মেয়েদের কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসাগুলো জেনে নিন

 প্রিয় পাঠক আপনি কি মেয়েদের কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসা নিয়ে জানতে চান? তাহলে আসুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে মেয়েদের কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসা এবংবিনা পুঁজিতে ঘরে বসে মেয়েদের ব্যবসা নিয়ে ধরানোর চেষ্টা করব । এ সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মেয়েদের কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসা

এতে পড়লে আরো জানতে পারবেন মেয়েদের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা গ্রামে মেয়েদের জন্য লাভজনক ব্যবসা এবং গ্রামে অনলাইনে ব্যবসা ইত্যাদি।

ভূমিকা

দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য শুধু পুরুষরা স্বাবলম্বী হলেেই হবে না সে সাথে নারীদেরও স্বাবলম্বী হতে হবে। বর্তমানে নারীরা অনেক সচেতন। তারা প্রত্যেকে সাবলম্বী হতে চায় এবং নিজের একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চায়। আমরা যদি সামাজিক বা অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করি তাহলে দেখা যাবে যে পুরুষের তুলনায় নারীদের ভূমিকাও কম নয়। বর্তমানে নারীরা স্বাবলম্বী হয়ে রাষ্ট্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নারীরা বিভিন্নভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে।


সাবলম্বী হওয়ার জন্য কেউ বেছে নেয় চাকুরী আবার কেউ ব্যবসা-বাণিজ্যে। ব্যবসা হোক বা চাকুরী সেটা না দেখে কর্ম ক্ষেত্রে সফল কতটা সেটা দেখতে হবে। উন্নত দেশের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় নারী ও পুরুষ উভয়ে মিলে তারা সকল কাজ নিজেরাই করে। আমাদের দেশের কিছু কিছু নারীরা নিজেদের সংসার সামলে বাইরে কাজ করা সম্ভব হয় না। সে সকল মেয়েদের জন্য কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করব।

মেয়েদের কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসা

বর্তমানে মেয়েরা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে বেড়ায়। কি ধরনের ব্যবসা সে করতে পারবে বা সেটা করার জন্য তার পুঁজি আছে কিনা বা কতটুকু লাভবান হবে এই নিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তায় ভুগে। এখানে আমরা মেয়েদের কয়েকটি ভালো  এবং সুবিধাজনক ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করব। সেগুলো হলো-

অনলাইনের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বিক্রি করাঃ অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি করে মেয়েরা ঘরে বসে খুব সহজেই মোটামুটি উপার্জন করতে পারে। যেমন কাপড় বিক্রি করে, গহনা বিক্রি করে, ব্যাগ বিক্রি করে আরও বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট আছে। এই ব্যবসাতে যেমন দ্রুত লাভবান হওয়া যায় তেমনি মেয়েদের জন্য খুবই সুবিধাজনক।

সেলাইয়ের কাজ করেঃ যাদের সেলাইয়ের দক্ষতা আছে এবং নিখুঁতভাবে সেলাই করতে পারে তারা এই ব্যবসায় খুব সহজেই সফল হতে পারবে। কারণ সেলাইয়ের কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এই কাজের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল যে এটি ঘরে বসে করা যায়।

হোমমেড খাবার তৈরি করেঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যাদের রন্ধনশিল্প অনেক পছন্দের । তারা হোমমেড খাবার তৈরি করে অনলাইনে একটা পেজের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারে। হোমমেড খাবারের চাহিদা বর্তমানে অনেক বেশি। বিশেষ করে ব্যাচেলর বা স্টুডেন্টরা এ খাবার বেশি ক্রয় করে থাকে।

হস্তশিল্পের ব্যবসা করাঃ মেয়েরা ঘরে বসে নানান ধরনের হস্তশিল্প তৈরি করতে পারে। হস্তশিল্প তৈরি করার যাদের দক্ষতা ও প্রতিভা আছে তারা এই শিল্প করার মাধ্যমে মোটামুটি ভালো একটা ইনকাম করতে পারবে।

অনলাইনে শিক্ষকতা করেঃ বর্তমান যুগ অনলাইনের যুগ। অনলাইনের মাধ্যমে ৮০ভাগ কাজ সম্পন্ন করা যায়। অনলাইনে যেমন প্রোডাক্ট বিক্রি করা যায় তেমনি অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষকতাও করা যায়। যারা শিক্ষকতা করতে ইচ্ছুক তারা অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টুডেন্টদের পড়াতে পারেন। আমরা মোবাইল চালু করলেই বিভিন্ন অনলাইন স্কুল দেখতে পাই। অনলাইন স্কুলের কারণে শিক্ষার্থীদেরও মেধা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমেঃ আমাদের অনেকেরই মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে। অনেকে মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং করে আসলে টাকা ইনকাম করা যায় না। তারা জানে না ফ্রিল্যান্সিং অর্থ কি। ফ্র্যিান্সিং অর্থ হচ্ছে মুক্ত পেশা। যে পেশা আপনি যেকোনো ভাবে করতে পারেন সেটা অনলাইন হোক বা অফলাইন। ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করা সবচেয়ে সুবিধাজনক।

বিউটি পার্লারের ব্যবসাঃ বর্তমানে মেয়েরা দিন দিন ফ্যাশনাবোল হয়ে যাচ্ছে। হেয়ার স্টাইল হেয়ার কালার মুখের বিভিন্ন ধরনের ফেসিয়াল ইত্যাদি সবসময় করে থাকে। এগুলো করার জন্য তাদের বিউটি পার্লার প্রয়োজন হয়। মেয়েদের সুবিধাজনক ব্যবসার মধ্যে এটি সবচেয়ে লাভজনক একটি ব্যবসা। এ ব্যবসায় প্রচুর টাকা উপার্জন করা যায়।

ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা

কোন ইনভেস্ট ছাড়াই মেয়েদের জন্য কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসা আছে যা আমরা করতে পারি। সে ব্যবসা গুলো কি কি সেটা সবার আগে জানা খুব জরুরী। আসুন এ ব্যবসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করেঃ ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করতে গেলে কোন ইনভেস্ট করতে হয় না। এখানে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক বা অন্য যেকোন বিষয়ে তুলে ধরার জন্য ভিডিও করে ইউটিউব চ্যানেলে পাবলিশ করলেই এখান থেকে টাকা আয় করা যায়। যদিও এটি একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেঃ এফিলেট মার্কেটিং হচ্ছে সেই মার্কেটিং ব্যবস্থা যেখানে অন্যজনের পণ্য বিক্রি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাওয়া যায়। এ ব্যবসার ক্ষেত্রেও নিজের কোন টাকা পয়সা ইনভেস্ট করতে হয় না। কোন বিক্রেতার পণ্য বিক্রি করার পর তার নির্দিষ্ট একটি লাভের অংশ দিয়ে থাকে।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টঃ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বলতে সেই কাজকে বোঝায় যেখানে সরাসরি অফিসে না গিয়ে বাসায় বসে অল্প পারিশ্রমিক নিয়ে কাজ করা। এটি হচ্ছে সবচেয়ে সুবিধাজনক একটি বিনা পুঁজির ব্যবসা।

পোস্ট লিখা বা কনটেন্ট রাইটিং করে আয় করাঃ যারা লেখালেখি করতে অনেক পছন্দ করেন এবং সুন্দর করে যে কোন বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন তারা এ ব্যবসা করতে পারে। এই ব্যবসা তাদের জন্য খুবই সুবিধাজনক একটি ব্যবসা। এখানেও কোন পুজি ইনভেস্ট করতে হয় না।

অনলাইন ভিত্তিক কোর্স করানোঃ আমরা যে কোন বিষয়ে জানার জন্য সর্বপ্রথম অনলাইনের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকি। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ অনলাইনের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। কোন জিনিস জানা বা শেখার জন্য অনলাইনে নক করে থাকে। এজন্য অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের কোর্স করিয়ে আয় করা সম্ভব। যেগুলো বিষয়ে আপনার দক্ষতা আছে সেগুলো বিষয়ে কোর্স করিয়ে খুব সহজেই টাকা আয় করা যায়।

মেয়েদের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা

যে সকল মেয়েরা অল্প পুজিতে লাভবান হতে চান তাদের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা আছে। এগুলো মেয়েদের কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবসার মধ্যে পড়ে যেমন-
  • নকশি কাঁথা সেলাই করে বিক্রি করা
  • জামা কাপড়ের হাতের কাজ করে বিক্রি করা
  • ছোট বাচ্চাদের খেলনা তৈরি করে বিক্রি করা
  • বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট পিঠা এবং কেক তৈরি করে বিক্রি করা
  • অনেক মহিলারা আচার তৈরি করতে খুব পছন্দ করে তারা আচার তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন
  • ঘরোয়াভাবে চুল ও ত্বকের পরিচর্যার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করে বিক্রি করা যায়
  • ওয়ালমেট বা ক্রাফট তৈরি করে বিক্রি করা
  • সেলাই মেশিন থাকলে জামা কাপড় সেলাই করে আয় করা ইত্যাদি

মেয়েদের জন্য গ্রামে লাভজনক ব্যবসা

মেয়েদের সুবিধাজনক ব্যবসা যে শুধু শহরে আছে তা ঠিক কথা না, তারা ইচ্ছা করলেই গ্রামে থেকেও বিভিন্ন ধরনের লাভজনক ব্যবসা করতে পারে আসন এই লাভজনক ব্যবসা কোনগুলো জেনে নেই-

হাঁস-মুরগির খামার করেঃ হাঁস-মুরগির খামার এর ব্যবসা বর্তমান সময়ে সবচেয়ে লাভজনক একটি ব্যবসা। মানুষের খাদ্যের যোগান দিতে প্রতিদিন হাঁস-মুরগির চাহিদা অনেক রয়েছে। গ্রামে যদি হাঁস-মুরগির খামার করা যায় তাহলে সেখান থেকে নিজের চাহিদাও পূরণ হবে পাশাপাশি বিক্রি করে অনেক লাভবান হওয়া যাবে। মেয়েদের জন্য গ্রামে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে এটি হচ্ছে অন্যতম একটি ব্যবসা।

সবজি চাষ করেঃ টাটকা সবজি খেতে আমরা প্রায় সবাই পছন্দ করি। সবজির চাষ গ্রামের ব্যবসার আওতায় পড়ে। বাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে এবং সেগুলো বিক্রি করে টাকা আয় করা যায়।

গরু ছাগল পালন করেঃ গরু ছাগল পালন করেও খুব তাড়াতাড়ি লাভবান হওয়া যায়। গ্রামের মেয়েরা গরু ছাগল পালন করে নিজেরাও যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছে তেমনি একই সাথে পরিবারের বিভিন্ন চাহিদার জোগান দিচ্ছে।

বাসায় টিউশনি করেঃ শিক্ষার হার গ্রামেও এখন অনেক বেশি। আগে গ্রামে তেমন কোন শিক্ষিত লোক ছিল না। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামের প্রায় মানুষই এখন শিক্ষিত। আর শিক্ষিত হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষিত মানুষ পারে শিক্ষিত জাতি গঠন করতে এবং শিক্ষিত মা-বাবা পারে একজন সুসন্তান তৈরি করতে। গ্রামে মা-বাবার সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা বাচ্চাদের বাসায় টিউশনি দিয়ে থাকে। এ ধরনের টিউশনি করেও মোটামুটি পরিমাণ আয় করা যায়।

গ্রামে অনলাইনে ব্যবসা

গ্রামে অলাইনে ব্যবসাগুলো হলো-
  • বিভিন্ন ধরণের মৌসুমি ফল বিক্রয় করা
  • আখের গুড়া বিক্রয় করা
  • খেজুরের গুড়া বিক্রয় করা
  • মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে বিক্রয় করা
  • বাড়িতে খাঁটি ঘি তৈরী করে বিক্রয় করা

মন্তব্য

উপরের আলোচনার মাধ্যমে মেয়েদের সুবিধাজনক ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং আপনি কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন। প্রিয় পাঠক আপনি যদি পোস্ট পড়ে উপকৃত হন বা আপনার পছন্দ হয় তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব ও প্রিয় মানুষদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url