমনি গর্ভে থাকা বাচ্চার জন্য অত্যন্ত উপকারী।

অনিদ্রা দূর করেঃ নিয়মিত ঘুমের সমস্যা শরীরকে বিভিন্ন কঠিন রোগের দিকে ঠেলে দেয়। ড্রাগন ফল ঘুমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ঘুমের সমস্যা দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখতে এই ফলের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কারণ একজন সুস্থ মানুষের পরিমিত ঘুম হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

রক্তশূন্যতা দূর করেঃ ড্রাগন ফল রক্তশূন্যতা দূর করতে খুবই কার্যকরী কারণ ডাগর ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। আপনি যদি রক্তস্বল্পতায় ভোগেন তাহলে নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে পারেন। দেখবেন ধীরে ধীরে রক্তস্বল্পতা দূর হয়ে গেছে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এটি নিয়মিত খেলে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ হয়ে যায় সেইসাথে শরীরের বিভিন্ন রোগ মুক্তি পাওয়া যায়।

বয়সের ছাপ দূর করেঃ চিকিৎসকরা বলে বেশি বেশি ফল খেলে ত্বকে বয়সের ছাপ পরেনা এবং ত্বক সুন্দর থাকে। ঠিক তেমনি ড্রাগন ফল খেলেও বয়সের ছাপ পড়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। কেননা ড্রাগন ফলে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা ত্বকের জন্য খুবই প্রয়োজন।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফল খেতে চাইলে এই ফল খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে। নিয়ম অনুসারে ড্রাগন ফল খাওয়ার জন্য প্রথমে ড্রাগন ফলটি পরিষ্কারভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর চামচ বা চাকুর সাহায্যে উপরের খোসা তুলে ফেলতে হবে। খোসা তোলার পর তার ভিতরে দেখবেন নরম অংশ এই অংশটি খাওয়ার উপযুক্ত। এই ফল বিভিন্ন উপায় খাওয়া যায়।

খোসার ভিতরে থাকা অংশটি পিস পিস করে কেটে আপনি সরাসরি খেতে পারেন। পিস না করেও এটি খাওয়া যায়। ফ্রুট সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন এ সুস্বাদু ফল। এছাড়া ড্রাগন ফল দিয়ে বিভিন্ন রেসিপি তৈরি করে খাওয়া যায় যেমন ড্রাগন শিক কাবাব। ড্রাগন শিক কাবাব খেতে অনেক সুস্বাদু। নিয়ম অনুসারে এই ফল খেলে আপনি সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পেয়ে যাবেন।

ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা

ড্রাগন ফলের উপকারিতা আমরা প্রত্যেকে জানি কিন্তু এর খোসার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। ঠিক সে কারণেই ড্রাগন ফল খাওয়ার পর খোসাগুলো আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেওয়া হয়। ড্রাগন ফলের খোসা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমরা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে এখানে ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এর উপকারিতা-

ত্বকের উজ্জ্বলতায়ঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে ড্রাগন ফলে খোসা খুবই উপকারী। প্রথমের ড্রাগন ফলের খোসা পরিষ্কার করে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে তারপরে ব্লেন্ডারে ভালোভাবে পেস্ট করে মুখে লাগাতে হবে আর কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেললে মুখ উজ্জ্বল দেখাবে।

বয়সের ছাপ কমায়ঃ ড্রাগন ফলের খোসার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পুষ্টি ফ্রি রেডিক্যালের সংস্পর্শে এসে ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ খোসা ফেলে না দিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকে বার্ধকের ছাপ পড়তে দেয় না।

ব্রণ দূর করেঃ যাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত ড্রাগন ফলের খোসা ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হয়ে যাবে। ড্রাগন ফলের খোসার পেস্ট কাঁচা দুধের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে এটি ব্যবহার করতে হবে। তাহলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাঃ ড্রাগন ফলের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের ফ্রি রেডিয়ালকে ভারসাম্য রেখে ত্বককে ভালো এবং সুস্থ রাখে। ত্বকে বিভিন্ন ধরণের কালো দাগ দূর করে ত্বককে লাবণ্যময় করে তুলে ড্রাগন ফলের খোসা।

ব্যবহারের নিয়মঃ প্রথমে ড্রাগন ফলের খোসা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর এটি টুকরো টুকরো করে কেটে নিতে হবে। কেটে নেওয়া হয়ে গেলে ব্লেন্ডার দিয়ে ভালোভাবে এই খোসাগুলোকে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর এই খোসা ব্লেন্ডারের সাথে পরিমাণ মতো কাঁচা দুধ মেশাতে হবে। পুনরায় সেটি ভালোভাবে পেস্ট করার জন্য ব্লেন্ডারের দিতে হবে।

সম্পূর্ণ পেস্ট হয়ে গেলে তার সাথে নারিকেল তেল এবং ভিটামিন ই পরিমাণ মত যুক্ত করতে হবে। যাদের ত্বক অয়েলি তারা তেল বা ভিটামিন ই বাদ দিতে পারেন। এবার এটিকে বরফের জন্য ফ্রিজের ডিপে রেখে দিতে হবে। বরফ করে রাখলে প্রতিদিন এটি বের করে করে ব্যবহার করতে পারবেন।

এই মিশ্রণটি ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। তারপর এ মিশ্রনের বরফটি মুখের ত্বকের উপর মেসেজ করতে হবে। দশ মিনিট মেসেজ করার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে এবং ধুয়ে ফেলার পর মুখ মুছা থেকে বিরত থাকবেন। কেননা ধুয়ার পর মুখ মুছলে এর সম্পূর্ণ গুনাগুণ নাও পাওয়া যেতে পারে।

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়

আমরা জানি প্রত্যেক ফল খাওয়ার উপযুক্ত সময় সকালে খাবারের আগে খালি পেটে অথবা সকালে এবং দুপুরের খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে। ড্রাগন ফলের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনই। সকালে খালি পেটে এ ফল এর সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ শরীর ভালোভাবে শোষণ করতে পারে। যে কারণে উপকারিতা খুব সহজেই পাওয়া যায়।

খাবার সাথে সাথে বা পরপরই ফল খাওয়া উচিত নয় কারণ এতে করে এসিডিটি সমস্যা তৈরি হতে পারে বা পুষ্টিগুণ পাওয়া থেকে ব্যাহত হতে পারে। খাবার খাওয়ার সর্বনিম্ন ৩০ মিনিট পর ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত। ড্রাগন ফল বিকেলে নাস্তা হিসেবে খাওয়া যায়। এছাড়াও দিনের যেকোনো সময় আপনি খেতে পারেন শুধুমাত্র খাবারের সাথে সাথে বা পর পরে ব্যতীত।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ যেগুলো ফল রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ড্রাগনও একটি। এই ফলের যেমন রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা কেমন রয়েছে পুষ্টিগুণ। এর ফলটি সাধারণ মানুষের জন্য যেমন উপকারী তেমনি গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খেলে গর্ভবতী মহিলাদের অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়।

সেই সাথে যেসব পুষ্টির প্রয়োজন সে পুষ্টিগুলো পেয়ে থাকে। ড্রাগন ফল শুধুমাত্র গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারী না বরং এটি গর্ভে থাকা বাচ্চার জন্যও অনেক উপকারী। নবজাতকের যে সকল জন্ম-ত্রুটি হতে পারে এই ফল খেলে সেগুলো অনেক অংশে রোধ হয়ে যায়।

গর্ভবতী মহিলারা এই ফল নিশ্চিন্তে খেতে পারে কারণ এটি সহজে হজম করা যায়। ড্রাগন ফলে রয়েছে ভিটামিন বি, ফোলেট এবং প্রচুর পরিমাণে আয়রন। সেজন্য চিকিৎসকরা গর্ভাবস্থায় খাওয়ার জন্য ড্রাগন ফলকে আদর্শ ফল মনে করেন।

ড্রাগন ফলের অপকারিতা

ড্রাগন ফল অত্যন্ত উপকারী একটি ফল এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফল খেলে সামান্য কিছু অপকারিতা হতে পারে। চলুন জেনে নেই-

  • ড্রাগন ফল অনেক স্বাস্থ্য উপকারী কিন্তু এটি পরিমাণ মতো খেতে হবে। পরিমাণের বাইরে গেলে এটি এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তাদের পরিমাণ মতো এই ফল খাওয়া উচিত।
  • অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খেলে হজমের সমস্যা বা এসিডিটির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাত্রাধিক পরিমাণ ড্রাগন ফল খেলে পেট ব্যথা বা বমি বমি সমস্যা ও দেখা দিতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল যেমন উপকারী পরিমাণের বাইরে অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খেলে এ সময়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
  • ড্রাগন ফলে রয়েছে ফাইবার আয়রন এবং প্রাকৃতিক সুগার। সেজন্য অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খেলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হল অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ড্রাগন ফল কেনার সময় দেখেশুনে বুঝে কিনবেন। বর্তমানে বাজারে অনেক বড় বা বেশী ওজনের ড্রাগন ফল পাওয়া যাচ্ছে যা কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাংলাদেশে অননুমোদিত টনিক নামের এক প্রকার রাসায়নিক দিয়ে এই ফলকে অল্প সময়ে অনেক বড় আকারে তৈরী করে বাজারজাত করছে। যা খেলে মানুষের ডিএনএ পরিবর্তন করে দিতে পারে এমনকি হতে পারে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন প্রকার রোগ।

লেখকের মন্তব্য

শরীরকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই নিয়মিত ফল খাওয়া উচিত। সেটি হতে পারে ড্রাগনও। কারণ ড্রাগন ফলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। পরিমাণ এবং নিয়ম মেনে এই ফল যদি খেতে পারেন তাহলে শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে এবং শরীরও সুস্থ থাকবে। প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের এবং পরিবারের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url