বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
এটি পড়লে আরো জানতে পারবেন অ্যাপ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম, বাটন মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম, বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি কি প্রয়োজন এবং বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে ইত্যাদি।

ভূমিকা

বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এর মধ্যে বিকাশ হচ্ছে এক নাম্বার। এ সেবার মাধ্যমে আপনি দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে টাকা পাঠাতে পারবেন। বর্তমানে বিদেশ থেকেও বাংলাদেশে সীমিত পরিসরে টাকা লেনদেন করা যাচ্ছে। ডিজিটালের যুগে বিকাশ নিয়ে এসেছে মানুষের জীবনে এক অনন্য সুবিধা। এ সুবিধার মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসেই যে কোন জায়গায় টাকা লেনদেন করতে পারা যায়। টাকা লেনদেনের সুবিধার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই বিকাশ একাউন্ট খোলা আবশ্যক।


কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই বিকাশ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় সে বিষয়ে জানেনা। সেজন্য আমাদের অন্য কারো সাহায্য নিতে হয় বা বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে ভিড় করতে হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে ডিজিটাল যুগে বিকাশ একাউন্ট খোলা খুবই সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতি সহজেই আমরা ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারি। বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আমরা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব।

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

চারটি উপায়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায় যেমন-
  • মোবাইলে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে
  • এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলা
  • ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্ট এর মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলা
  • সরাসরি বিকাশ কেন্দ্রে গিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা।

বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি কি প্রয়োজন

  • NID Card/Birth Certificate
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • স্মার্টফোন বা বাটন ফোন

অ্যাপ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

অ্যাপ দিয়ে খুব সহজেই ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। অ্যাপ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম স্টেপ বাই স্টেপ দেয়া হলো-
  • একাউন্ট খুলার জন্য প্রথমে যেটি করতে হবে তা হল প্লেস্টোরে গিয়ে বিকাশ অ্যাপ ইন্সটল করতে হবে
  • বিকাশ অ্যাপটি ওপেন করে লগইন/রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করতে হবে
  • যে মোবাইল নম্বর দিয়ে বিকাশ একাউন্টট খুলবেন তা সঠিকভাবে ইনপুট দিতে হবে
  • এরপর মোবাইল অপারেটরটি সিলেক্ট করতে হবে (যেমন-রবি, বাংলালিংক, গ্রামীণফোন, টেলিটক এবং এয়ারটেল ইত্যাদি) যে কোম্পানির সিম আপনি ব্যবহার করেন
  • যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলবেন সেই নাম্বারে একটি ওটিপি কোড আসবে সেটি সঠিকভাবে সাবমিট করুন
  • নিচে যেখানে পরবর্তী লেখা আছে তারপরে টিক চিহ্ন তে ক্লিক করুন
  • তারপর এনআইডি কার্ডের ছবি তুলুন অপশনে ক্লিক করতে হবে এরপর এনআইডি কার্ডের সামন ও পেছনের ছবি তুলুন তারপর সাবমিট করুন
  • পরবর্তী ধাপে যেগুলো ইনফরমেশন চাওয়া হবে (যেমন- পেশা, লিঙ্গ, আয়ে উৎস, বাৎসরিক আয় ইত্যাদি) এ ধাপগুলো কমপ্লিট করুন।
  • তারপর আপনার নিজের ছবি তুলতে বলবে সেটি সুন্দর স্পষ্টভাবে তুলুন। ছবি তোলা হয়ে গেলে অটোমেটিকভাবে স্ক্যান হয়ে যাবে
  • সবশেষে আপনার ইনফরমেশনগুলো সাবমিট করুন।
উপরের ধাপগুলো সম্পূর্ণভাবে শেষ হলে আপনার মোবাইলে নম্বরে একটি কনফার্মেশন এসএমএস আসবে। মোবাইলে এসএমএস আসার পর পুনরায় লগইন বাটনে এবং পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করুন।
  • মোবাইল নাম্বারটি সঠিকভাবে দিয়ে পরবর্তী ধাপে ক্লিক করুন
  • আপনার সিমটি যে কোম্পানির সেই অপারেটরটি সিলেক্ট করুন
  • এরপর আপনাকে 5 সংখ্যার পিন কোড দিতে বলবে সেটি আপনি আপনার পছন্দমত বসান এবং পিন কোডটি দুইবার সাবমিট করুন এবং আবার লগইন করুন
  • আপনার বিকাশ একাউন্টে কি নাম দিবেন সেটি পছন্দ করে সেট করুন
  • এরপর প্রোফাইলে ছবি দেওয়ার জন্য ছবি তুলুন বা ফোনে ছবি থাকলে সেটি সিলেক্ট করুন
  • এখন আপনার বিকাশ একাউন্ট সম্পন্ন হয়েছে। এ ধাপগুলো অনুসরণ করলেই একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়ে যায়।

বাটন মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ফিন্যান্সিয়ায় সার্ভিস হলো বিকাশ। এ বিকাশ সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। আগে যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করত বা বেশি মোবাইল সম্পর্কে জানা ছিল শুধু তারাই এই বিকাশ চিনতো। বর্তমানে সবার কাছে সুপরিচিত এবং সুবিধাজনক মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা হলো বিকাশ। বিকাশ চালু হওয়ার পূর্বে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় টাকা পাঠানোর খুব ঝামেলা হতো।


কিন্তু বর্তমানে খুব সহজেই মানুষ বিকাশের মাধ্যমে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে টাকা লেনদেন করতে পারছে। বিকাশ একাউন্ট স্মার্ট ফোনে যেমন খোলা যায় তেমনি বাটন মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। আসুন বাটন মোবাইলে বিকাশ খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই-
  • বাটন ফোনে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে *২৪৭# ডায়াল করতে হবে
  • এটি ডায়াল করা হয়ে গেলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে
  • তারপর আপনি যে নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সে নাম্বারটি সঠিকভাবে লিখে, ডায়াল বাটনে ক্লিক করতে হবে
  • এরপর এন আই ডি কার্ডের নাম্বারটি দিতে হবে এবং নাম্বারটি দেয়া হলে আপনি যে গোপন পাসওয়ার্ডটি দিবেন সেটি দিতে হবে
  • এগুলো সম্পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে বলবে তারপর আপনার একাউন্টে চালু হয়ে যাবে।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বিশেষ সেবা হচ্ছে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট। এজেন্ট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বিকাশ তার গ্রাহকের খুব কাছে পৌঁছাতে পারে। বিকাশ এজেন্টগণ গ্রাহকদের সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে। এজেন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট ছাড়াও অন্যান্য বিষয় সম্পন্ন করে থাকে। এখন বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করবো-
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপনার এলাকার দায়িত্বগত বিকাশ এসআর (SR) এর যোগাযোগ করতে পারেন।
  • বিকাশ এস আর (SR) এর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করবেন
  • তারপর বিকাশ এসআর (SR) এর সহযোগিতায় আপনি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন
  • এছাড়া বিকাশ ওয়েব সাইটের মাধ্যমে খুব সহজে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার আবেদন করতে পারেন
  • সরাসরি অফিসে গিয়েও আপনি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারেন।

বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে

আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যারা বিকাশ এজেন্ট হতে চায়। কিন্তু তাদের মনে একটাই প্রশ্ন বিকাশ এজেন্ট হতে গেলে কত টাকা লাগে বা বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য সর্বমোট কত টাকা খরচ হতে পারে। তাহলে আপনাদের এই বিষয় জানা জরুরি যে বিকাশ এজেন্ট হতে গেলে কোনরকম টাকা পয়সা লাগেনা বা খরচ হয় না। খুব সহজেই আপনি বিকাশ এজেন্ট হতে পারবেন টাকা পয়সার খরচ ছাড়াই। কিন্তু আরেকটি বিষয় স্পষ্ট যে আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হতে চান তাহলে আপনার কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণ মূলধন থাকতে হবে।


তাছাড়া আপনি বিকাশ অ্যাকাউন্ট যথাযথভাবে পরিচালনা করতে পারবেন না। বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শুরুর দিকে প্রচুর পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন হলেও পরে তেমন মূলধনের প্রয়োজন পড়ে না। আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তৈরি করার জন্য অনেকেই টাকা পয়সা দাবি করেন সে ক্ষেত্রে আপনি সেগুলো ইগনোর করবেন এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টাকা ছাড়া একাউন্ট খোলার আবেদন করবেন।

পরিশেষে

উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন এবং আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে দয়া করে আপনি আপনার কাছের মানুষ ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url