কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে চলুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এবং কিসমিস ভেজানোর পানি খেলে কি উপকারিতা হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা
এটি পড়লে আরো জানতে পারবেন সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা, কিসমিস খাওয়ার নিয়ম এবং প্রতিদিন কি পরিমান কিসমিস খাওয়া উচিত ইত্যাদি।

ভূমিকা

আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি করা হয় কিসমিস। এই কিসমিস ছোট বড় প্রায় সবারই পছন্দের। রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয় কিসমিস। কিসমিস দিয়ে তৈরি করা হয় মিষ্টি জাতীয় বিভিন্ন ধরনের খাবার। এছাড়াও খালিই খাওয়া যায় সবার পছন্দের এই কিসমিস। কিসমিস দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। উন্নত মানের গুণাগুণ থাকার কারণে এর চাহিদা রয়েছে অনেক।


কিসমিস খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি রয়েছে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা। কিসমিসে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবারসহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন। নিয়মিত কিসমিস খেলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে কিসমিস। এছাড়াও কিসমিস সারারাত ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সকালে পান করা যায়।

কিসমিস ভেজানো পানির রয়েছে অনেক উপকারিতা। কিসমিস খেলে যেমন অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় তেমনি এর রয়েছে সামান্য কিছু অপকারিতা। আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস খেতে যেমন মিষ্টি স্বাদ যুক্ত তেমনি কিসমিসে রয়েছে নানা ধরনের উপকারিতা। কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। তাহলে চলুন কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা শরীরের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম তাদেরকে কিসমিস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ কিসমিসে রয়েছে ফাইবার জাতীয় উপাদান যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কিসমিস খেলে এই সমস্যার সহজে সমাধান হয়ে যাবে।

ওজন কমায়ঃ খাইবার ও প্রিবায়োটিক উপাদান সমৃদ্ধ এই কিসমিস যা ওজন কমাতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি পাকস্থলীর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে তৈরি করতে সক্ষম।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিসমিস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরকে সুস্থ সবল ও শক্তিশালী করে তোলে

এনার্জি বৃদ্ধিঃ নিয়মিত কিসমিস খেলে শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি হয়। কারণ কিসমিসে রয়েছে আয়রন ও ভিটামিন যা শরীরের সুস্থতা বজায় রেখে এনার্জি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

দাঁতের ক্ষয় রোধেঃ কিসমিসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। এছাড়া মুখের ভিতরে থাকা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি খেলে দাঁত ও মুখ ভালো থাকে।

চুল ও ত্বকের যত্নেঃ কিসমিস খেলে যেমন স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায় তেমনি ত্বক ও চুল ভালো রাখতে কিসমিসে রয়েছে অনন্য গুনাগুণ। ফ্রি রেডিক্যাল চুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ফ্রি রেডিকেল থেকে চুলকে রক্ষা করার জন্য কিসমিসে রয়েছে পর্যাপ্ত ক্ষমতা। কিসমিছে রয়েছে ভিটামিন সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেঃ দিন দিন হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের সমস্যা বেড়েই চলেছে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কিসমিসের রয়েছে অনন্য ভূমিকা। কারণ ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমাতে কিসমিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেজন্য হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে যায়।

পেটের জ্বালাপোড়া দূর করেঃ এসিডিটির সমস্যা যেন প্রতিটি মানুষের। এসিডিটির পরিমাণ বেড়ে গেলে বুক থেকে পেট পর্যন্ত জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়। এই জ্বালাপোড়া রোধ করতে এবং অ্যাসিডিটি কমাতে নিয়মিত কিসমিস খাওয়া যেতে পারে। তাহলে এ সমস্যা ধীরে ধীরে কমে যাবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ অনেকে মনে করেন কিসমিস মিষ্টি জাতীয় ফল হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণভাবে ভুল কারণ কিসমিসের যে সকল গুনাগুণ রয়েছে তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের রাখেঃ কিসমতে রয়েছে পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই পটাশিয়াম শরীরের সোডিয়াম এর পরিমাণ কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ নিয়মিত কিসমিস খেলে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর জন্য নিয়মিত কিসমিস খাওয়া প্রয়োজন।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ কিসমিস শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে অনেক কার্যকরী। ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমিয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিসমিসের অনেক ভূমিকা রয়েছে।

টক্সিন দূর করেঃ প্রতিনিয়ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিন জমে। প্রতিদিন কিসমিস খেলে শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিন বের হয়ে যায়। ফলে শরীর সুস্থ ও সবল থাকে।

সকালে কিচমিচ খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে এর উপকারিতা অনেক বেশি পাওয়া যায়। কিসমিসের মধ্যে যে সকল পুষ্টি উপাদানগুলো রয়েছে সেগুলো খুব সহজেই শরীর শোষণ করে নিতে পারে। সে জন্য বিশেষজ্ঞরা সকালে কিসমিস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন এবং বলেন অন্য সময়ের চেয়ে সকালে কিসমিস খেলে এর উপকার অনেক ভালো পাওয়া যায়।

সকালে কিসমিস খেলে শরীরের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে পূর্ণাঙ্গরূপে এনার্জি দিয়ে থাকে। এছাড়াও রক্তস্বল্পতা দূর করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং ক্ষতিকারক করে কোলেস্টেরল দূর করে থাকে। সকালে কিসমিস খাওয়ার ফলে সারাদিনের কর্মক্ষমতা বজায় থাকে। শরীর ও মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সকালে কিসমিস খাওয়া প্রয়োজন।

কিসমিস ভিজিয়ে রাখা পানি পান করার উপকারিতা

স্বাভাবিক কিসমিস খাওয়ার চেয়ে কিসমিস ভিজিয়ে রাখা পানি পান করা শরীরের জন্য বেশি উপকারী। কিসমিস সারারাত ভিজিয়ে সে পানি সকালে বা খালি পেটে পান করলে তা শরীর সুস্থতার জন্য অধিক কার্যকরী। এবার চলুন কিসমিস ভেজানো পানির উপকারিতা জেনে নেই-

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কিসমিসে রয়েছে প্রবায়োটিক উপাদান যা হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে পেট সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করেঃ কিসমিসে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ও ফাইবার। যা শরীরের দুর্বলতা দূর করে শরীরকে সম্পূর্ণরূপে এনার্জি দিয়ে থাকে। শরীর দুর্বল থাকলে ক্লান্তি ও অবসাদ দেখা দেয় সে সমস্যাগুলো দূর করতে কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

আয়রনের ঘাটতি দূর করেঃ কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। সে জন্য কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে আয়রনের ঘাটতি দ্রুত দূর হয়ে যায়। সকালে খালি পেটে কিসমিসের পানি খাওয়া রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য অধিক কার্যকরী।

লিভার সুরক্ষিত রাখেঃ কিসমিস ভেজানো পানি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ পানি লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। কিসমিস ভেজানো পানি পান করার ফলে শরীরে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া শুরু হয় যে কারণে রক্ত পরিশোধিত হতে শুরু করে।

হাড় গঠনেঃ কিসমিস ভেজানো পানিতে রয়েছে বোরন ও ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এই পানি হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

কিসমিস এমন একটি খাদ্য যেটি যেকোনোভাবে খাওয়া যায়। তবে কিসমিস খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকালে খালি পেটে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর পরদিন সকালে সে পানি খালি পেটে পান করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। কিসমিস ভেজানো পানিতে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফাইবার


প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে এ পানি পান করলে শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে। কিসমিস রান্নার স্বাদ বাড়াতেও ব্যবহার করা হয়। রান্না করা খাবারের মধ্যে কিসমিস দিলে সে খাবারের স্বাদ অনেক বৃদ্ধি পায়। এ উপায়গুলো ছাড়াও কিসমিস সরাসরি খাওয়া যায়। কিসমিস অনেকে বাটারের সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকে।

বিভিন্ন ধরনের ফুড সালাতের সাথে ও কিসমিস খাওয়া যায়। কিসমিস মিষ্টি জাতীয় খাবার হওয়ায় এটি খেতে অনেকেই পছন্দ করেন।

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত

কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কমবেশী সবাই জানি কিন্তু প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খেলে শরীরের সুস্থতা বজায় থাকবে। পুষ্টিবিদদের মতামতে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টি কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

নিয়ম মেনে কিসমিস খেলে শরীরের সম্পূর্ণরূপে উপকারিতা মিলবে। কারণ কিসমিসে রয়েছে আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, কপার এবং ভিটামিন বি৬। অতিরিক্ত পরিমাণ কিসমিস খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে এর বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে কিসমিস ভেজানো পানি খালি পেটে খেলে।

কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা

পরিমিত পরিমাণ সবকিছু খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিসমিস খেলে নানা ধরনের উপকারিতা লক্ষ্য করা যায় কিন্তু এর খাওয়ার পরিমাণ বেশি হলে ঘটে যেতে পারে কিছু অপকারিতা। কিসমিস খাওয়ার ফলে যে সকল অপকার হয়ে থাকে সেগুলো হলো-
  • অতিরিক্ত কিসমিস খেলে শরীরে এলার্জির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে যাদের শরীরে এলার্জি রয়েছে তারা অল্প পরিমাণ কিসমিস খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • কিসমিস খেলে ওজন কমে এ কথা সত্য কিন্তু অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে ওজন আবার বৃদ্ধিও পায়। সেজন্য যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন তারা অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • কিসমিস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে কিন্তু বেশি পরিমাণ কিসমিস খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে এর পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে।
  • অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে যেমন এসিডিটি বদহজম ইত্যাদি। কিসমিস মিষ্টি জাতীয় খাবার হওয়ায় এটি অতিরিক্ত খেলে দাঁতের সমস্যা তৈরি হতে পারে কারণ এটি খাওয়ার পর দাঁতে ফাঁকে ফাঁকে আটকে যায়। সেজন্য কিসমিস খাওয়ার পর পরই ব্রাশ করে নেওয়া জরুরি।

কালো কিসমিসের উপকারিতা

আঙ্গুর বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। কিসমিস যেহেতু আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি করা হয় সেহেতু কিসমিস বিভিন্ন রঙের হবে এটাই স্বাভাবিক। এই সবগুলো কিসমিসের মধ্যে অন্যতম হলো কালো কিসমিস। এর গন্ধ ও স্বাদ অন্যান্য কিসমিসের চেয়ে অনেক ভালো। কালো কিসমিস খেলে যে উপকারগুলো শরীরে লক্ষ্য করা যায় সেগুলো হল-

রক্তের বর্জ্য পদার্থ বের করেঃ বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ফলে রক্তে যে বিষাক্ত বা বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয় প্রতিদিন কালো কিসমিস খেলে সেগুলো বের করে দেয়। শরীরে এই দূষিত পদার্থ থাকলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। সে সমস্যাগুলো থেকে দূরে থাকার জন্য নিয়মিত কালো কিসমিস হওয়া উচিত।

লিভার ও কিডনি সুস্থতাঃ কালো কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা লিভার ও কিডনির সুস্থতা বজায় রাখে এবং এগুলোকে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুনঃ কালো কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় এটি রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

অনিদ্রা দূর করেঃ কালো কিসমিস অনিদ্রা দূর করতে যথেষ্ট কার্যকারী। যেগুলো সমস্যার কারণে অনিদ্রা হয় সে সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করে থাকে কালো কিসমিস।

ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখেঃ নিয়মিত কালো কিসমিস খাওয়ার ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। আপনি যদি ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে চান তাহলে নিয়মিত কালো আঙ্গুর খেতে পারেন।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ অ্যান্থোসায়ানিন, ফ্ল্যাভোনয়েড, পলিফেনল-এর ভালো উৎস হলো কালো কিসমিস। যা মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে। হলে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অন্যতম ভূমিকা পালন করে কালো কিসমিস।

দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

দুধ ও কিসমিস দুটোই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য। এই দুটো খাদ্য যদি একসাথে খাওয়া যায় তাহলে পুষ্টিগুণ বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। এছাড়া এটি খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। দুধ কিসমিস একত্রে খেলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা বা দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে। রক্তশূন্যতা দ্রুত দূর করতে এটি অধিক কার্যকরী।

পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখে, হাড় মজবুত এবং শক্ত রাখে সেই সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি করে। এগুলো খেলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের মরণঘাতী রোগের মোকাবেলা করে থাকে। দুধ কিসমিস খেলে রক্তশূন্যতা দূর করার পাশাপাশি রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি করে।

লেখকের মন্তব্য

আমরা প্রতিদিন নানা ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খেয়ে থাকি। সেগুলো খাওয়ার পরিবর্তে আমরা যদি স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাই তাহলে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনবে। কিসমিস হলো পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাদ্য সেজন্য আমরা নিয়ম করে কিসমিস খেতে পারি যাতে করে শরীরের পুষ্টির চাহিদা মিটানো সম্ভব হয়। প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url