আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এই আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন আলু কত প্রকার ও কি কি, আলু খাওয়ার উপকারিতা কেমন, রূপ চর্চায় আলুর উপকারিতা ইত্যাদি।

ভূমিকা

আলু আমরা কমবেশী সবারই পছন্দের খাবার। আলু পছন্দ করে না এরকম লোকের সংখ্যা খুবই কম। ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষের পছন্দের খাবার হলো আলু। আলু একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। আলুতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, বি ও সি আছে। এছাড়া আলুর খোসাতেও অনেক প্রকার ভিটামিন আছে সেগুলো হলো- ভিটামিন এ, পটাসিয়াম, আয়রন, অ্যান্টি অক্সাইড, ফাইবার এবং প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেড আছে।


এই ভিটামিনগুলো থাকার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়াও শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে শরীরকে সুস্থ্য সবল রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন খাবারের সাথে আলু খাওয়া খুবই প্রয়োজন। আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে। সেগুলো আমরা নিচে আলোচনা করব।

আলু খাওয়ার উপকারিতা কেমন

আলু একটি পুষ্টিকুণ সমৃদ্ধ খাদ্য। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। আসুন আমরা আলোর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই-
  • আলুতে ভিটামিন সি আছে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • আলুতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • আলুতে ভিটামিন বি আছে, যা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়তা করে।
  • আলুতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট আছে, যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে।
  • আলু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • খোসাসহ আলু খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • সিদ্ধ আলু বাতের ব্যথা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ইত্যাদি।

সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা

সিদ্ধ আলুতে ভিটামিন সি আছে। ভিটামিন সি শরীরের জন্য অনেক দরকার। তাই সিদ্ধ আলু খেলে ভিটামিন সি এর ঘাটতি দূর হয়। সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা অনেক। সিদ্ধ আলু শরীরে পটাশিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট এর ঘাটতি পূরণ করে। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেদ্ধ আলু খেলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ত্বককে লাবণ্যময় করে তোলে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সেদ্ধ আলু খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। সেদ্ধ আলু খেলে শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি হতে দেয় না। শরীরের ব্যথা জনিত সমস্যাও দূর হয় সেদ্ধ আলু খেলে।

রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা

আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। এই ভিটামিনগুলো ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য খুবই প্রয়োজন। আলুতে এই সকল ভিটামিন থাকার কারণে এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। আলু ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বককে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত রাখে।

মুখে আলুর রস প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে ফেললে সাথে সাথে এর ফলাফল দেখতে পাবেন। চোখের নিচে কালো দাগসহ ত্বকের বিভিন্ন অংশের কালো দাগ দূর করতে আলুর রস খুবই কার্যকরী। ত্বকের ব্রণ এলার্জি সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে। এছাড়া আলুর পেস্ট দিয়ে মাস্ক তৈরি করে মুখে মাখলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা বহুগুণ।

আলু কত প্রকার ও কি কি

আলু সাধারণত দুই প্রকার, যথা মিষ্টি আলু ও গোল আলু। গোল আলু বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে-
  • হীরা
  • ডায়মন্ড
  • কার্ডিনাল
  • আইলসা
  • চমক
  • গ্রানোলা
  • বিনোলা
  • আরিন্দ
  • রাজ ইত্যাদি।

আলু খাওয়ার অপকারিতা

আলু খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি বেশি পরিমাণ আলু খেলে শরীরে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা জানা উচিত। অপকারিতা গুলো হল-
  • অতিরিক্ত আলু খেলে গ্যাসের সমস্যা তৈরি হয় এবং ডায়রিয়াও হতে পারে।
  • নষ্ট আলু বিষাক্ত হয়ে যায়, সেগুলো শরীরে বিভিন্ন রোগ তৈরি করে।
  • সবুজ আলুতে আর্সেনিক ও মেলানিন থাকে। তাই এই আলু খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিস্বরূপ।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আলু খাওয়া নিষেধ থাকে। কারণ প্রতিদিন আলু খেলে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • গর্ভবতী মহিলাদের কাঁচা আলু খাওয়া যাবেনা। আলু রান্না করে বা ভাজি করে খেতে পারে।
  • অতিরিক্ত আলু খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতা

মিষ্টি আলু খেতে প্রায় কমবেশি সবাই পছন্দ করে। মিষ্টি আলু খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। মিষ্টি আলু শীতের সময় উৎপাদন হয় এই আলু খেতে খুব সুস্বাদু এবং মিষ্টি। মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। মিষ্টি আলু, একটি আঁশযুক্ত সবজি। চিকিৎসকরা সবসময় আশযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সেজন্য আমরা মিষ্টি আলু খেতে পারি।


মিষ্টি আলু একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে অন্যান্য সমস্যা থেকে দূরে রাখে। ত্বক, চুল ও চোখের জন্য মিষ্টি আলু খাওয়া খুবই উপকারী। মিষ্টি আলু বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় যেমন সেদ্ধ করে খাওয়া যায়, পুড়িয়ে খাওয়া যায়, বিভিন্ন ধরনের সবজি রান্না করে খাওয়া যায় এবং এই আলু দিয়ে অনেক রকম রেসিপি তৈরি করা যায়।

মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক সেজন্য আমাদের প্রত্যেকেরই মিষ্টি আলু খাওয়া প্রয়োজন। মিষ্টি আলুতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, থায়োমিন, জিংক, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ডি ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। মিষ্টি আলুতে থাকা উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। মিষ্টি আলু শরীরকে সুস্থ, সতেজ ও সবল রাখতে সহায়তা করে।

মিষ্টি আলু খাওয়ার অপকারিতা

মিষ্টি আলু খেলে উপকারিতা ভালোই পাওয়া যায় কিন্তু মিষ্টি আলু খাওয়ার সামান্য কিছু অপকারিতা রয়েছে। মিষ্টি আলু যদি রাতে খাওয়া হয় তাহলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। মিষ্টি আলু রাতে খাওয়ার ফলে অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার মত সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেহেতু মিষ্টি আলু একটি অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার সেহেতু এটি রাতে না খাওয়াই ভালো। এটি রাতে খেলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমে থাকে যার ফলে ওজন বেড়ে যায়।

শেষ কথা

উপরের আলোচনা পর্যালোচনার পর আলু খেলে কি পরিমান উপকারিতা ও অপকারিতা হয় এ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। আমার মনে হয় আলু খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অধিক পরিমাণে খাওয়ার ফলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। প্রিয় পাঠক, আপনি যদি এই আর্টিকাল পড়ে উপকৃত হন এবং আপনার ভাল লাগে তাহলে দয়া করে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url