প্রতিদিন ডিম খাওয়ার উপকারিতা - প্রতিদিন ডিম খেলে কি ক্ষতি হয়
প্রিয় পাঠক, আপনি কি প্রতিদিন ডিম খাওয়ার উপকারিতা কি এ বিষয়ে খুজে পান নাই। আমরা আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব। আপনি যদি এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলেএই পোষ্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এটি পড়লে আরও জানতে পারবেন রাতে ডিম খাওয়ার উপকারিতা, ডিম কিভাবে খেলে উপকার বেশি এবং সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।
ভূমিকা
ডিমকে আমরা সাধারণত সুপারফুড বলে থাকি। ডিমের মধ্যে আছে ভিটামিন ‘বি’ বায়োটিন, থিয়ামিন এবং প্রচুর পরিমানে উপকারী উপাদান। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ্য রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে ত্বক, চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
আরো পড়ুনঃ পানি পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা
ডিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণে কমে যায় এবং শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়া।
সকালে ডিম খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে ডিম খেলে শরীরে প্রচুর এনার্জি পাওয়া যায়। সকালে ডিম খাওয়ায় যে পরিমাণ উপকার পাওয়া যায় যা অন্য কোন খাদ্যে পাওয়া যায় না। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রেটিন এবং কুসুমে আছে ফ্যাট, আয়রণ ও ভিটামিন, যেগুলো হাড়কে মজবুত করে, মেধার বিকাশ ঘটায় এবং শিশুদের দৈহিক বিকাশে খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
কর্ম ব্যস্ততার কারণে সকালে নাস্তা করতে না পারলেও একটি মাত্র ডিম খেলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে এনার্জি পাওয়া যায় যা কর্মক্ষমতাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে থাকে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে একটি করে ডিম খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অন্য সময়ের থেকে সকালে ডিম খাওয়ার উপকারিতা বেশী।
রাতে ডিম খাওয়ার উপকারিতা
ডিম হচ্ছে অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য। ডিমের মধ্যে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। রাতে ঘুমানোর আগে একটি সেদ্ধ ডিম শরীরের পেশী গঠনে সহায়তা করে, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং ডিমের আছে ভালো কোলস্টেরল যা মন্দ কোলস্টেরল দূর করে।
ডিম কিভাবে খেলে উপকার বেশি
আমরা প্রত্যেকেই ডিম বিভিন্নভাবে খেতে পছন্দ করি। তবে আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে ডিম খেলে বেশী উপকার পাওয়া যায়। পুষ্টিবিদদের মতে ডিম সিদ্ধ করে খেলে উপকার বেশী পাওয়া যায়। তারা ওমলেট না করে খাবার পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। কারণ ডিম তেলে ভাজা হলে তেলের মধ্যে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলস্টেরলের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। ডিম খাওয়ার মোক্ষম উপায় হলো সিদ্ধ বা রান্না করে খাওয়া যাতে ডিমের গুনাগুণ ঠিক থাকে।
প্রতিদিন ডিম খেলে কি ক্ষতি হয়
ছোট বড় সকলের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ডিম। কিন্তু এ ডিম প্রতিদিন খেলে ক্ষতি হয় কিনা এ বিষয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। প্রতিদিন ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। একজন মানুষের সুস্থতার জন্য প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে একটির বেশি দুই থেকে তিনটি ডিম প্রতিদিন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
ডিমের কুসুম বেশি খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় । যা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। আবার অনেকে মনে করেন কুসুম বাদে সাদা অংশ খাওয়া ভালো কেননা সাদা অংশ প্রোটিন রয়েছে। অতিরিক্ত সাদা অংশ খেলেও কিছু সমস্যা তৈরি হয় যেমন ডিমের সাদা অংশে এলবুমিন পরিমাণ বেড়ে যায় এবং এটি বৃদ্ধির ফলে বায়োটিন নামক ভিটামিন শূন্যতা দেখা দেয়।
এছাড়াও ডিমের কুসুম কিছু কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি রোগী এবং যাদের কোলেস্টেরল রয়েছে।
সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ছোট থেকে বড় সকলের পছন্দের খাবারের তালিকার মধ্যে রয়েছে ডিম। যতগুলো স্বাস্থ্য উপকারী খাদ্য রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ডিম। ডিমে রয়েছে ননাবিধ উপকার যেমন- অধিক মাত্রায় প্রোটিন, ভিটামিন, আয়রন যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ্য সবল ও স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারীতা অনেক বেশী। ডিম খাওয়ার উপকারীতা যেমন রয়েছে তেমনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপকারীতাও আছে। সেগুলো জেনে নিইঃ
ডিম খাওয়ার উপকারীতা
- ডিমে আছে অধিক পরিমাণ প্রোটিন যা শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করে
- ডিমে ভিটামিন ডি আছে যা হাড়কে শক্ত ও মজবুত করে
- ডিম শরীরের ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে
- প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়
- ডিম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
- ডিম খেলে চুল পড়া কমে যায় এবং ত্বক ভালো থাকে
- ডিমে ভিটামিন ও মিনারেল থাকায় শক্তি বৃদ্ধি করে ও সারাদিনের এনার্জি বাজায় থাকে
- ডিমে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২ ও সেলেনিয়াম আছে যা শরীরের ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ডিম খাওয়ার অপকারীতা
পুষ্টিবিদরা বলেন প্রতিদিন একটি বা দুটি করে ডিম খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী কিন্তু এর বেশী হলে তা উপকারের বদেলে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত ডিম খেলে কোলষ্টেরেল অধিক মাত্রায় বেড়ে যায় যা হৃদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া যাদের পেটের সমস্য, এলার্জি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ যাদের আছে তাদের অল্প পরিমাণে ডিম খাওয়া উচিৎ। ডিমের কুসুমও কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরী করে।
হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই আছে। অনেকে জানেনা যে হাঁসের ডিমের উপকারিতা কেমন। আমরা এখানে হাঁসের ডিমের উপকারীতার বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো। আমাদের মধ্যে অনেকই আছে যারা হাঁসের ডিম খেতে পছন্দ করেন না, বিশেষ করে তাদেরই হাঁসের ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে জানা দরকার।
হাঁসের ডিমের পুষ্টিগুণ মুরগীর ডিমের মতই কিন্তু হাঁসের ডিম একটু বড় হওয়ায় প্রোটিনের মাত্রা একটু বেশী। হাঁসের ডিমে যেমন উপকার আছে তেমানি কিছু অপকারিতাও আছে।
হাঁসের ডিমের উপকারিতা
- হাঁসের ডিমে একটু বেশী প্রোটিন থাকায় চর্বিহীন পেশী তৈরী করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
- জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ও সেলেনিয়াম থাকায় শরীরকে ক্লান্ত হতে দেয় না
- হাঁসের ডিমে ভিটামিন বি-১, বি-৩, বি-৫ থাকায় ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে
- এছাড়া হাাঁসের ডিমে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফ্যাট এবং আরও অনেক উপকারী উপাদান আছে
হাঁসের ডিমের অপকারিতা
ডিমের অপকারিতা নেই বল্লেই চলে, তবে হাঁসের ডিমের অল্প কিছু অপকারিতা আছে। যেমন যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা হাঁসের ডিম খাওয়ার পরিমাণ সীমিত রাখতে হবে। তাছাড়া হাঁসের ডিম বেশী খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে বা শরীরে অন্যান্য সমস্য দেখা দিতে পারে।
মন্তব্য
উপরের আলোচনা পর্যালোচনার পর আমার মনে হয় একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ডিম খাওয়া খুবই প্রয়োজন। প্রিয় পাঠক, আপনি যদি এই আর্টিকাল পড়ে উপকৃত হন এবং আপনার ভাল লাগে তাহলে দয়া করে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url