বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ কোনটি - বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম দেশ কোনটি

প্রিয় পাঠক, আপনি কি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ কোনটি সে বিষয়ে জানতে চান? তাহলে চলুন আজকে আর্টিকেলের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ এবং এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ কোনটি সে বিষয়ে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ
এটি পরলে আরো জানতে পারবেন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দশটি দেশের তালিকা, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম দেশ এবং বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী কোন দেশে ইত্যাদি

ভূমিকা

একটি দেশের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নির্ভর করে সেই দেশের সামরিক শক্তির উপর। সামরিক শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রত্যেকটি দেশ সামরিক বাহিনীর পিছনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে থাকেন। কেননা যে দেশ সামরিক বাহিনীর দিক দিয়ে শক্তিশালী সেই দেশ প্রকৃতপক্ষে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী।। সামরিক বাহিনী শুধু দেশের শক্তি বৃদ্ধি করে না বরং দেশকে শত্রুর হাতে থেকে রক্ষা করে। সামরিক শক্তি বা সৈন্যশক্তির দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক দিক দিয়ে যেমন শক্তিশালী তেমনি আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের দিক দিয়েও অনেক শক্তিশালী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সামরিক বাহিনীকে অনেক শক্তিশালী করে করে তুলেছে । বিশেষ সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান প্রথম স্থানে। যে দেশে সেনাবাহিনীর শক্তিশালী সেই দেশে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী।তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। এছাড়া পৃথিবীতে যত আধুনিক অস্ত্র রয়েছে সেগুলো আবিষ্কার করেছে আমেরিকা বা মার্কেট যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে ২০০টি। আমেরিকার শক্তিশালী পারমানবিক বোমা রয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার টির মতো।

আমেরিকার কাছে ট্যাংক আছে ৬৬১২টি যুদ্ধ বিমান রয়েছে ২৭৪০ টি নৌবাহিনী বাহিনীতে রয়েছে নয়টি হেলিকপ্টার ক্যারিয়ার এবং 11 টি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার। এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাবমেরিন রয়েছে ৬৮ টি। আমেরিকাতে বর্তমান সেনার সংখ্যা হচ্ছে প্রায় 14 লাখ এবং রিজার্ভ সেনা সদস্য আছে ৪ লাখ ৪২০০০। মোটকথায় আমেরিকা বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০ টি দেশের তালিকা

আমরা জানি একটি দেশের শক্তি সম্পন্নভাবে নির্ভর করে সে দেশের সাময়িক বাহিনীর উপর। যে দেশের সামরিক বাহিনী যত উন্নত সে দেশ ততই শক্তিশালী। এখানে আমরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০ টি দেশের তালিকা তুলে ধরব। যেমন-

1. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United State of America): মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউনাইটেড স্টেট অফ আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। এদেশের প্রচুর সেনা সংখ্যা রয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী দিক দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান প্রথম।
2. রাশিয়া (Russia): ভ্লাদেমির পুতিনের দেশ রাশিয়া। শক্তিশালী দিক দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রাশিয়ার অবস্থান এবং শক্তিশালী দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সামরিক শক্তি পারমাণবিক বোমা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দিক দিয়ে রাশিয়া খুবই শক্তিশালী একটি দেশ। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এ দেশ অনেক শক্তিশালী একটি দেশ।

3. চীন (China): সবচেয়ে শক্তিশালী দশটি দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। তিন হচ্ছে অন্যতম একটি সুপার পাওয়ার দেশ। চীনে সবচেয়ে বেশি সংখ্য ক প্রায় ২০ লাখের মতো সৈন্য রয়েছে। চীনের পারমাণবিক বোমার সংখ্যা হলো 350 টি। দিন দিন পারমাণবিক সংখ্যার পরিমাণ বৃদ্ধি করছে চীন।

4. ভারত (India): ভারত শক্তিশালী ১০ টি দেশের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। ভারতও হচ্ছে একটি পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন দেশ। এখানে পারমাণবিক বোমা রয়েছে ১২০ টি এবং ভারতে সৈন্য রয়েছে প্রায় 14 লাখ এর মত।
5. যুক্তরাজ্য (United Kingdom): যুক্তরাজ্য একটি পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন একটি দেশ। শক্তিশালী দেশের মধ্যে এটি পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এ দেশে প্রায় ২৬০ পারমাণবিক বোমা। কিভাবে বর্তমানে এদেশের পারমাণবিক কিছুটা নষ্ট হয়ে গেছে।

6. উত্তর কোরিয়া (North Korea): শক্তিশালী ১০ টি দেশের তালিকায় উত্তর কোরিয়া রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে এটি কিমজমের দেশ এ দেশ ও পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশ। এই দেশ ও বিপুল পরিমাণ সৈন্য রয়েছে।

7. পাকিস্তান (Pakistan): পাকিস্তান একটি মুসলিম দেশ। পাকিস্তানের রয়েছে খুবই শক্তিশালী পারমাণবিক বোমা। নিজ দেশেই তারা অনেক শক্তিশালী পারমাণবিক বোমা তৈরি করে। যে দেশে শক্তিশালী পারমাণবিক বোমা থাকে সে দেশ শক্তিশালী দেশের একটি হয়। পাকিস্তান শক্তিশালী দেশের তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে।

8. জাপান (Japan): যে দেশের উপর দুই দুইবার পারমাণবিক বোমা প্রয়োগ হয় সে দেশের নাম হচ্ছে জাপান। দশটি শক্তিশালী দেশের তালিকায় জাপান অষ্টম স্থানে রয়েছে। একটি তথ্যসূত্রে জানা যায় তিন দিনের মধ্যে জাপান 50টিরও বেশি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে সক্ষম। তাই জাপান কেউ শক্তিশালী দেশ বলা হয়।

9. ফ্রান্স (French): দশটি শক্তিশালী দেশের তালিকায় বিশ্লেষণ করলে ফ্রান্সের অবস্থান হয় নবম স্থানে। এই দেশে পারমাণবিক বোমা রয়েছে তিনশটিরও বেশি। যে দেশে এতগুলো পারমাণবিক বোমা আছে সে দেশকে শক্তিশালী না বললে ভুল হবে।

10. ইতালি (Italy): ইতালিও ১০টি শক্তিশালী দেশের মধ্যে একটি। শক্তিশালী দেশের মধ্যে ইতালির অবস্থান দশম স্থানে। ইতালি তো যুদ্ধবিমান সহ বিভিন্ন আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। এছাড়াও ইতালি তাদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য শূন্য বৃদ্ধি করছে।

এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ কোনটি

আমরা জানি পৃথিবীতে সাতটি মহাদেশ আছে। এই সাতটি মহাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম মহাদেশ হচ্ছে এশিয়া মহাদেশ। এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ কোনটি এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হচ্ছে চীন যা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলির তিন নম্বর অবস্থানে রয়েছে। চীন যেমন শক্তিশালী একটি দেশ তেমনি আয়তনের দিক থেকেও এশিয়া সবচেয়ে বৃহত্তম একটি দেশ।

এ দেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সৈন্য রয়েছে। চীনকে অন্যতম সুপার পাওয়ার বলা হয়ে থাকে। সিএম পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন একটি দেশ। তিন শুধু বৃহত্তম একটি দেশ না বরং এটি সকল দিক থেকে উন্নত একটি দেশ। চীন একটি জনবহুল দেশ। পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি চিনে অবস্থিত সেটি হলো চীনের মহাপ্রাচীর। চীনের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে জানা যায় চীনের এই মহাপ্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল মূলত শত্রুদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম দেশ কোনটি

বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ এবং এশিয়ার শক্তিশালী দেশ কোনটি সে বিষয়ে। এখন আমরা পৃথিবীর শক্তিশালী মুসলিম দেশ কোনটি সে বিষয়ে আলোচনা করব।
পাকিস্তানঃ সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে আছে পাকিস্তান। পারমাণবিক শক্তির দিক দিয়ে পাকিস্তান অনেক বেশি শক্তিশালী। বিশ্বের শক্তিশালী দেশে পাকিস্তানের অবস্থান সপ্তম। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সংখ্যা ৭ লাখ এবং রিজার্ভ আর্মি পাঁচ লাখেরও বেশি।

তুরস্কঃ তুরস্ক একটি মুসলিম দেশ এবং শক্তিশালী মুসলিম দেশের মধ্যে তুরস্কের অবস্থান দ্বিতীয়। তুরস্কের বর্তমানপ্রেসিডেন্ট তুরস্ককে উন্নতম পরাশক্তিতে রূপান্তরিত করেছে। সেজন্য তুরস্ককে আমরা একটি শক্তিশালী দেশ হিসেবে জানি। বর্তমানে তুরস্কে সামরিক বাহিনীর সংখ্যা ৭ লাখেরও বেশি।

ইরানঃ ইরানের উপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা মাথার উপর চেপে থাকলেও এ দেশের সামরিক শক্তি বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ইরানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এদেশে অনেক শক্তিশালী সামরিক বাহিনী রয়েছে। এ দেশের প্রত্যেকটি প্রাপ্তবয়স্ক বা 19 বছর বয়সের সকল নাগরিককে সেনা প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক। মিসাইল শক্তির দিক দিয়েও ইরান অনেক শক্তিশালী একটি দেশ।

মিশরঃ পিরামিডের দেশ হলো মিশর। মিশর অত্যাধুনিক সমরাস্তের জন্য খুবই বিখ্যাত একটি দেশ। এখানে সৈন্যদের উন্নত ও দক্ষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীতে পরিণত করেছে।

মরক্কোঃ মুসলিম বিশ্বের শক্তিশালী দেশ হিসেবে মরক্ক শক্তির দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই। এই দেশের প্রায় চার লাখেরও বেশি সেনাবাহিনী রয়েছে। এদেশে ৯৯% মানুষই মুসলিম এবং বাকি ১ শতাংশ মানুষ অন্যান্য ধর্মালম্বী।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী কোন দেশ

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার(GFP) নামক সংস্থা প্রত্যেক বছর শক্তিশালী দেশের একটি তালিকা তৈরি করে। এই তালিকা অনুসারে সেনাবাহিনী দিক দিয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক GFP ১৪৫ টি দেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ক রাঙ্কিংয়ের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকা তে শক্তিশালী সেনাবাহিনীর দিক দিয়ে সর্বপ্রথম স্থান অধিকার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় আর তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে রাশিয়া ও চীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আধুনিক অত্র শত্রু এবং সামরিক শক্তি দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালী একটি দেশ।

শেষ কথা

উপরের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ কোনটি সে বিষয়ে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। প্রিয় পাঠক এই পোস্ট পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন এবং আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url