পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আসুন আজকে আমরা পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং সকালে খালি পেটে পানি পান করার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ বিষয়ে জানতে হলে নিচের আর্টিকেলগুলি মনযোগ সহকারে পড়ুন।

পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা
এই আর্টিকেল পড়লে আপনি আরও জানতে পারবেন- গরম পানি পান করার উপকারিতা, বিশুদ্ধ পানি পান করার উপকারিতা, কি পরিমাণ পানি পান করা উচিত ইত্যাদি।

ভূমিকা

পরিমিত পানি শরীরকে সতেজ রাখে। আমরা জানি পানির অপর নাম জীবন কিন্তু শুধু পানি নয় বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন। তাই স্বাভাবিক জীবন ধারনের জন্য বিশুদ্ধ পানি পান করা অত্যন্ত প্রয়োজন। মানব শরীরে ৬০-৭০ শতাংশ পানি থাকে। এ পরিমাণ কমে গেলে মানুষ বিভিন্ন ধরণের অসুখে আক্রান্ত হয়। পানি পান করলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়ে থাকে।


সকালে খালি পেটে পানি পান করার কারণে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। পরিমাণমত পানি পান মানুষকে সবল রাখে যে কারণে কোন রোগ কাছে ঘেষতে পারে না। গরম পানি প্রতিটি স্নায়ুকে সচল রাখতে সহায়তা করে ফলে গিরায় গিরায় ব্যাথা অনুভব হয় না। এছাড়াও গরম পানি শরীরের বিভিন্ন অংশে জমাট বাঁধা তেল ও ধুলাবালি থেকে মুক্তি দেয়।

সকালে খালি পেটে পানি পান করার উপকারিতা

ঘুম থেকে উঠে সকালে খালি পেটে পানি পান করার উপকারিতা রয়েছে। সকালে খালি পেটে দুই গ্লাস পানি পান করলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যা পেটে গ্যাস জমতে দেয় না। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তারা খালি পেটে দুই গ্লাস পানি পান করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসবে। রাতের বেলা পানি কম খাওয়ার ফলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। সকালে উঠেই খালি পেটে পানি পান করলে এই ঘাটতি পূরণ হয়।

সকালে খালি পেটে পানি পান করলে পাকস্থলী সচল ও সক্রিয় থাকে, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে, শরীরে অতিরক্ত ওজন বৃ্দ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে। তাই আসুন আমরা সকলেই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে অন্তত ১-২ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করি।

গরম পানি পান করার উপকারিতা

কুসুম কুসুম গরম পানি শরীরে তৈরী হওয়া বিভিন্ন সমস্য সমাধানে ঔষধ হিসেবে কাজ করে। সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে পেটের মেদ বা চর্বি কমে যায়। কুসুম কুসুম গরম পানি পান করায় মেয়েদের ঋতু স্রাবের সমস্যর সমাধান হয়। কুসুম কুসুম গরম পানি হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সর্দি- কাশি ও নাক বন্ধ হলে কুসুম কুসুম গরম পানি খেলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন- খালি পেটে কুসুম কুসুম গরম পানি পান করলে বদ হজম ও কোষ্ঠ-কাঠিন্যের মত সমস্যার সমাধান হয়। শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যাথা দূর হয় এবং অন্যান্য জটিল ও কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

বিশুদ্ধ পানি পান করার উপকারিতা

শরীরকে সুস্থ্য রাখতে বিশুদ্ধ পানি পানের বিকল্প নেই। দূষিত পানি পান করলে শরীরে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ও পানি বাহিত রোগ হয় যা স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। বিশুদ্ধ পানি রোগ জীবাণু এসকল রোগের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে। বিশুদ্ধ পানি পান করলে মানষিক চাপ কমে শরীর ও মস্তিষ্ককে সুস্থ্য রাখে। 

দূষিত পানি যেমন শরীরে জটিল রোগ তৈরি করে তেমনি বিশুদ্ধ পানি শরীরের বিভিন্ন রেগের কার্যকারী ঔষধ হিসাবে কাজ করে, শরীরের পনি শুণ্যতা রোধ করে, রক্তচাপ কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। অক্সিজেনের পরে বিশুদ্ধ পানি জীবন ধারনের দ্বিতীয় উপাদান হিসেবে কাজ করে।

পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা

পানির অপর নাম জীবন। মানুষের দেহে ৬০-৭০ভাগ পানি রয়েছে। সঠিকভাবে পানি পান করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। পানি পান করলে মানব দেহের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়। প্রতিটা জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। আসুন আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এ সম্পর্কে জেনে নিই।

পানি পান করার উপকারিতা

  • নির্দিষ্ট পরিমান পানি পান করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
  • পানি অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ‍দূর করে কোলন পরিষ্কার রাখে
  • পরিমাণমত পানি পান করলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
  • শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়
  • মাইগ্রেনসহ মাথা ব্যথার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়
  • বিভিন্ন ধরণের প্রদাহ দূর করে
  • কিডনী ভালো রাখতে সহায়তা করে
  • ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে এবং ব্রণ থেকে মুক্তি দেয়

পানি পান করার অপকারিতা

আমরা জানি পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে। অতিরিক্ত পানি পানের ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। রাতে বেলা ঘুমাতে যাওয়ার আগে বেশী পানি পান করলে ঘুমের ব্যঘাত ঘটে শরীরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করার ফলে সর্দি-কাশিসহ আরও ঠান্ডজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

অতিরিক্ত গরম পানিও শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত পানি পান করলে মাথা ব্যথা ও ক্লান্তিসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে, শরীর দূর্বল হয়ে পড়ে এবং শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে যায়।

কি পরিমাণ পানি পান করা উচিত

শরীরকে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক রাখতে হলে পরিমাণ মত পানি পান করা উচিত। একজন সুস্থ্য মানুষের প্রতিদিন তিন লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। আবহাওয়া ও শারীরিক অবস্থা বুঝে পানি পান করার পরিমাণ কম বেশী হতে পারে। অতিরিক্ত পানি পান শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফল শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগ তৈরী হয়। এ সম্পর্কে ধারণা থাকলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে কতটুকু পাানি পান করতে হবে।

পরিমান মতে পানি যেমন শারীরকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে তেমনী অতিরিক্ত পানি পান করা শরীরকে স্বাস্থ্য হানির দিকে ঠেলে দেয়। অতএব শারীরকে সুস্থ্য রাখতে হলে আমাদের প্রত্যেককেই কম পক্ষে দৈনিক ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা অত্যন্ত জরুরী।

শেষ কথা

পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। আমার মতে শরীরকে সুস্থ্য রাখতে হলে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত। প্রিয় পাঠক এই পোস্ট পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার কাছের মানুষ ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url