কাঁচা পেঁয়াজের উপকারিতা ও অপকারিত -পেঁয়াজের রসের অপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আপনি কি কাঁচা পেঁয়াজের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আসুন আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং চুলের জন্য কাঁচা পেঁয়াজের রস এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কাঁচা পেঁয়াজের উপকারিতা ও অপকারিতা
এটি পড়লে আরো জানতে পারবেন খালি পেটে পেঁয়ায় খেলে কি হয়, পেঁয়াজের রসের ব্যবহার এবং পেঁয়াজ খেলে কোন ক্ষতি হয় কিনা ইত্যাদি।

ভূমিকা

পেঁয়াজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অতি প্রয়োজনীয় মসলা জাতীয় একটি খাদ্য। এটি ছাড়া রান্নাবান্না হয় না বললেই চলে। রান্নাবান্না ছাড়াও এটি খাবারের সাথে কাঁচাও খাওয়া যায়। খাবারের সাথে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার এই রীতিটি বাঙ্গালীদের মধ্যে অনেক আগে থেকেই প্রচলন আছে। খাবারের সাথে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে খাবারের স্বাদ আরো দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়।


পেঁয়াজ খাবারের স্বাদ বাড়াতে যেমন অতুলনীয় তেমনি এ রয়েছে নানা ধরনের উপকারিতা। কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার এবং পটাশিয়াম। এ উপাদানগুলো ছাড়াও আরো অনেক উপাদান রয়েছে যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও কাঁচা পেঁয়াজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

কাঁচা পেঁয়াজের যেমন উপকারিতা ও রয়েছে এর সামান্য কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। কাঁচা পেঁয়াজের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে এ আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব।

কাচা পেঁয়াজের উপকারিতা

কাঁচা পেঁয়াজের যেগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে সেগুলো জানলে আপনি অবাক হবেন। এই উপকারিতাগুলো জানলে আপনিও নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খাবারের তালিকায় রাখতে চেষ্টা করবেন। তাহলে চলুন কাঁচা পেঁয়াজের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

হাড় মজবুত করেঃ কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন মিনারেলও ফাইবার যা ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে এবং হার মজবুত কর।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখেঃ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাঁচা পেঁয়াজ অধিক কার্যকরী। কারণ কাঁচা পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে সেজন্য নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খাবারের তালিকায় রাখলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসবে।

চুল পড়া কমাতেঃ কাঁচা পেঁয়াজের প্রচুর পরিমাণে সালফার রয়েছে যা চুল পড়া রোধ করে। এছাড়া নতুন চুল গজিয়ে চুলকে ঘন এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে।

দাঁতের সংক্রমণ রোধ করেঃ কাঁচা পেঁয়াজ দাঁতের সংক্রমণ রোধ করতে অত্যন্ত কার্যকরী। কাঁচা পেঁয়াজ আমরা সাধারণত চিবিয়ে খাই ফলে দাঁতের ফাঁকে থাকা জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায় এবং দাঁতের সংক্রমণও রোধ করে।

পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিনড্রোম সমস্যায়ঃ পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিনড্রোম সমস্যায় পেঁয়াজ ওষুধের মত কাজ করে। যে সকল নারীদের এ সমস্যাগুলো রয়েছে তারা কাঁচা পেঁয়াজ নির্মিত খেতে পারেন তাহলে সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে ফাইবার যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রতিদিন খাবারের সাথে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে হজমের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে থাকে এবং মুখের রুচি ফিরিয়ে দেয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ক্যান্সারের মতো মরণঘাতী রোগ দূর করতে সক্ষম কাঁচা পেঁয়াজ। বিশেষ করে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

সর্দি কাশিতেঃ সর্দি কাশি দূর করতে খুবই কার্যকারি কাঁচা পেঁয়াজ। সর্দি কাশিতে দ্রুত উপশম করে শরীরকে সুস্থ করে।

এলার্জি দূর করতেঃ কাঁচা পেঁয়াজ এলার্জি দূর করতে সহায়তা কর। পেঁয়াজের রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে এলার্জির সমস্যা দূর হয়ে যায়।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ কাঁচা পেঁয়াজে জৈব সালফার থাকে সেজন্য এটি ঝাঁঝাঁলো স্বাদযুক্ত হয়। সেজন্য এটি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

ডায়াবেটিস রোগীদেরঃ কাঁচা পেঁয়াজের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার। এছাড়াও রয়েছে জৈব সালফার। যা শরীরে থাকা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা কর। সেজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পেঁয়াজ খাওয়া অত্যন্ত ভালো।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কাঁচা পেঁয়াজের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং শরীরকে জীবাণুমুক্ত রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে শরীর সুস্থ সবল থাকে।

কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার নিয়ম

প্রতিটি খাবার খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে কাঁচা পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। কাঁচা পেঁয়াজ অনেক ভাবেই খাওয়া যায় যেমন বিভিন্ন খাবারের সাথে সালাদ হিসেবে, পান্তা ভাতে কাঁচা মরিচ ও কাঁচা পেঁয়াজ এবং শুধু ভাতের সাথেও কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া যায়। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া হয়।


ভাতের সাথে বা সালাদ হিসেবে যখন কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া হয় তখন সেটি টুকরো করে কেটে খেতে হয়। আবার রোগ নিরাময়ের জন্য যদি কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া হয় তাহলে সেটি রস করে বা পেস্ট করে খেতে হয়। ঝাল জাতীয় যেকোন খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্য কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া হয়ে থাকে। কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া অত্যন্ত উপকারী এটি শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে থাকে।

খালি পেটে পেঁয়াজ খেলে কি হয়

পেঁয়াজ নিত্য প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করতে পেঁয়াজের রয়েছে অনন্য গুণ। পেঁয়াজ ছাড়া রান্নার কথা চিন্তা করাই যায় না। এই পেঁয়াজ রান্না ছাড়াও কাঁচা খাওয়া হয়। কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার নানা উপকারিতা রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। কাঁচা পেঁয়াজ বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় তবে খালি পেটে পেঁয়াজ খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। এবার জানা যাক খালি পেটে পেঁয়াজ খেলে কি কি উপকার হয়-
  • প্রতিদিন সকালে পেঁয়াজের রস মিশানো পানি খেলে শরীর শান্ত এবং ঠান্ডা থাক।
  • সর্দি কাশি দূর করার জন্য খালি পেটে পানির সাথে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে খেলে ওষুধের মত কাজ দিয়ে থাকে।
  • যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা আছে তারা নিয়মিত খালি পেটে পেঁয়াজের রস খেলে এ সমস্যা দূর হবে। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য পেঁয়াজের রস অতি কার্যকরী উপাদান।
  • মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করতে পেঁয়াজ খুবই কার্যকরী। খালি পেটে পেঁয়াজ রস করে পানির সাথে মিশিয়ে খেলে মাথা ব্যাথা দ্রুত উপশম হবে।

কাঁচা পেঁয়াজ খেলে কি ক্ষতি হয়

প্রতিদিন আমরা নানাভাবে পেঁয়াজ খেয়ে থাকি। পেঁয়াজ রান্না করে খাওয়া যায় আবার কাঁচাও খাওয়া যায়। কিন্তু অনেকের প্রশ্ন থাকে যে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে কি কোন ক্ষতি হয়। কাঁচা পেঁয়াজ খেলে কোন ক্ষতি হয় না কারণ কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন, ফাইবার, পটাশিয়াম এবং খনিজ থাকে যা জটিল এবং কঠিন রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

চিকিৎসকরা বলেন কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া স্বাস্থের জন্য ভালো কারণ এটি শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে শরীরকে সুস্থ্য ও সবল রাখে। কাঁচা পেঁয়াজের রয়েছে কুয়ারসেটিন ও জৈব সালফার যা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। সেজন্য কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক ভালো।

কাঁচা পেঁয়াজ বিভিন্ন খাবারের সাথে সালাদ হিসেবে খাওয়া যায। কাঁচা পেঁয়াজ কঠিন কঠিন রোগ হবার আশঙ্কা অনেক ক্ষেত্রে কমিয়ে দেয়। সেজন্য কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া ক্ষতিকর নয়। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ কাঁচা পেঁয়াজ খেলে কিছু কিছু সমস্যা হতে পারে আবার কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রেও এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে।

চুলের জন্য পেঁয়াজের রসের উপকারিতা

চুল সৌন্দর্য বৃদ্ধির চাবিকাঠি। সুন্দর এবং স্বাস্থ্যউজ্জ্বল চুলকে না চায়। চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের জিনিস ব্যবহার করি। চুলের যত আমরা যে সকল জিনিস ব্যবহার করি তার মধ্যে পিঁয়াজের রস অন্যতম। তাহলে চলুন চুলের জন্য পেঁয়াজের রসের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-
  • পেঁয়াজের পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ার স্বাস্থ্য যেমন ঠিক রাখে তেমনি নতুন চুল গজাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি।
  • পেঁয়াজের রস খুশকি দূর করতে কার্যকরী। মাথায় খুশকি থাকলে চুল একেবারেই প্রাণহীন হয়ে যায়।
  • পেঁয়াজের রসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের গোড়ায় থাকা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে চুল পাকার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।
  • অনেক সময় মাথায় চুলকানি বা ফুসকুড়ির মত দেখা যায়। পেঁয়াজের রস ব্যবহার করলে এই সমস্যা ধীরে ধীরে কমে যাবে।
  • শরীরের বিভিন্ন সমস্যার কারণে অল্প বয়সে চুল পড়ে মাথা টাক হয়ে যায়। নিয়মিত পেঁয়াজের রস মাথায় ব্যবহার করলে টাক মাথায় চুল গজাতে সাহায্য কর।
  • পেঁয়াজের রসে রয়েছে প্রচুর পরবে না ভিটামিন যা চুলবৃদ্ধি করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পেঁয়াজের রস কিভাবে ব্যবহার করব

পেঁয়াজের রস মাথায় বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। যেমন -
  • মাথার ত্বকের সমস্যা দূর করতে ২ টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস এবং এক টেবিল চামচ লেবুর রস মাথায় ব্যবহার করতে হয়। এভাবে ব্যবহার করলে মাথায় চুলকানি বা ফুসকুড়ির মত যে সমস্যা তৈরি হয় সে সমস্যাগুলো দ্রুত দূর হয়ে যায়।
  • টাক পড়ে যাওয়া মাথায় চুল গজানোর জন্য দিনে দুইবার পেঁয়াজের রস লাগাতে হবে তাহলে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।
  • মাথার প্রদাহ দূর করার জন্য পেঁয়াজের রসের সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে সামান্য পরিমাণ লেবুর রস মিশাতে হবে তাহলে ভালো পাওয়া যাব।
  • এছাড়া চুল পাকা কমানোর জন্য ২ চা চামচ পেঁয়াজের রসের সাথে ২ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় ভালোভাবে মাখতে হবে তাহলে চুল পাকার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।

কাঁচা পেঁয়াজ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্নঃ কাঁচা পেঁয়াজ কি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর?

উত্তরঃ কাঁচা পেঁয়াজ ত্বকের জন্য কোনভাবে ক্ষতিকর নয় বরং এটি ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। কাঁচা পেঁয়াজ ত্বকে লাগালে ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর হয়ে যায়।

প্রশ্নঃ লাল পেঁয়াজ কি স্বাস্থ্যকর?

উত্তরঃ লাল পেঁয়াজ ডায়াবেটিক এবং ক্যান্সার রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে পেঁয়াজে রয়েছে অনেক কার্যকারিতা। কারণ লাল পেঁয়াজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং যেখানে রয়েছে ১৭ ধরনের ফ্লাবনয়েড।

প্রশ্নঃ সাদা পেঁয়াজ খাওয়া কি ভালো?

উত্তরঃ সাদা পেঁয়াজ খাওয়া অত্যন্ত ভালো। সাদা পিয়াজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এই পেঁয়াজ বিভিন্ন সংক্রমণজনিত রোগ থেকে শরীরকে মুক্ত রাখে। এছাড়াও সাদা পেঁয়াজ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

কাঁচা পেঁয়াজের অপকারিতা

কাঁচা পেঁয়াজের অনেক উপকারিতা রয়েছে যা আমরা সবাই জানি কিন্তু কাঁচা পেঁয়াজের সামান্য কিছু অপকারিতাও রয়েছে এ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আসুন তাহলে কাঁচা পেঁয়াজের কয়েকটি অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন-

মুখে দুর্গন্ধ বাড়িয়ে দেয়ঃ কাঁচা পেঁয়াজ খেলে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি করে। এই দুর্গন্ধ দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। সরাসরি কারো সাথে কথা বলার সময় মুখ থেকে পেঁয়াজের দুর্গন্ধ বের হয় যা অনেক সময় লজ্জার বা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এলার্জির সমস্যা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়ঃ কাঁচা পেঁয়াজ খেলে এলার্জি অনেক সময় কমে যায় কিন্তু প্রচুর পরিমাণে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে এলার্জির সমস্যা বহুগুণে বেড়ে যায়। যাদের শরীরে এলার্জি আছে তাদের কাঁচা পেঁয়াজ পরিমাণ মত খাওয়া উচিত।

চোখের সমস্যাঃ পেঁয়াজের মধ্যে যে ঝাঁঝ থাকে তা চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমরা যখন পেঁয়াজ কাটতে যাই তখন পেঁয়াজের এই ঝাঁঝালো বাতাস চোখে এসে লাগে যা চোখের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকারক। কারণ কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে সালফিউরিক এসিড যা চোখের জ্বালাপোড়াসহ চোখের অন্যান্য সমস্যা তৈরি করে এমনকি চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এসিডিটি সমস্যাঃ পরিমাণ মতো কাঁচা পেঁয়াজ খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কিন্তু অতিরিক্ত কাঁচা পেঁয়াজ খেলে বদ হজম বা এসিডিটির সমস্যা তৈরি হতে পারে কারণ কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় কাঁচা পেঁয়াজ বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।

নিম্ন রক্তচাপে পরিণতঃ রক্তচাপ কমাতে কাঁচা পেঁয়াজের গুরুত্ব অনেক কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণ কাঁচা পেঁয়াজ খেলে তা নিম্ন রক্তচাপে পরিণত হয় এবং নিম্ন রক্তচাপ অনেক সময় বিপদজনক হতে পারে।

হার্টের সমস্যাঃ যাদের সমস্যা আছে তারা পরিমাণ মতো কাঁচা পেঁয়াজ খাবেন তাছাড়া হার্টর সমস্যা তৈরি হতে পারে।

পেঁয়াজের রসের অপকারিতা

পেঁয়াজের রস সকল ক্ষেত্রে উপকারী তবে একটি সমস্যা তৈরি করে সেটি হলে চোখের সমস্যা। পেঁয়াজের রসে রয়েছে সালফিউরিক এসিড। সেজন্য পেঁয়াজের রসে অনেক ঝাজ থাকে যা চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। পেঁয়াজের রসের এই ঝাজ চোখে পড়লে চোখ দিয়ে পানি পড়ে এবং জ্বালাপোড়া করে। এমনকি দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দিতে পারে পেঁয়াজের রসের ঝাঁঝালো বাতাস।

লেখকের মন্তব্য

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিত্য প্রয়োজনীয় যেগুলো খাবার আছে সেগুলো খাবারের মধ্যে পেঁয়াজ একটি। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি এবং শরীরের অনেক উপকারের জন্য আমরা সাধারণত পেঁয়াজ খাই। তবে নিয়ম মেনে আমাদের পেঁয়াজ খেতে হবে যাতে করে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হয়। প্রিয় পাঠক, আপনার যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url